Teaser-78

অনুপ্রেরণামূলক গল্প | উৎসাহ

একদল ব্যাঙ বনের ভেতর দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, হঠাৎ তাদের মধ্যে দু’টি ব্যাঙ গভীর গর্তে পড়ে গেল। অন্য ব্যাঙ গুলো যখন গর্তটির চারপাশে ভিড় করেছিল এবং দেখল যে এটি যথেষ্ঠ গভীর তখন তারা ব্যাঙ দুটিকে বললো যে তাদের বেঁচে থাকার কোন আশা নেই। তবে, গর্তে পড়ে যাওয়া ব্যাঙ দুটি উপরের ব্যাঙগুলোর কথা উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারা গর্ত থেকে উপরে উঠবার প্রাণপণ চেষ্টা করছিলো।

গর্তের উপরের ব্যাঙের দলটি তখনও বলছিল যে তাদের হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত। তারা কখনই গর্ত থেকে বের হতে পারবে না। অবশেষে, গর্তে পড়ে যাওয়া ব্যাঙ দুটির মধ্যে একটি ব্যাঙ অন্যরা যা বলছিল সেদিকে মনোযোগ দিয়ে হাল ছেড়ে দিলো। অন্য ব্যাঙটি তখনও তার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছিলো এবং সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লাফ দিতে থাকল।

উপরে থাকা ব্যাঙগুলো তাকে পাথর মারতে লাগলো যাতে তারা তাড়াতাড়ি কম কষ্ট পেয়ে মারা যায়। গর্তে পড়ে থাকা ব্যাঙটি আগের থেকে লম্বা এবং জোড়ে লাফ দিল এবং এক সময় সে উপরে উঠতে সক্ষম হলো। যখন সে বের হলো, তখন অন্য ব্যাঙরা বলল যে তুমি কি আমাদের কথা শুনতে পাওনি? একটু বিশ্রাম নিয়ে ব্যাঙটি ব্যাখ্যা করলো যে সে বধির, কানে কিছুই শুনতে পায় না। সে মনে করেছিলো উপরের ব্যাঙগুলো তাকে পুরোটা সময় উৎসাহ দিয়ে আসছিলো যাতে সে দ্রুত গর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

গল্পের সারমর্ম: 


মানুষের কথা অন্যের জীবনের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ আছে যারা সবসময় অন্যকে উৎসাহ দেবার চেষ্টা করেন। আমি এক তরুনের সাথে কথা বলছিলাম এবং সে আমাকে জানালো যে সে বহুদিন ধরে চেষ্টা করছিলো তার প্রেজেন্টেশন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য। এজন্য সে সেমিনার/ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করত। একদিন স্বীদ্ধান্ত নিলো সে ইউটিউভে তার ভিডিও আপলোড করবে। সে তার চেহারাকে গোপন করে শুধু তার ভয়েসকে ব্যবহার করে ভিডিও করতে লাগলো এবং তার বন্ধুরা তাকে যথারিতী প্রশংসা করতে লাগলো। একদিন এক বন্ধু তাকে পরমর্শ দিলো সে যেন তার চেহারাটাও ভিডিওতে ব্যবহার করে। বন্ধুর উপদেশ গ্রহন করে সে তার প্রথম ভিডিও আপলোড করলো এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলো। বন্ধুরা তার কাজ দেখে প্রশংসা করা শুরু করলো এবং কোন জায়গায় আরো উন্নয়ন প্রয়োজন সেগুলোও উল্লেখ করলো। বন্ধুদের প্রশংসা এবং পরামর্শ শুনে সে ভিডিও করতে থাকলো এবং দেখতে দেখতে তার ইউটিউভ চ্যানেলে প্রায় ১০ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হলো। আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম দেড় বছরের মধ্যে তোমার এই সাফল্য তুমি কাদের উৎসর্গ করতে চাও। সে নির্ধিধায় উত্তর দিলো প্রথমে আমার সৃষ্টিকর্তা এবং তারপর আমার সকল বন্ধু এবং শুভাকাঙ্খি যারা আমাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহের মাধ্যমে সাহস যুগিয়েছে।  

