When there is a will, there is a way

ইচ্ছা পূরন হচ্ছে না কেন?

আমেরিকান সিনেমা সমালোচক পাওলিন ক্যায়েলের বিখ্যাত একটি উক্তি “When there is will, there is way” আমরা সবাই কম বেশী জানি। যার বাংলা অনুবাদ হতে পারে ”ইচ্ছা থাকলে উপায় বের হয়”। আসলে আমরা যা করতে চাই সেটা যদি নিজে বিশ্বাস না করি অথবা আমিই পারবো, এই মনোবল যদি আমার ভেতরে নাড়া না দেয় তাহলে ইচ্ছা থাকলেও উপায় বের হবে না। এটাই স্বাভাবিক প্রথম দিকে খুব কষ্ট হয় মানুষের দৃষ্টি আকর্ষনে এবং অনেক সময় মনোবল বা ধৈর্য ধরে রাখাটা আমাদের জন্য অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। তখন প্রজাপতির মতো এই ফুল থেকে সেই ফুলে উড়ে বেড়াই।

প্রজাপতি এতটাই বিভ্রান্তিকর চরিত্রের যে আমরা বুঝতেই পারি না সে এখন কোন ফুলের উপর গিয়ে বসবে। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে প্রজাপতি চরিত্রের মানুষরা বিশ্বাস অর্জনে অনেক বাধার সম্মোখিন হয়। অথবা সহজভাবে বললে বিষয়টি এমন দাড়ায় যে গতকাল আপনাকে একটি কাজ করতে দেখলাম এবং বেশ ভালো লাগলো। আজ চিন্তা করলাম আপনার সাথে দেখা করে সেই কাজের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো। কাছে গিয়ে দেখি আপনি কাজটিই বন্ধ করে দিয়ে আরেকটি নতুন কাজ শুরু করেছেন। ছোট্ট একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। অনেকদিন ধরেই একটি ছেলেকে আমি ফলো করছিলাম। ওর ক্রিয়েটিভ কাজ বিশেষ করে গ্রাফিক্স সেন্স, ভিজ্যুয়ালাইজেশন, কালার কনসেপ্ট আমাকে মুগ্ধ করতো। একদিন স্বীদ্ধান্ত নিলাম ওকে অফিসে চায়ের দাওয়াত দেবো এবং আমি কিভাবে ওর সাথে কাজ করতে পারি সে বিষয়ে আলাপ করবো। নম্বর জোগার করে আমি ফোন দিলাম এবং যথারীতি ধাক্কা খেলাম। সে পেশা পরিবর্তন করেছে (কি পেশা বেছে নিয়েছে সেটা আর এখানে নাই বা বলি)। অতএব যেটা দিয়ে শুরু করেছিলাম ”ইচ্ছা থাকলে উপায় বের হয়”, এই ইচ্ছাটিকেই আমাদের গভীরে গিয়ে খুজে বের করতে হবে। আমরা প্রতিদিন যে হারে ফেসবুকের কল্যানে প্রতি মুহুর্তে অনুপ্রানিত হচ্ছি এবং যে হারে আমাদের ইচ্ছার পরিবর্তন ঘটাচ্ছি। সেই একই হারে আমাদের চারপাশের পরিচিতরাও বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাদের “ইচ্ছার” এই গতিশীল চরিত্রের কারনে ”উপায়ও” খেই হারিয়ে ফেলছে। আপনার “ইচ্ছার” প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ”উপায়” আজ এসে দ্যাখে আপনি গতকালের ইচ্ছাটিই পরিবর্তন করে ফেলেছেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমার ”ইচ্ছার” এই গতিশীল চরিত্র থেকে বের করে স্থির চরিত্রে রুপান্তরিত করবো কিভাবে?

  • প্রায় ১০ বছর আগে আমি জাপানিজ একটি কনসেপ্টের সাথে পরিচিত হই যা এখন প্রায় অনেকেই জানেন ইকিগাই (IKIGAI)। এই কনসেপ্টির ব্যাপারে আপনারা খুব সহজেই গুগল করে বিস্তারিত ধারনা নিতে পারেন। সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায়, যে ইচ্ছাটি আপনাকে স্বাভাবিক ৬/৭ ঘন্টার বেশী ঘুমাতে দেয় না। ব্রেইনের ভেতর সবসময় একটি অটো এলার্ম কাজ করে। ইকিগাই (IKIGAI) কনসেপ্টে চারটি মূল স্তম্ভের কথা বলে (১) “কোন ইচ্ছাটি বেশী ভালোবাসেন”, (২) ” ইচ্ছাটি আপনি নিজে বেশী ভালো পারেন কিনা”, (৩) “সমাজে ইচ্ছাটির চাহিদা আছে কিনা”, (৪) “ইচ্ছাটি আপনাকে উপার্জনে সাহায্য করবে কিনা”। বিশ্বব্যাপী ইকিগাই (IKIGAI) সমাদৃত হয়েছে। তবে এককভাবে বের করতে পারলে তো খুবই ভালো, যদি সমস্যা হয় তাহলে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন নিরপেক্ষ মেন্টনশীপের।

  • দু-ধরনের মেন্টরশীপ আমরা দেখতে পাই। পেইড এবং কমপ্লিমেন্টরি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে বেশী জোর দেবো। সম্পর্ক উন্নয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্বচ্ছতা যা আসলে বিশ্বাস তৈরিতে কাজ করে। ধরুন আপনি একজনকে ফেসবুকে বা লিংকডইনে নক করলেন। যদি তিনি আপনার মেসেজটি দেখেন তাহলে উত্তর দেবার আগে তিনি অবশ্যই আপনার প্রোফাইল ভিজিট করবেন। আপনার প্রোফাইলটি যদি স্বচ্ছ না হয় তাহলে আপনি উত্তর পাবেন না।

  • কয়েক ধরনের চরিত্র আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলে । তবে সবচেয়ে পছন্দনীয় চরিত্র হচ্ছে “DOER” বা যিনি সময়ের অপেক্ষা না করে কাজে নেমে যান, শেখেন এবং প্রয়োগ করেন। Doer কে খুব সহজেই চিনতে পারেন কমপ্লিমেন্টরি মেন্টরশীপ সার্ভিস প্রোভাইডাররা। আপনি Doer কিনা সে বিষয়টিতে তারা খুব সচেতন। মনে রাখতে হবে গঠনহীন সমালোচক বা নেতিবাচক মনোভাবের মানুষকে কেউই পছন্দ করে না। নেতিবাচক কনটেন্টকে লাইক, কমেন্ট বা শেয়ারের বন্যায় ভাসিয়ে দেবে কিন্তু আসল কাজে হাত বাড়াবে না। নিজের অজান্তেই আমরা আমাদের সোস্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলটিতে গঠনহীন সমালোচক বা নেতিবাচক মনোভাবের তকমা লাগিয়ে দেই।

  • ইংরেজীতে একটি কথা আছে “A Goal without Plan is just a Wish (পরিকল্পনা ছাড়া লক্ষ্য কেবল একটি ইচ্ছা”)। এই কথাটি থেকে আমরা বুঝতে পারছি ইকিগাই (IKIGAI) এর মাধ্যমে নির্ধারিত ইচ্ছাকে মেন্টরশীপের মাধ্যমে লক্ষ্যতে রুপান্তর করতে হবে।

  • এখন অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে মেন্টর পাওয়া যায় না। তখন কি করবো? অবজার্ভ শব্দটি এখানে প্রযোজ্য হবে তখন। প্রচুর রিসার্চ করতে হবে। প্রচুর প্রশ্ন করতে হবে গুগলকে এবং ইউটিউভকে। দেশে বা বিদেশে বিখ্যাত মানুষেরা কিভাবে তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিয়েছেন তার পর্যালোচনা করতে হবে। পর্যালোচনা করার সময় অবশ্যই কাগজ ও কলম সাথে রেখে সংগে সংগে লিখে ফেলতে হবে। তারপর স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছকের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে। “আজ না কাল করবো” নামক ব্যাধী থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে।

  • পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাদের বা কোন প্রতিষ্ঠানগুলোর সাহায্য আপনার লাগবে তারও একটি তালিকা আপনার করতে হবে। তারপর শুরু হবে সম্পর্ক উন্নয়নের কাজ। সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য অবশ্যই নির্ধারন করতে হবে ”উইন-উইন কৌশল”। প্রচুর পরিমানে ফিজিক্যাল এবং ভার্চুয়াল উপস্থিতি বাড়াতে হবে। অতএব যত বেশী পারা যায় বিভিন্ন ইভেন্টে (ফিজিক্যাল এবং ভার্চুয়াল) অংশগ্রহন করতে হবে (যদি মজা করে বলি তাহলে বলবো আমন্ত্রন না জানালে, আমন্ত্রন চেয়ে নিতে হবে)। হিংসা বা অহংকার নামক ভাইরাস থেকে নিজেকে দুরে রাখতে হবে।

মনে রাখতে হবে ইচ্ছা থাকলে উপায় বের হবেই। অতএব নিজের ক্ষুদা প্রথমে নিজেকে মেটাবার চেষ্টা করতে হবে, তারপর মানুষ আপনার ইচ্ছাশক্তি দেখে সামনে এগিয়ে আসবে নিজেদের প্রয়োজনেই। একটি প্রশ্ন রেখে শেষ করছি “আপনার ইকিগাই (IKIGAI) কি আগামী এক মাসের মধ্যে সম্ভব হবে”?

Negotiation Part-1

উন্নত বাংলাদেশের জন্য দায়িত্বশীল নাগরিক কতটা প্রয়োজন?

বাংলাদেশের জন্য এখন সুবর্ণ সময়! আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৩ শতাংশেরও বেশি কর্মক্ষম যুবসমাজ যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বৎসরের মধ্যে। আর এই ৩৩ শতাংশ কর্মক্ষম যুবসমাজের কারনেই আমরা এই মুহুর্তে ডেমোগ্রাফিক লভ্যাংশের উপকারিতা উপভোগ করছি। আবার বিশেষজ্ঞরা অন্যভাবে বলবার চেষ্টা করছেন যে কর্মক্ষম যুবসমাজের কারনে আমাদের সামনে এখন অফুরন্ত সুযোগের হাতছানি। যদি যুগপোযোগী নির্দেশনার মাধ্যমে তরুন সমাজকে কার্যকরি দক্ষতা ‍দিয়ে সঠিক কাজে ব্যবহার করা না যায় তাহলে ধরে নেয়া যায় আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ডেমোগ্রাফিক বিপর্যয়ের সম্মোখীন হতে পারি। এমন একটি প্রেক্ষাপটে আমাদের তরুন সমাজকে বাস্তবিক জ্ঞান, কার্যকরি দক্ষতা এবং উন্নত মানসিকতার প্রশিক্ষনের বাইরে রেখে লক্ষ্য অর্জন কতটুকু যুক্তিযোগ্য তা নতুন করে ভাবার দাবী রাখে। এই মূহুর্তে বিশ্বব্যাপী দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে হিসেবে তরুন সমাজকে গড়ে তুলবার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যত্রম পরিচালিত হচ্ছে। দায়িত্বশীল নাগরিক আমরা তাকেই বলবো যিনি তিনটি বিষয় মনের গভীরে লালন করেনঃ

দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন যুবসমাজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধির মাধ্যমে তারুণ্য শক্তিকে কাজে লাগানো। প্রায় ১৬/১৭ বছর বয়সের তরুন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের আশায় প্রায় ৬/৭ বছরের কঠোর শৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যায়। একাডেমিক শিক্ষা অর্জনের পর যখন সমাজ তাকে বলে এবার জীবিকার খোজে বের হও তখন তার সামনে অন্য এক বাস্তবতা এসে উপনিত হয় যা তার মানসিকতাকে স্থির করে দেয়। আর এই স্থির মানসিকতার কারনেই আমাদের যুবসমাজ আজ অফুরন্ত সুযোগের হাতছানি থাকা সত্ত্বেও কাজে লাগাতে পারছে না।

ডিজিটাল উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এই এগিয়ে যাবার পথে আমাদের সামনে এসে উপস্থিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যা নিয়ে এসেছে একাধারে ভিন্নধর্মী চ্যালেঞ্জ এবং সাথে আছে সুযোগের সমাহার। বলা হচ্ছে যতই শিল্প বিপ্লব আসুক মানুষের বিকল্প কখনই যন্ত্র হতে পারে না যদি উন্নত মানসিকতায় সমৃদ্ধ জনসম্পদ তৈরি করা যায়। আমাদের বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো বর্তমান যুবসমাজ স্থির মানসিকতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ প্রায়। যার কারনে

  • যথেষ্ঠ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সুযোগ দেখছেনা,
  • নিজের জ্ঞান ও দক্ষতাকে খুজে পাচ্ছে না
  • খুজে পেলেও কাজে লাগাতে পারছে না
  • মনের দিক থেকে সংকীর্ন হয়ে যাচ্ছে,
  • প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিচ্ছে
  • দেশ প্রেম হারিয়ে যাচ্ছে
  • গতানুগতিকধারার বাইরে কিছু ভাবতে পারছে না
  • আত্মসচেতনতা ও সামাজিক সচেতনতার ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিচ্ছে যার ফলে আবেগীয় দক্ষতার হার এখন নিন্মমূখী।

স্থির মানসিকতা থেকে যুবসমাজকে উন্নত মানসিকতায় পরিবর্তন করতে প্রয়োজন দক্ষতা উন্নয়ন চক্র সৃষ্টি করা যার মাধ্যমে বৃদ্ধি পাবে আত্মবিশ্বাস, আত্মসচেতনতা এবং সামাজিক সচেতনতা।

হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্মৃদ্ধ আমাদের বাংলাদেশ। গতনুগতিক ধারাতেই চলছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশ বা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে প্রয়োজন দায়িত্বশীল নাগরিক। তার জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের যা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজনঃ

  • তরুনদের মাঝে মানকিক জ্ঞান, নৈতিক মূল্যবোধ ও আবেগীয় দক্ষতা বৃদ্ধির যথাযথ ধারনা প্রদান করা ।
  • উন্নত মানসিকতা বিকাশের মাধ্যমে দায়িত্বশীল নাগরিক ‍হিসেবে গড়ে তোলা।
  • প্রযুক্তি বিকাশের ধারা এবং সংযুক্ত থাকবার ধারনা এবং যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে সম্মুখ ধারনা প্রদান করা।
  • শারীরীক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের প্রয়োজন এবং ধারনা প্রদান করা।
  • প্রমিত বাংলার ব্যবহার এবং কর্মের জন্য যোগাযোগের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজীর উপর দক্ষতা প্রদান করা।
  • সৃজনশীল চিন্তার মাধ্যমে সমস্যাকে সমাধানে রুপান্তরের প্রক্রিয়ার বাস্তব জ্ঞান প্রদান করা ইত্যাদি।
  • ভবিষ্যত কর্মের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
  • শুধুই  ডিগ্রী নয় বরং কারিগরি দক্ষতার উপর গুরুত্ব দেয়া
  • মুখস্ত বিদ্যার মাধ্যমে শুধু খাতা ও কলমের ব্যবহার দ্বারা মূল্যায়ন করা থেকে বেরিয়ে আসা

আমি আগেই লিখেছি যদি তরুন সমাজকে কার্যকরি দক্ষতা ‍দিয়ে সঠিক কাজে ব্যবহার করা না যায় তাহলে ধরে নেয়া যায় আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ডেমোগ্রাফিক বিপর্যয়ের সম্মোখীন হতে পারি। সেজন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা এবং এই পরিকল্পনা হতে হবে ভবিষ্যতকে সামনে রেখে।

DSC_0049 (1) (1)

কর্মক্ষেত্রের শেষ কর্মদিবস-কেমন হওয়া উচিত?