আপনার মুখ থেকে প্রতিটি শব্দ বা কলম দিয়ে লেখা প্রতিটি অক্ষর আপনার নিজের অজান্তেই আপনার কাছের বা দুরের মানুষদের সাহস যোগায় আবার ব্যর্থ করে দেয়। এজন্য আমি বিশ্বাস করি ”যদি আর কোন কিছু না পাও সাহায্য করবার তাহলে অন্তত ভালো কিছু শব্দ দিয়ে সাহায্য করে দিও”। কেউ হয়তো অনেক কষ্ট করে একটি কাজ সম্পন্ন করে আপনার কাছে জমা দিয়েছে। বেশী কিছুনা লাগবে না শুধুমাত্র একটি ধন্যবাদ এবং আরো উন্নয়নের জন্য কিছু পরামর্শ, দেখবেন বিদ্যুতের গতিতে যে ছুটে গিয়ে আরো মনোযোগ দিয়ে পরিশ্রম করছে।

অতএব আমাদের সবার উচিত মুখ থেকে শব্দ বের হওয়ার আগে আমি কি বলছি তা নিয়ে একটু চিন্তা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


গল্পটি গুগল থেকে সংগৃহীত। সারমর্ম লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

Teaser-63

অনুপ্রেরণামূলক গল্প | হয়তো লি কিম তার বিবাহের দিনটির কথা সাড়া জীবনেও ভুলবেন না

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি গ্রামে ছোট্ট পরিবার নিয়ে এক সময় বাস করতো লি কিম। লি কিমের বাবা বেঁচে ছিলেন না এবং পরিবারে তাঁর মা, দাদী ও এক কিশোরী বোন ছিল। লি কিম যখন বিয়ের যোগ্য হয়েছিলেন তখন তাঁর মা তাঁর জন্য উপযুক্ত কনে খোঁজার কাজটি করেছিলেন। অনেক যোগাযোগের পর তিনি একটি মেয়েকে সনাক্ত করলেন তার ছেলের জীবনসঙ্গী হিসেবে।

উভয় পক্ষই বিবাহে সম্মতি জানালে, বিয়ের তারিখ নির্ধারন করা হলো। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য বিয়ের জন্য কাজ শুরু করে দিলেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কাজ বেছে নিলেন এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছিল। লি কিম বললেন আমি আমার বিয়ের স্যুটের দায়িত্ব নিলাম এবং এটি আমিই অর্ডার দেবো। সবাই খুব ব্যস্ত, আনন্দিত কারন বাড়ির একমাত্র ছেলের বিয়ের হচ্ছে যে অনেক ছোট বয়স থেকেই পরিবারের হাল ধরেছে এবং সকলের মুখে হাসি ফুটাবার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে। সবাই চাচচ্ছিল লি কিমের বিয়েতে যেন কোন কমতি না থাকে। লি কিম সহ পরিবারের সবাই বিভিন্ন কাজে এতোটাই ব্যস্ত ছিলো বিয়ের দুদিন আগে হঠাৎ লি কিমের মাথায় এলো যে বিয়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে বিয়ের স্যুট সেটিই সে অর্ডার দিতে ভুলে গেছে। তড়িঘড়ি করে সে বাড়ির কাছের একটি দর্জির দোকানে গেলো এবং সমস্ত ঘটনা খুলে বললো। দর্জি তার বিপদের কথা শুনলেন এবং রাজি হলেন এতো অল্প সময়ের মধ্যেও বিয়ের স্যুট বানিয়ে দিতে। বিয়ের অন্যান্য কাজ শেষ করে লি কিম বিয়ের আগের রাত ৯ টার দিকে দর্জি দোকানে গিয়ে হাজির এবং ততক্ষণে দর্জি দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। লি কিমকে দেখে দোকান খুলে তার স্যুটটি দিলেন এবং বললেন এই স্যুটটি গায়ে দিয়ে দেখবার জন্য। লি কিম বলেন এখনো অনেক কাজ বাকি আছে তাই তিনি একবারে বাড়িতে গিয়েই পরে দেখবেন।


রাতের খাবার শেষ করে লি কিম চিন্তা করলেন যে একবার পরে দেখি স্যুটটি কেমন হয়েছে। স্যুটটি পরেই লি কিমের মন খারাপ হয়ে গেলো। স্যুটের প্যান্ট প্রায় তিন ইঞ্চি বড় হয়ে গেছে। বাড়ির সবাই কে দেখালেন এবং সবাই মন খারাপ করে যার যার কাজে চলে গেলেন। লি কিমও মন খারাপ করে কাপড়গুলো আলমিরাতে রেখে দিলেন।   