আমার স্কুল জীবনের ইংরেজীর একজন শিক্ষক আমাকে সবসময় বলতেন “মনে রাখবি শেষ ভলো যার সব ভলো তার”। তিনি মনে করিয়ে দিতেন ক্লাশ চেষ্ট বা সেমি ফাইনাল পরীক্ষায় যতই ভালো ফলাফল করি না কেন, ফাইনাল পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতেই হবে। আমি যেন ভালো নম্বর পাই তাই প্রায়ই সন্ধার দিকে আমার বাসায় পর্যন্তু চলে আসতেন। স্কুল জীবনে ক্রিকেটের প্রতি ছিল ভীষন ঝোক, একটা সময় সারাদিন মাঠে পড়ে থাকতাম। কি রোদ আর ছায়া, গরম অথবা ঠান্ডা, ক্লাবের মাঠে সব সময় প্রাকটিস। কোচ বলতেন প্রাকটিসে যতই ছক্কা মারো না কেন, ম্যাচের দিন ভালো না করলে কোন লাভ নাই। তাই অবহেলা না করে মন দিয়ে প্রাকটিস করো। পড়াশুনা শেষ করে যখন কর্মজীবন শুরু করলাম তখন বস বলেন অফিসে সহকর্মীরা যতোই আপনাকে ভালো বলুক না কেন, দিন শেষে রেজাল্ট দেখাতে না পারলে কোন লাভ নাই। জীবনে প্রতিক্ষেত্রে একটিই প্রবাদের সাথে আমার বার বার দেখা হয়েছে আর সেটি হলো “শেষ ভালো যার সব ভলো তার”।

আজকে অন্যভাবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছি এই প্রবাদটিকে। কর্মজীবনে এর গুরুত্বও আমি টের পেয়েছি। চাকরিজীবী মানেই হলো আপনি কোন একটি বিশেষ ক্ষেত্রে দক্ষ এবং যোগ্য হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করবেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বললাম এই কারনে যে, কোন একটি প্রতিষ্ঠানে একবছর কাজ করার পর আর একটু ভালো বেতন বা সুযোগ সুবিধার জন্য আপনি কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করবেন এবং এটাই স্বাভাবিক। আমি এতে দোষের কিছু দেখি না। তবে অভিজ্ঞদের মতে যারা বছর বছর কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করে, তারা ক্যারিয়ারের মাঝ পথে এসে হঠাৎই হোচট খেতে পারেন।

যাই হোক কেন বলছি এসব কথা? তার একটি কারন আছে। প্রায় ১৮ বছর হলো কাজ করছি। এই ১৮ বছরে বহু মানুষের সাথে কাজ করেছি এবং করছি। এই মানুষগুলোর সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে বলেই বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতায় নিজের ক্যারিয়ারকে সাজাতে পেরেছি। একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই যেটা পড়ার পর হয়তো বুঝাতে সক্ষম হতে পারি কেন শুরু করেছি “শেষ ভালো যার সব ভলো তার” প্রবাদটি দিয়ে।

রাসেল (ছদ্মনাম) নামে আমার এক সহকর্মী আমার সাথে ২০০৯ সালের দিকে কাজ করেছে। প্রথম দিন থেকেই ও সবার মন জয় করে নিয়েছিল। ওর ভেতর একধরনের আগুন ছিল অনেকটা রকেটের মতো। রকেট যেমন নিচ থেকে আগুনের চাপে উপরের দিকে ধাবিত হয় যাকে ইংরেজীতে Thrust বলে ঠিক সেরকম। যেকোন ‍এ্যাসাইনমেন্ট সময়তো শেষ করেই তারপর ক্ষান্ত হতো। ওর যে গুনগুলো আমাকে মোহিত করত যেমনঃ

  • সময়ের সদ্বব্যবহার করা
  • যেকোন মূল্যে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা
  • সাহস এবং উদ্দ্যম নিয়ে পেছনে না ফিরে সামনের দিকে এগিয়ে চলা
  • কৌতুহলী মনোভাব পোষন করে সুযোগকে নিজের মতো করে তৈরী করে নেয়া
  • আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা ‍দিয়ে সকলের মন জয় করা
  • সকলের সাথে মিলে কাজ সম্পন্ন করা
  • প্রত্যেকের মনোভাব, মতামত এবং মানসিকতাকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া
  • নিজের পজিটিভ আচার আচরনের ব্যাপারে সর্বদা সচেতন থাকা
  • কখনও নিজের নৈতিকতাকে বিষর্জন না দেয়া
  • কাজের ব্যাপারে সবসময় নিষ্ঠাবান থাকা
  • নতুন সম্পর্ক তৈরীর সাথে সাথে পুরানো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা
  • যথাযথভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

একসাথে অনেকদিন কাজ করেছি এবং অনেক কাজ সহজেই প্রত্যাশা অনুযায়ী উঠিয়ে নিয়ে এসেছি এবং এভাবে চলতে লাগলো অনেকদিন। তারপর একদিন এসে আমার কাছে বললো স্যার আমি নিজেকে নিয়ে আর একটু এক্সপেরিমেন্ট করতে চাই। সেলস এন্ড মার্কেটিংয়েই থাকবো তবে সেক্টরটা পরিবর্তন করতে চাই। আমি আপনার কাছে অনুমতি চাইছি। আমরা দুজনে মিলে টাইম ফ্রেম নির্ধারন করলাম এবং ওর হাতে যে দায়িত্বগুলো ছিল সেগুলো কিভাবে সম্পন্ন হবে তারও একটা পথ বের করলাম। অবাক করার ব্যাপার হলো যে মাসটি ওর জন্য আমাদের কর্মক্ষেত্রে শেষ মাস ছিল সে মাসেই ওর সেলস এ্যাচিভমেন্ট অন্য মাসের চেয়েও বেশী ছিল। আমাদের প্রতিষ্ঠানে শেষ দিন পর্যন্তু সে প্রথম দিনের মতোই কাজ করে গেছে।

উপরের যে ঘটনাটি উল্লেখ করলাম তা সাধারনত খুব একটা দেখা যায় না। একটি কাজে থাকা অবস্থায় নতুন আরেকটি কাজের সন্ধান পেলে বর্তমান কাজের কথা আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুলে যাই। হবু নিয়োগকর্তাকে খুশি রাখতে গিয়ে বর্তমান নিয়োগকর্তাকে ভুলেই যাই। তখন আর আমাদের মনেই থাকে না যে আমার বর্তমান কর্মক্ষেত্রের শেষ কর্মদিবস আমার ক্যারিয়ারের জন্য কতবেশী গুরুত্ব বহন করে। শেষ ভালো যার সব ভালো তার, শেষ মাসকে যদি সেরা মাস বানাতে পারি তাহলে নতুন কর্মক্ষেত্রে গিয়েও পুরানো কর্মক্ষেত্রের পূর্ন সমর্থন আমরা আশা করতে পারি। আর যাদি মনে করি নতুন কর্মক্ষেত্র, নতুন বেতন, নতুন সহকর্মী, নতুন পরিবেশ আর তার চিন্তায় যদি বর্তমান দিনকে অবহেলা করি তাহলে আমার জন্য ”আমও গেল, ছালাও গেল” প্রবাদটি অবধারিতভাবে সত্য হয়ে যাবে। ধরুন আপনি বর্তমান কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আরেকটি সুযোগ পেয়ে গেলেন, তখন আপনার কি করা উচিত হবে?

  • আপনার বসের কাছে গিয়ে সরাসরি ব্যাখ্যা করুন
  • আপনার উপর যে অর্পিত দায়িত্ব আছে সেগুলোর সমন্বয় কিভাবে করবেন তার পরিকল্পনা করুন
  • যাকে আপনি আপনার দায়িত্বগুলো বুঝিয়ে দেবেন তার সাথে বসে পরিকল্পনা করুন
  • সবগুলো অবশিষ্ট কাজ একটি এক্সেল শিটে ফেলে ট্র্যক করুন
  • দলের প্রত্যেকের কাছ থেকে জেনে নিন কারো কোন কাজের সাথে আপনি সংযুক্ত আছে কিনা
  • এডমিন এবং একাউন্টসের সাথে পৃথকভাবে বসুন এবং তাদের কাছ থেকেও আনঅফিসিয়ালী ছাড়পত্র নিন।
  • নতুন কর্মক্ষেত্রে যাবার আগে অবশ্যই আপনার বর্তমান কর্মক্ষেত্রের নিয়মগুলো জেনে নিন। অনেক সময় এমন হয় যে আপনি নতুন নিয়োগকর্তাকে বললেন আপনি যেকোন সময় যোগ দিতে পারবেন কিন্তু আপনার বর্তমান কর্মক্ষেত্রের নিয়মে সেটা উল্লেখ নেই। তখন আপনি বিপদে পড়তে পারেন। আবার নতুন নিয়োগকর্তাও বুঝে যাবে নৈতিকতার জায়গায় আপনি নড়বড়ে।

আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে মানুষের জীবনের সফলতার জন্য প্রয়োজন টেকসই সম্পর্ক যা তার সপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করে। আমরা জানি না বা কখনো আগাম বলে দিতেও পারি না কোন সুসম্পর্ক কোন সময় আমার কাজে আসবে। কিন্তু এ কথা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আমার সাফল্য অর্জন এবং সেটা ধরে রাখার জন্য আমি একাই যথেষ্ট না। আমারও সহযোগীতার প্রয়োজন আছে। তাই আমি মনে করি এই মুহুর্তে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন তারা আপ্রান চেষ্টা করুন যেকোনভাবেই হোক একটা ইন্টার্নশীপ বা ভলেটিয়ারী কাজ যোগার করবার জন্য। যদি বিনা পয়সায় করতে হয় তাহলেও পিছ পা হবেন না এবং ঐ কর্মক্ষেত্রের শেষ কর্মদিবস পর্যন্তু আপনার সেরাটি দিয়ে যাবেন। দেখবেন ঐ শেষ দিনের সেরা কাজটিই আপনাকে ভবিষ্যতে কোন না কোনভাবে সাহায্য করবে।

81770049_10213491954411769_569399357917364224_o (1)

ট্রেনিং সেশনে লেকচার বেশী হয় নাকি কাজ?

ট্রেনিং সেশনে লেকচার বেশী হয় নাকি কাজ? এমন একটি সাধারন সার্ভে অনলাইনে করেছিলাম। যেখানে ৫২ শতাংশ মানুষ বলেছে লেকচার নাকি এখনও বেশী হয় বিভিন্ন সেশনে। ৪৮ শতাংশ মানুষ বলেছে তাদের ক্লাসে কাজ বেশী হয়। কর্মদক্ষতা বাড়াবার জন্য আমরা প্রশিক্ষণের আয়োজন করি কিন্তু আমরা ভুলে যাই কর্মদক্ষতা কথায় নয় কাজের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। আশার কথা হচ্ছে এখন বাংলাদেশের মানুষ কথা বলতে পারে, যেকোন বিষয় কথা দিয়ে বুঝিয়ে দিতে পারে। ৬ বছরের এক শিশুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তুমি কি জানো, সে ইংরেজীতে আমাকে বলে “Practice Makes Everything Better”. বাচ্চাটা জানে অনুশীলনের গুরুত্ব, এখন ওঁকে বোঝাতে হবে সঠিকভাবে অনুশীলন করার পদ্ধতি যেটা কথায় নয় কাজের মাধ্যমে করে দেখাতে হবে। বুঝাতে হবে Benjamin Franklin এর সেই বিখ্যাত চারটি লাইন:

  • I Hear I Forget
  • I See I Remember
  • I Do I can Understand
  • I Practice I become Master

আর এটাকেই বলা হচ্ছে Inclusive Learning. আমি ৮ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার TAFE (Technical & Further Education) এ যখন গিয়েছিলাম Inclusive Learning এর উপর প্রশিক্ষণ নিতে। তখনও জানতাম না এটার গুরুত্ব কতোটুকু। প্রশিক্ষণ শেষে নিশ্চিত হলাম কেন অস্ট্রেলিয়ার একজন গাড়ী চালক সমগ্র পৃথিবীতে গাড়ী চালাবার যোগ্যতা রাখে এবং তাকে নতুন করে আবার প্রশিক্ষন নিতে হয় না। সহজ কথায় Inclusive Learning হচ্ছে শুধুই জ্ঞান (Knowledge) নয়, কর্মদক্ষতা (Competency) নিশ্চিত করার মাধ্যমে যোগ্য কর্মী হিসেবে তোলা। পাশপাশি এটাও নির্ধারন করে দেওয়া যে তার অর্জিত জ্ঞান (Knowledge) এবং কর্মদক্ষতা (Competency) আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত হচ্ছে। এই কাজটি অবশ্য শিক্ষামন্ত্রনালয়কে করতে হবে এবং আশার কথা হচ্ছে ইতিমধ্যেই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কতৃপক্ষ কাজটি শুরু করেছেন।

পরিশেষে বলবো আমাদের সবার ট্রেনিং সেশনে প্রয়োজন #MALT_System (More Activities Leas Talk) চালু করা এবং অনুশীলন করা। তাহলেই আমরা জ্ঞান (Knowledge) এবং কর্মদক্ষতা (Competency) নিশ্চিত করতে সক্ষম হবো।

 

কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিএসডিআই)

Untitled (4)

ক্যারিয়ার পরিকল্পনা চারটি প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে

বছর আসে বছর যায়। এটাই সৃষ্টির শুরু থেকে হয়ে আসছে এবং হতে থাকবে। জীবন থেকে ৩৬৫ দিন নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। আর এই তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের যুগে এখন তো সময় যেন আমাদের সাথে মাইকেল বোল্টেকে অনুকরণ করে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দৌড় প্রতিযোগীতায় নেমেছে। ২০১২ সালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস এ অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি। মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টে ৩ ঘন্টার যাত্রা বিরতি হলো। দুই ঘন্টার মধ্যে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে বসে আছি। সময় আর কাটে না। তার ঠিক ৭ বছর পর কেপটাউন থেকে বাংলাদেশে ফিরবো, মাঝখানে দোহা এয়ারপোর্টে ৯ ঘন্টার যাত্রা বিরতি। দুই ঘন্টার মধ্যে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে এয়ারপোর্টের ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে কাজ করা শুরু করলাম। হঠাৎ শুনলাম ফ্লাইটের এনাউন্সমেন্ট। মনে হলো মুহুর্তের মধ্যে ৯ ঘন্টা কেটে গেছে।  এই হলো বর্তমানের সময়ের গতি।

এখন চাইলেই সময় নষ্ট করা যায় কিন্তু চাইলেই সময়ের সদ্বব্যবহার করা যায় না। সময়ের সদ্বব্যবহারের জন্য চাই সময়ের পরিকল্পিত ব্যবহার। না হলে প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের রাতে আমরা একটি বছর কে বিদায় দিয়ে নতুন আর একটি বছর কে আমন্ত্রণ জানাবো। আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারনা প্রায় কাজ করে আর সেটি হলো আমরা মনে করি নতুন বছর মনে হয় আমাদের চাহিদাকে আপনা আপনি ঠিক করে দেবে। আমরা মনে মনে প্ল্যান করি, অনেক পরিকল্পনা করি কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে অবহেলা করি। সাধারনত পুরানো বছরের শেষের দিকে আমাদের অবকাশ যাপন শুরু হয়, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, মজা, শুভেচ্ছা বিনিময় করতে করতেই নতুন বছরের প্রথম মাসের অর্ধেকটা কেটে যায়। আর সেই সাথে সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাবতো আছেই।  আমাদের পরিকল্পনা কল্পনাতেই রয়ে যায়।  বিশেষজ্ঞরা বলেন ক্যারিয়ার প্ল্যান বছরের শুরুতেই করা উচিত যার জন্য প্রয়োজন সচেতন এবং খোলা মন।

বর্তমানে আমরা একটু এগিয়ে আছি কারন আমরা এমন এক সময় অবস্থান করছি যখন আমাদের যেকোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সাথে সহায়ক ভুমিকা পালনের জন্য আছে প্রযুক্তি।  মানুষ চাইলেই সব পারে কিন্তু সমস্যা হলো আমরা জানিই না আমি কি চাই, আমার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কি, বাস্তবায়নের জন্য কি কি দরকার এবং কাদেরকে দরকার। মানুষের ধর্ম হলো চাপে না পড়লে কিছুই করতে পারে না। যদিও এর মধ্যেও ব্যাতিক্রম আছে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভেতর থেকে শক্তি উৎপন্নের জন্য প্রয়োজন একটা ধাক্কা। প্রত্যেকের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করার সময় চারটি প্রশ্ন করা অত্যন্ত জরুরী। যে চারটি প্রশ্ন তিনি নিজে নিজেকে করবেন এবং উত্তর বের করার চেষ্টা করবেন। অনেক সময় মেন্টরের সহায়তায় উত্তর বের করা যেতে পারে তবে সঠিক মেন্টর খুজে বের করতে না পারলে আবার হীতে বিপরীত হতে পারে। প্রশ্ন চারটি হচ্ছেঃ