অনেক রাতে মায়ের ঘুম ভেঙে গেলো এবং চিন্তা করলেন আমার ছেলের কাল এতো বড় একটি আনন্দের দিন আর তার ছেলেকে তিন ইঞ্চি লম্বা প্যান্ট পড়তে হবে আর আমি মা হিসেবে সেটা কিভাবে দেখবো? মা ঘুম থেকে উঠলেন, সুই-সুতা-কাচি বের করলেন এবং প্যান্টটিকে তিন ইঞ্চি ছোট করে ভাঁচ করে রেখে আবার শান্তি ঘুমাতে গেলেন।

প্রিয় ছোট বোনেরও ঘুম আসছিল না এবং চিন্তা করছিল আমার বড় ভাইয়ের জন্য কাল এতো বড় একটি আনন্দের দিন আর ভাইকে কেমন বোকার মতো দেখা যাবে এবং সবাই তাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে! বোন ঘুম থেকে উঠলো, সুই-সুতা-কাচি বের করলো এবং প্যান্টটিকে তিন ইঞ্চি ছোট করে ভাঁচ করে রেখে আবার আনন্দে ঘুমাতে গেলো।

লি কিমের প্রিয় দাদী জেগেছিলেন অনেক রাত পর্যন্ত কারন তারও ঘুম আসছিল না এবং তিনিও চিন্তা করছিলেন আমার নাতীর কাল এতো বড় একটি আনন্দের দিন আর তাকে তিন ইঞ্চি লম্বা প্যান্ট পড়তে হবে আর আমি দাদী হিসেবে সেটা কিভাবে দেখবো? দাদী ঘুম থেকে উঠলেন, সুই-সুতা-কাচি বের করলেন এবং প্যান্টটিকে তিন ইঞ্চি ছোট করে আবার ভাঁচ করে রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গেলেন।

পরের দিন সকালে যখন লি কিম ঘুম থেকে উঠে স্যুটটি গায়ে দিলেন, তখন তাঁর মুখের অবস্থা ভয়ংকর দেখাচ্ছিল যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে তাঁর প্যান্টের এখন আরও খারাপ অবস্থা – ৬ ইঞ্চি ছোট!

হয়তো লি কিম তার বিবাহের দিনটির কথা সাড়া জীবনেও ভুলবেন না।

গল্পটির সারমর্ম

আমাদের জীবনে যোগাযোগের (Communication) গুরুত্ব অপরিসীম। উপরের ঘটনাতে কাউকেই সরাসরি দোষারোপ করা যাবে না কারন কারোই উদ্দেশ্য খারাপ ছিলো না। যে জায়গাতে ভুল হয়েছে তা হলো ছোট্ট একটি বার্তা “আমি প্যান্টটি ঠিক করে রেখে দিয়েছি“। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্তম্ভকে ভুলে যাই যেমনঃ

  • মানুষ
  • বার্তা
  • প্রেক্ষাপট
  • শ্রবন
  • বডিল্যাগুয়েজ

এই পাঁচটি স্তম্ভকে আমরা অনেকেই এক করতে পারি না। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের অতি সাধারন কাজও নষ্ট হয়ে যায় সামান্য যোগাযোগর ভুলের কারনে। কোন মানুষকে কোন প্রক্ষেপটে কোন বার্তাটি দেবার প্রয়োজন এবং সেই বার্তাটি দেবার আগে সে বিষয়ে ভালো করে শুনবার চেষ্টা করা হয়েছে কিনা বা সব কিছু ঠিক আছে শুধুমাত্র আমার দেহের ভাষার গড়মিলের কারনে যোগাযোগের পুরো প্রক্রিয়াটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলাফল ব্যর্থতা!

সেজন্য বলা হয় যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুত্র হলো “সঠিকভাবে বুঝে নেয়া এবং সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া”। এই সুত্রটি যিনি নিয়মিত অনুশীলন করবেন তার কাছে ব্যর্থতা শব্দটি হবে অস্বাভাবিক কারন অনুশীলনে সবই সম্ভব

নীচের এই ভিডিওটি মনোযোগ দিয়ে শুনলে আপনারা অনেক কিছু ধরতে পারবেন বলে আশা রাখছি:

https://www.youtube.com/watch?v=7LanFKuqCqc&t=130s

গল্পটি গুগল থেকে সংগৃহীত। অনুবাদ এবং সারমর্ম লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

Teaser-64

অনুপ্রেরণামূলক গল্প |ছেলের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে বাবা যে কাজটি করতে বললেন