  • ক্যারিয়ারে ব্যস্ত এবং সুখী হবার জন্য আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কি হতে হবে বলে আপনি মনে করছেন? প্রথম প্রশ্নটি একটু জটিল এবং চিন্তা করে বের করার মতো। অনেকে আবার বলেন চাইতে তো সমস্যা নেই এবং চাইবোই যখন তখন কোন বাছ বিচার করবো না। তবে এতটুকু মনে রাখতে হবে ক্যারিয়ারে ব্যস্ত এবং সুখী করতে পারে এমন জিনিস কামনা করাই শ্রেয়। তবে এই প্রশ্নটির উত্তর বের করতে হলে সবার আগে নিজেকে জনতে হবে এবং তার জন্য প্রয়োজন আত্মমূল্যায়ন এবং গবেষণা ।

 

  • শীর্ষ তিনটি লক্ষ্য কি আপনি নির্ধারন করতে পারেনউপরের চাহিদাগুলো আপনার ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত করতে কোন তিনটি শীর্ষ লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে আপনার বাস্তবায়ন করতে হবে। তার একটা কর্মপরিকল্পনা বের করতে হবে।

 

  • নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন বা অর্জনের জন্য কী ধরণের শিক্ষা বা উপকরন আপনার প্রয়োজনআপনার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে আপনার কি কোন ধরনের শিক্ষা বা প্রশিক্ষনের প্রয়োজন আছে কিনা। বা কোন মেন্টর বা পরামর্শদাতার প্রয়োজন পড়বে কিনা, সেটা নির্ধারন করাটা অত্যন্ত জরুরী।

 

  • লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে, আপনার কী নতুন কোন সম্পর্ক স্থাপন করা প্রয়োজন? এক্ষেত্রে আপনি একটি ছক তৈরি করে কোন কোন মানুষের সাহায্য বা সহযোগীতা আপনার প্রয়োজন তার একটি তালিকা আপনি করে নিতে পারেন। আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কার বা কাদের সহযোগীতায় আপনি করবেন বা এমন কে বা কারা আছেন যারা আপনাকে পেশা ভিত্তিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন। অথবা খুজে বের করা এমন কারা আছেন যারা আপনাকে সাহায্য করবেন সেখানে যেতে যেখানে আপনি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পৌছতে চাচ্ছেন।

 

প্রশ্নগুলো অত্যন্ত সাধারন এবং অনেকেই হয়তো ইতিমধ্যেই আপনাকে বলেছেন কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনি এখনও সময় নিয়ে যথাযথভাবে পরিকল্পনা করা এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সময় বের করতে পারেননি। ধরে নিন ২০২০ সাল আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর এবং এখন থেকেই কাজ করতে হবে যেন ২০২৫ এর মধ্যে আপনি সেই জিনিসগুলো আপনার ক্যারিয়ারে সংযুক্ত করবেন যেগুলো আপনাকে ব্যস্ত এবং সুখী করতে পারবে। মনে রাখবেন আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন ততোক্ষনে ২০২০ সাল চলমান এবং অচিরেই চলে আসবে আরেকটি ৩১ ডিসেম্বর। তাই উত্তর বের করুন, কাজ করুন, লেগে থাকুন, সাফল্য আসবেই। আর সবসময় মনে রাখতে হবে অনুশীলনে সবই সম্ভব।

ক্যারিয়ারে যেকোন সহযোগীতার প্রয়োজন হলে মনে রাখবে আপনার পাশে আছে আপনাদের ভাই কে এম হাসান রিপন এবং তার কর্মস্থল বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিএসডিআই)। কোন ধরনের সংকোচবোধ না করে আমাদের ফোন করুন (+৮৮ ০১৭১৩৪৯৩২৪৩) অথবা ইমেইল করুন ([email protected]). 

Presentation2

অনুশীলনে সবই সম্ভব

Practice Makes Everything Perfect

মানুষ হিসাবে আমরা সব সময় নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হয়ে থাকতে পছন্দ করি। ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতা আমার ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত হবে এটাই আমার সব সময়ের কাম্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো নতুন কিছু শেখা বড়ই কঠিন, বিশেষত শুরুতে যখন আমরা শিখতে আরম্ভ করি এবং বার বার ভুল করি, তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা ভুলের কথা মনে করে মাঝ পথে ছেড়ে চলে আসি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নতুন কিছু শেখার একমাত্র উপায় হলো নিরলশ অনুশীলন, বার বার ভুল করা এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকা যে একই ভুল পুনরাবৃত্তি না করা।

কানাডিয়ান সাংবাদিক, লেখক ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল তার বিখ্যাত বই আউটলিয়ারস এ বলেছেন ”কোন একটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হতে প্রয়োজন দশ হাজার (১০,০০০) ঘন্টার অনুশীলন”। আরও একধাপ বাস্তববাদী হয়ে লেখক জোশ কাউফম্যান তার বই  দ্য পার্সোনাল এমবিএ-তে উল্লেখ করেছেন “কিছুই পারি না থেকে মোটামুটি পারি” পর্যন্তু আসতে প্রয়োজন প্রায় ২০ ঘন্টার অনুশীলন – যা প্রতিদিন ৪৫ মিনিট করে এক মাসের নিয়মিত অনুশীলন।

সুতরাং কোন একটি বিষয়ে আমি “মোটামুটি ভালো” বা “বিশেষজ্ঞ” যেটাই হতে চাই না কেন তার জন্য আমার প্রয়োজন হবে অনুশীলনের। বিভিন্ন গবেষনা বলছে অনুশীলন তাদের জন্যও অত্যন্ত কঠিন এবং প্ররিশ্রমের যারা ইতিমধ্যে কোন একটি বিষয়ে উচ্চ দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং নতুন আরেকটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চাচ্ছেন। আর একারনেই সম্ভবত অভিজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই নতুন কোন দক্ষতা অর্জনে কিছুটা অনিহা কাজ করে। তারা মনে করেন কোন বিষয়ে সক্ষমতা অর্জনের জন্য পড়া এবং আলোচনাই যথেষ্ট। আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির দিকে তাকালেই আমরা এর ছাপ খুব ভালোভাবেই দেখতে পাই। ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে কে কত ভালোভাবে মুখস্ত করেছে তার উপর ভিত্তি করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এটা সবাই একবাক্যে স্বীকার করছেন যে পড়া এবং আলোচনার পাশাপাশি হাতেকলমে শেখা এবং সেটা বার বার অনুশীলন না করলে দক্ষতা কখনই সম্ভব নয়। তাই দক্ষতা বিকাশ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই মনে পড়ে আমার সাইকেল চালানো শেখার কথা। মাত্র তিন বছর আগে সাইকেল চালানো শিখেছি। ছোটবেলা থেকেই শখ ছিল সাইকেল চালানোর। সেজন্য সাইকেল বিষয়ে অনেক পড়েছি, কি কি ধরনের সাইকেল আছে, সাইকেলের ওয়ার্ল্ড রেসিং, সাইকেলের বিভিন্ন পার্টস এমনকি বন্ধুদের আড্ডায় সাইকেল বিষয়ে কতো আলোচনা শুনেছি কিন্তু কোনদিন সাইকেলের উপর উঠে চালানোর সাহস করিনি। তিনবছর আগে আমার এক বন্ধুকে বলার পর ও বললো কোন ব্যাপার না মাত্র দুই ঘন্টায় তুই সাইকেল চালাবি। পরবর্তী দিন আমার বন্ধু তার সাইকেল নিয়ে আসলো এবং শুরু হলো প্রশিক্ষন। ১০ বছর বয়সে যেটা করার কথা সেটা করলাম অনেক বছর পর এসে। যেহেতু সাইকেল নিয়ে আমার আগেই ধারনা ছিল এবং আমার বন্ধুর সুদক্ষ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সত্যি সত্যিই আমি চার ঘন্টার মাথায় সম্পূর্ন একা সাইকেল চালালাম। তারপর সাতদিন আর সাইকেল বের করিনি ভয়ে। হঠাৎ একদিন মনে হলো আজ একাই সাইকেল বের করে চালাবো। প্রচন্ড ভয় নিয়ে বের করলাম এবং আস্তে আস্তে চালালাম। ৩০ দিনের ব্যবধানে একদম পাকা সাইকেল চালক হয়ে গেলাম এবং অনায়াসে দ্রুতগতিতে চলতে থাকা রিকশার সাথে নিজে নিজে প্রতিযোগিতা করে জিতেও গেলাম। আহ! কি সুখ!

সাধারণত জন্মগতভাবেই আমাদের একটি গুন আছে যে কোন একটি বিষয় মন দিয়ে পড়লে এবং বন্ধুদের সাথে আলাপ করলেই সে বিষয়ের একটি স্পষ্ট ধারণা আমরা দ্রুত উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু ভুল হয় তখন, যখন আমরা মনে করি যে হয়তো আমি এখন বাস্তবে সেটা প্রয়োগ করতে পারবো এবং সেটা করতে গিয়েই আমাদের ভুল ভেঙে যায়। আসলে জ্ঞান এবং দক্ষতা কখনই এক জিনিস নয়। বাস্তবতা হ’ল কোন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জনের পর হাতে-কলমে করে সেটা বার বার অনুশীলন করতে হবে, তারপর সেই দক্ষতা প্রয়োগ করার মাধ্যমে বন্ধু বা অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে মতামত খোলা মনে গ্রহন করতে হবে।  অভিজ্ঞদের মতামত অনুসারে তা পরিমার্জন বা পরিবর্ধন করে আবার নিরলশ অনুশীলন করতে হবে যা ২০ থেকে ১০,০০০ ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে।

আমি আবারও স্বীকার করছি এটি করা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। শুধু দরকার উন্নত মানসিকতা। কেননা একমাত্র উন্নত মানসিকতাই আমাদেরকে ‘না’ কে ‘হ্যা তে রুপান্তর করতে শেখায়। নতুন কিছু শেখার অর্থ হলো প্রাথমিকভাবে নিজেকে একদম আনাড়ি ভাবা, প্রয়োগের মাধ্যমে ভুল করা, মতামত নিয়ে সংশোধন করা এবং বার বার চেষ্টা করা। নিঃসন্দেহে এতগুলো ধাপ অনুসরণ করা অস্বস্তিকর। যদিও আমরা জানি, যেই দক্ষতাকে আমি আমার ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত করতে চাচ্ছি সেটা অত্যন্ত মূল্যবান, তবুও ২০ থেকে ১০,০০০ ঘন্টার কথা মনে হলেই চেষ্টা করা বন্ধ করে দেই এবং পুরানো অভ্যাসে ফিরে আসি। অনুশীলনের গুরুত্ব আমরা সবাই জানি কিন্তু প্রশ্ন হলো কীভাবে আমরা এটিকে সম্ভব করতে পারি? এই বিষয়ে বিষেজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তা নীচে তুলে ধরলামঃ

  • নিজেকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করতে হবেঃ নতুন কিছু শেখা এবং দক্ষতা অর্জন করা মানেই হলো অনেক পরিশ্রম করা, এটিকে মেনে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে এবং শেখাটা যে কঠিন হবে সে বিষয়ে নিজের কাছে সৎ থাকতে হবে বিশেষ করে যখন আমি নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকি।
  • নিজের সীমাবদ্ধ অনুধাবন করতে হবেঃ আমরা চাইলেই সবকিছুতে একেবারে দক্ষ হতে পারবো না। এটাই বাস্তবতা। তাই যে বিষয়ে আমি দক্ষ হতে চাচ্ছি সে বিষয়ে নিজেকে বার বার অনুশীলনের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে হবে। যখন বুঝবো যে আমি ভালোভাবেই দক্ষতা অর্জন করেছি তখন নতুন আরেকটি বিষয় নিয়ে অনুশীলন শুরু করবো।
  • সময়ের প্রতি যত্নবান হতে হবেঃ অনুশীলনের জন্য প্রতিদিন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে। অনেকে ক্যালেন্ডারে  সময় ব্লক করে রাখেন বা আরো অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেন যার অর্থ হলো নিজের এবং সময়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা। মনে করতে হবে এটি একটি প্রজেক্ট এবং আমি তার প্রধান হিসেবে কাজ করছি।
  • সাথে কাউকে পেলে মন্দ হয় নাঃ অনুশীলনের জন্য একে অপরকে দায়বদ্ধ রাখতে সহপাঠিদের বা সহকর্মীদের সাথে কাজ করলে দ্রুত ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

সবশেষে বলতে ইচ্ছে করছে আমার সেই প্রিয় ট্যাগলাইন অনুশীলনে_সবই_সম্ভব। মাত্র তিনটি শব্দ কিন্তু মন থেকে অনুধাবন করার চেষ্টা করলে দেখবো এর গভীরতা বিশাল। আসলে এটি বিশ্বাস করার ব্যাপার। আর কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদুর। আসুন আজ থেকেই আমরা আবার বিশ্বাস করি কঠিন বা অস্বস্তিকর হলেও এটা সত্যি ”অনুশীলনে_সবই_সম্ভবশেষ করতে চাই একটি প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি এখন কোন নতুন দক্ষতা অনুশীলন করার কথা ভাবছেন?

উত্তরটি কমেন্টে লিখে পাঠিয়ে দিন। আর যদি আপনার এই দক্ষতা অর্জনে আমি বা আমাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট কোন কাজে আসতে পারি তাহলে নিশ্চিন্তে আমাদের লিখে বা ফোন করে জানাতে পারেন নীচের দেয়া তথ্যে: ad@bsdi-bd,org বা +৮৮ ০১৭১৩ ৪৯৩ ২০৬

Learn How Perfect Practice Makes Perfect

 



Presentation title

4IR-Preparedness for Bangladesh

There is a big buzz in the market on Fourth Industrial Revolution. Industry Leaders, Academicians, Government and Policy Makers are discussing on this issue and made us little concerned on the change factors. Already we are experiencing change in everywhere. Innovation and technological advancement is slowly changing our life styles. We can see the impact in everywhere. We can predict that the world after 10/15 years will be different and the change will be so fast that was ever before. So the question comes how today’s kids are taking preparation for the unseen future or how our young generation is taking preparation to face the challenges of time? The preparedness is the prime importance now otherwise our next generation leaders will not be able to compete with the world and fit themselves in the change circumstances.

Let us go back to the past to understand the change steps. The first industrial revolution was sourced by the steam engines and postal communication. The second revolution was prompted by the electricity generation and telegraph. The third industrial revolution was led by IT and renewable energy. Whereas, the Fourth Industrial revolution has been triggered by the technological advancement and with the advent of Internet!

Learn More Industry 4.0

Industry 4.0, started off as a brainchild of Germany and being adopted by countries around the world. Already USA, France and Japan have already taken the first step in this direction by launching nation-wide programs. If we carefully see the change steps, we find that every revolution was forced by the innovation and invention. The shift between third and fourth revolution took very less time than it took for second to third revolution. So, it is the point which we need to consider while developing the next generation leaders. Also, the new invention is bringing higher levels of automation, inter-connectivity, and efficiencies in machines. Now we are experiencing collaboration between humans to machines and machine to machine in a less directed and more productive manner. The jobs are becoming more digital and less manual. The pattern of the job is changing and it is digitized now. So it is changing the business process and this new style of business is looking for new skills among the youth.

So, we have to think on this point. Are we preparing our kids/youth considering the change pattern? It might be difficult to predict on future change situation in business and works but we need to equip them with the skills so that they can fit themselves at any change circumstances.

Watch How Japan preparing their Kids

According to a new report by Deloitte Global and GBC-Education, 1.8 billion youth worldwide stand at the risk of being left behind by the changes that the fourth industrial revolution will bring. In this point we have to identify what qualities/skills the future leader should develop. The youth have to develop critical thinking and judgment-based skills, focus on practical learning.  The internship/apprenticeship at an early age with the industry will definitely help them to know the job market but they must go through the lifelong learning schedule and it is obvious. While adopting the challenges of I 4.0, countries are facing some challenges. Work force are now expected to have new skills in the domain of information technology, data analytics, etc. We are already experiencing a big mismatch between the skill sets job applicants have and the skill sets they are expected to possess. Also, the adoption of I4.0 presents a threat to BRICS nations (Brazil, Russia, India, China, South Africa) as there will be a big gap to competitiveness.

Education 4.0:

At the advent of industry 4.0 we are witnessing an interconnected society where Education Systems need to be changed adopting the technologies. We have to consider the following points:

  • Education Systems must be Demand-led instead of supply-led
  • The system should be Competency-based instead of knowledge-based
  • Add disruptive technologies &skill-sets
  • The system must support Lifelong learning instead of front-loaded learning
  • It should be Integrated Degree instead of one-shot going
  • Emphasis on EQ than IQ alone

 Growth Mindset of the Youth; Self Preparedness:

While considering the change pattern of the industry shall we only depend on Government or Policy makers to ensure our preparedness? The answer would be no. The change time also demand a resilient young generation, who have the ability to respond positively to life’s challenges. The Young generation should have the following qualities:

  • Mindset to hold about their own abilities to change and grow
  • To take self-development initiative
  • To have attitude for lifelong learning
  • To have creative mind
  • To have knowledge on Global Industries

Learn More about GROWTH MINDSET

Perspective Bangladesh:

Bangladesh’s preparedness for the adoption of Industry 4.0 is low. Only Govt and few private institutions has only been initiated some action plan. We are yet to see any institutional arrangements to map the change that is consuming the world at a very rapid pace. While we are experiencing the change in the Business and Works, are we preparing the youth considering the change dimension? It might be difficult to develop every job skills now, but one point is very clear to us that we cannot educate or train up the youth with all the required skills they may need for the unseen future but at least we can develop the qualities and skills by which they can survive and fit them well in the future place.

On the other hand, every year, millions of youth are entering to the job market. And the employment situation will go worst if we can’t develop them as per the requirements. So, the question comes in mind how our young generation are taking preparation to face the challenges and handle the unexpected situation? Are we prepared? We are already a blessed nation with 180 Million people where majority are the Young population. So, we have to initiate the preparation process considering the Young Population. Before taking the Change Initiative we must understand that the new economy will not be a threat if we can develop the future skills, rather it will create opportunity or change the Job Nature that exist now. So, the Young Generation should be developed considering the Change Factors in the Job Market.

Our Policy Makers may think of the following steps:

  • Change in the Education Systems. We need to shift it from traditional class room practices, for example, memorizing to practical hands on training
  • The Teaching & Learning methodology must be changes. We should focus to develop the Analytical Skills of the Young Generation
  • Tomorrows World will be driven by Brain Power rather than Muscle Power. We must design the course curricula accordingly.
  • Map our industry for labor market information
  • analyze the sectors to find where the jobs are going to be created,
  • Identify the jobs that are going to disappear, and align our education and skill programs to meet the real needs
  • The Organization should focus on Business Policy to remain relevant
  • should change the Education Policy.
  • Students must learn sills like Robotics, AI, 3D, Block Chain, Big Data, which means we need to include STEM
  • We have to start reforming our education system from primary level if we consider 2030. Our today’s kids are the main focus of tomorrow’s world. They will compete in a world which will be much advanced and unknown to us. So they have to be Critical Thinker with deep Analytical Skills. They must drive the time with adequate emotional intelligence, and we have to teach them how to ask quality question. And for this we need to ensure Brain Based Learning Methodology.

It is obvious that, the change process would not be as easy as we think of. But the preparedness should come from both the Individual and from Organizations level else success will not come.

72390895_714952502312149_4922327113022832640_n (1)

Industry 4.0, preparing ourselves for unseen future!

We all have a question in mind, how would be the future world for us? Every day we are talking about invention, innovation, technological revolution, opportunities, threats but how does these factors are going to take control in our lives? Most importantly are we ready for the future world?

Let’s take look back to the past to understand the change factors ahead. The technological invention started 3.3 million years back from now. The purpose was to serve the Human. Following this trend lot of inventions have taken place. New inventions brought new scopes and took away old practices. If we want to be more specific, then we can see, with the arrival of bronze tools, stone tools workers lost their job and at the advent of iron tools, the bronze tools workers also became jobless during the time. We are going through the same situation now. The change process is faster now. With new technological advancement, our works are getting automated. The Robots are created by humans to serve us. Again, the robots are brought in the competition with humans now. It is such a complex situation if we just think in general sense. Also, with the invention of Radio Frequency Identification, computing and high-speed networking we are already connected with entire world. The computers are now more powerful and have the Artificial Intelligence, which can recognize the face, compose music or understand spoken language.  So, once what we thought only human can do now Computer is taking that place!

Let’s take a very common example from our daily life. Every day we travel lot of places with Buses and Cars. So driving is a profession for many peoples in the entire globe. With the advancement of technology soon we are going to find driver-less vehicles. It means the Drivers are losing their job. It is not the end here. The Computer is going be a threat for the professionals at the Hospital and in the restaurant as well. Till today, the doctors are operating on the patients or pathologist are taking tests and level of anesthesia during the surgical procedure are decided by special doctor. But time is near when the complex surgical procedure, CAT scan or even low-level anesthesia will be decided by Computer.  The restaurant jobs will also take a shift. It is not far when machine will take the job of chef and cook our favorite healthy recipe for us. Many of office job will not exist but new scope will open.

Question is where we are heading to?  

It is such a complex situation if we just think in general sense, then we will understand we need preparedness to face such challenges! In this dramatic situation, Globalization has speed up the entire process. We are now competing with our next class or local organizations but our country of birth is no longer our identity. We are already a Global Citizen where even the highly skilled humans are in risk and competition is with entire world. In the past 20 years Technological Invention and Globalization have already made peoples job less in Manufacturing Industry worldwide. It is predicted that many industries will become irrelevant in the days ahead or worker will loss job due to automation or globalization. A report from Oxford says that, in next 20 years 47% jobs will be replaced by Technology. However, 70 million people are at a risk to lose the job. This is because the transition would be difficult for many workers. Then the question comes how to survive from this situation? Is it going to in against of Humans? The big questions come in mind. To face the change pattern and fit ourselves in the change process every time we need to develop skills. We need to learn new technology, new skills. We need to know the demand of the time and update us accordingly. Let’s focus on the preparedness that Organization or Individual must have to face the challenges of future times:

How the Organization should take preparation?

A very interesting report read few days back. US Companies listed in the Fortune 500 exist only for 18 years in average now, which was previously 61 years!  The same happened in UK too. But why this happened? The organizations which survived in the competition does have the relevance, brought innovation, considered the risk factors. Any kind of Industrial revolution brings risks of becoming irrelevance at a certain time. The organization must change as per the time demand, have the intelligence to see what are the changes coming ahead and now. So always have to bring innovation, change the strategy. If the organization fails to adopt changes, bring innovation and set strategy accordingly then its survival is at risk! Today’s strength may not be relevance in future. Organization must do SWOT Analysis at a certain time. And the leader must understand the dynamics and keep the change process rolling.

Preparation of Individual:

Many reports already predicted that due to the Fourth Industrial Revolution and new economy, many peoples will loss the job! We are moving to a destination which is already unknown to us. It is already mentioned that the future time will bring some challenges, technology will drive the Humans, Urbanizations will be speed up, and Industrialization will grow faster. The new changes will bring challenges before us. The success/survival from this situation will depend on what type of jobs we are doing now. It is true that the change pattern will have impact on the job market. On the other hand, many new opportunities will be created. It means jobs will be there but the pattern of the job may be different.  Many opportunity will be bloomed but the skills requirements will be different considering the pattern of jobs. The safer jobs will include those that are far less repetitive and much more creative. They include scientists, Technologist, healthcare providers, educators, gardeners, plumbers, and eldercare providers. We can’t even imagine the opportunities that new economy is bringing for us. So today’s kids need to be trained considering the future job skills. They must grow their Intelligence, should have the ability to do multitasking, develop skills, expert in technology. We have to grow them for the time we have not seen yet. The Youth at the time must follow the Global Trends, Their learning must focus on Skills. Fluent in Technology. Then there will be no point to afraid on.

Concluding Remarks

It is obvious that, the change process would not be as easy as we think of. But the preparedness should come from both the Individual and from Organizations level else success would be difficult. Because the concept of cheap labor will no longer exist globally. Most importantly the young generation must follow the Global Trends, their learning must focus on Skills. Fluent in Technology. Then there will be no point to afraid on.

https___s3-ap-northeast-1.amazonaws.com_psh-ex-ftnikkei-3937bb4_images_1_5_8_8_17008851-3-eng-GB_7日付け)バングラデシュ シェイク・ハシナ首相 インタビュー20181205192934_Data

She introduced new Bangladesh Globally

When I think to write on a person whom I like much, then it takes time. I find I have limited word stock or somehow my write-up doesn’t touch me. I am going through the same situation since yesterday.

I never had the opportunity to meet her personally whom I am writing about. I just have the opportunity to observe her from far. To many of us, she is a very dynamic leader. But whoever had the scope to meet her personally they have explained her personal qualities in many ways. Some of them termed her as women with a pleasant personality who always remain as the main source of inspiration/joy in a family. Some called her a very simple and lovely/caring mother who yet care about the importance of love and friendliness attitude with her child despite of her busy schedule. To some peoples, she is the last human being who can stand beside them at their well and woe. She is the one to whom we can express and explain! Yes, she is our Honorable Prime Minister of Bangladesh Sheikh Hasina! A great personality who is helping us to dream and achieve.

Today is a very special day for her. It’s her 73rd Birthday. In this day can we make a decision to do National Branding first? It is maybe confusing the reader’s thinking about the relation between the subject and the object.

Let’s make it clear. We usually try to do good in our special days. Our Honorable Prime Minister has reached to a level when her Birthday is not just her own special day to celebrate with family. I believe it is the joy of the entire Bangladesh to celebrate the day and we can start a good practice from here.

While teaching our kids we usually introduce the Global Leaders. We talk about them, bring their leadership qualities to our kids and our kids starts to know them, follow them. But we never think in Bangladesh we have got several examples of leadership whom we should highlight to our kids and do national branding. Our honorable Prime Minister has now reached such status whom we should highlight to our kids and future leaders. We may have a different ideology and political values, but as a leader and personality our Honorable Prime Minister is distinct from others and she achieved the love through her works and personality.

She is a visionary leader, very forward-thinking in nature. 12 years back she presented “Din Bodoler Shonod” and recently she drafted a development plan and helped us to see a Bangladesh after 100 years. This is very unique feature from where we can learn.

I personally like her boldness in taking any action. We talk about determination and our honorable PM can be the best example here. I have never seen to lose her determination when she decides to take any initiative or action.

Also timely action is another mentionable traits found in our Honorable Prime Minister. I can yet remember, Digital Bangladesh was not so easy to dream to take forward. 12 years ago which was just like a nightmare to many of us, now it is the reality. Her timely action took it forward. We can easily say, it was the right drive given by Bangladesh!

We heard a lot that a true leader creates a new leader. In Bangladesh perspective, the young generation has been found very reluctant to know the politics. But with the personal qualities, our Honorable PM has won the heart of the Young section of the population. Accordingly, she brought the young generation in Government, empowered the youth, placed the women in important leadership roles. She made a combination of Young and Experienced leaders in her Cabinet which is a very rare quality in Bangladesh.

Emotional Intelligent: A leader must have the emotional intelligence to keep unity and motivate the general people. I believe our Honorable PM is the single person who has achieved the heart of millions through her personal qualities. Her down to earth mentality touched many hearts. From kids to the youth population, from general peoples to intellectual population, everyone likes her, can share with her or embrace her with deep love and respect. She could achieve this from her attitude and nature.

At this age and despite her busy schedule, she manages time to learn and accept the change also.  She expressed it freely that she learns from her son and it is one of the biggest support for us all.

Her charismatic leadership traits have been praised highly in all sector of human development. Her popularity has exceeded the national boundary. Now I don’t need to explain “what/where is Bangladesh”, while I travel abroad, I don’t face the unwanted question in the immigration, whereas it was the most asked question in other countries.

We all are witnessing a progressive Bangladesh. Bangladesh is now in a height which truly makes many of us emotional. Digital Bangladesh is an example for many countries. While we have so many reasons to become proud of, then we shouldn’t promote the leaders who led the journey ahead? If we do not promote us then who will do then?

Bangladesh is now facing the challenges of Industry 4IR and we need such a leader who will guide us take us forward. Who is bold when we need to be bold, strong when the situation requires, emotional when peoples need her supports.

So, during her Birthday time, I took a decision to tell our young generation about the leaders of the country. We take a decision to promote our leaders since we have many examples. Let’s do our National Branding first if we can’t promote ourselves, who will do then? It’s a “me” world and together we can promote “we”

So a Big Salute to our Honorable Prime Minister for your effort in our development.

blur-calculator-composition-234171

Kids for Tomorrow: Perspective 2030

Perspective:

There is an important message which was given by Khalifa Hazrat Ali (R) thousands of year’s back, “You cannot raise your children the way your parents raised you. Because your parents raised you for a world that no longer exist.”  It means the education system changes as per the time demand and we have to consider the changing pattern of the time.

With the pace of time, we experience different social, economic, environmental changes. The job market demands different skills, the technological up-gradation also requires different skills set from us. We cannot expect to deal with this situation with the same emotional intelligence that we had previously. We need a different mindset. The education needs to be upgraded at the same pace so that it enhances them with the competencies, sense, values, attitudes of that time.

To be more specific, today’s kids will lead the future society.

  • They will lead the society which we haven’t seen yet.
  • They will deal with the problem that we haven’t known yet,
  • They will run the technology which is yet to come,
  • They will carry the values which are not yet in practice,
  • And they will face the challenges which are completely unknown to us. But we have to develop them for that time.

How?

We have to research on Future Time, probable changes in technology, values, skills, and change in the job market, competencies and desired attitudes, actions, and values that will require from kids. So before we sketch the plan, we need little research on the changing pattern. This concept note focused on those future sections:

Time is impending and the change is inevitable. Children entering school in 2019 will be young adults in 2030. So they will face the challenges which are unknown/unseen/unpredictable to us. But we have to prepare them for the unknown, unseen and unpredictable future. To face the employment challenge, today’s children have to be skilled in a few factors:

  • They must be habituated to ask/generate quality questions
  • They must understand complex communication
  • They must be emotionally and socially intelligent
  • They must innovate, know innovation rather follow the invention of others
  • They should know to solve problems based on their location and culture
  • They must have the analytical ability, think deeper and solution-focused

Let’s now elaborately discuss on the above points”

  1. Ability to Ask Question: Question helps to make our understanding clear. It helps to express oneself, reduce confusion and give clear thought on any particular question. Asking question is a good manner in which kids learn during their childhood. As they grow they lost this habit for a few families, social and behavioral factors.  A supporting environment can help the kids to gain these attitudes.
  2. Complex Communication: As technology develops and enriching our lifestyle, we can expect our kids will have complex business and family environments. Their work patterns will be changed and focus will be extended. Previously we focused only on locally, but now we focus everything globally. So considering this fact, we can predict complex communication systems for our kids. We should prepare our kids for the complex communication situation.
  3. Be Innovator rather user: We need to prepare our kids so that they can innovate. Because it is already a demand for the time and gradually the expectation will go higher. Kids will invent solution/systems. In the fast competitive world, we cannot expect any kid who may not be an innovator. This innovation should be in their thought and in their action. Without innovative mind, it will be difficult to survive in the future world. We should help kids to develop this innovative mind and action.
  4. Kids should know to solve problems based on their location and culture: Every problem may not have a universal solution. Time, Place, Culture brings a different solution for different problems. Our effort will be to teach the kids to become a solution provider, not the problem identifier.
  5. Kids must have the analytical ability, think deeper and solution-focused: It will be the prime focus of the time. Kids must have an analytical mind. They must have the power to see the unseen, understand the critical point, bring easy solution of a critical problem. We cannot expect a kid to develop this virtue in a day. We have to nurture them. Play with their mind and brain so that they become habituated with a certain situation. Our effort will be to nurture this quality.
  6. Our Approach in Developing the Kids: Expertise in any particular area may not be a good point for a future time. Already peoples are loving multi-tasking ability. So our kids will be at a point to have different capability to prove themselves. We will nurture them to become STEM Expert.

 

Concluding Statement

We are now educating our kids for the unseen future. To ensure that they are prepared to take the challenges of future time, we have to take initiative now. We need to re-design/upgrade our education systems appropriately. We need to bring it in our agenda to find the right solution. The