অনেক বছর আগে একটি গ্রামে বাবার সাথে বাস করতো ছোট্ট ছেলে যার অসম্ভব রাগ ছিলো। কোনভাবেই ছেলেটি তার মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো না এবং বারবার মেজাজ হারিয়ে ফেলতো। বাবাও বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লেন তার ছেলের খিটখিটে মেজাজ দেখে। একদিন ছেলেটির বাবা একটি উপায় বের করলেন। ছেলেকে ডেকে এক ব্যাগ ভর্তি পেরেক দিয়ে বললেন ঐ যে বাঁশের বেড়া দেখতে পাচ্ছো, যখনই তুমি তোমার মেজাজ হারিয়ে ফেলবে তখনই তুমি একটি করে পেরেক ঐ বাঁশের বেড়াতে হাতুরী দিয়ে গেথে দেবে। প্রথম দিন ছেলেটি ৩৭টি পেরেক গেথেছিল বাঁশের বেড়াতে। ছেলেটি দেখতে পেল ধীরে ধীরে কয়েক সপ্তাহর মধ্যে তার মেজাজ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছে এবং বাঁশের বেড়াতে পেরেকের সংখ্যাও কমে আসছে। একদিন ছেলেটি উপলব্ধী করলো বেড়াতে হাতুরী দিয়ে পেরেক গাথবার চেয়ে মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ।

তারপর একদিন এলো যেদিন ছেলেটির একটি পেরেকও হাতুরী দিয়ে বাঁশের বেড়াতে গাথতে হয়নি। সাথে সাথে দৌড়ে বাবার কাছে গিয়ে সুখবরটি দিল। বাবা ছেলেটির কথা শুনে খুশি হলেন এবং বললেন এরপর যতবার তুমি তোমার মেজাজ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে ততবার একটি করে তোমার লাগানো পেরেক তুলে ফেলবে। দিন কেটে যাচ্ছিলো এবং ছোট্ট ছেলেটি শেষ পর্যন্ত তার বাবাকে বলতে পেরেছিল যে সমস্ত পেরেক বেড়া থেকে সে তুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। বাবা তার ছেলের হাত ধরে বেড়ার দিকে নিয়ে গেলেন এবং তারপর বললেন:  

বাবা তুমি খুব ভালো কাজ করেছো যে সবগুলো পেরেক তুলে ফেলেছো তারমানে তুমি তোমার মেজাজকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছো কিন্তু বেড়াটির দিকে তাকিয়ে দ্যাখো সেটি আর আগের মতো নেই। অনেকগুলো ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি আর কখনই আগের মতো সুন্দর দেখাবে না। ক্ষতগুলো সারাজীবন রয়ে যাবে। তুমি যখন রাগের মাথায় কথা বলো, সেটি মানুষের মনে ঠিক এই বেড়ার গায়ে লেগে যাওয়া দাগের মতো ক্ষতের সৃষ্টি করে যা কখনও মুছে ফেলা যায় না। তুমি তোমার কথা দিয়ে একজন মানুষকে আঘাত করলে তারপর হাজারবার দুঃখিত বললেও তাতে কিছু যায় আসে না কারন যে ক্ষতটির সৃষ্টি হয়েছে তা কখনও পূরন হবে না।  

গল্পটি সারমর্ম

”রেগে গেলেন তো হেরে লেগেন”, আমরা সবাই এই উক্তিটি জানি এবং আমাদের সকলেরই উচিত নিজেদের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করা। গুরুজনেরা সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে রাগের মুহুর্তে এমন কিছু বলবে না যা তোমার ভেতর পরবর্তীতে অনুশোচনার সৃষ্টি করবে এবং তুমি চাইলেও আর আগের অবস্থায় ফেরত যেতে পারবে না।

যেভাবে নিজের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারেনঃ


আমার নিজেরও প্রায়ই মেজাজ হারিয়ে যেত এবং কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হতাম না। একদিন এমনই মেজাজ হারিয়ে ফেলার দিন এলো এবং আমি কোনকিছু না ভেবেই সে জায়গা থেকে বেড়িয়ে চলে এলাম এবং কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে রাস্তা দিয়ে হাটা শুরু করলাম। তারপর খেয়াল করলাম সামনেই একটি মসজিদ এবং ঢুকে নামাজ পড়ে বসে রইলাম। অল্পকিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম আমার মনটা শান্ত হয়ে গেলো। তারপর থেকে আমি উত্তপ্ত যে কোন পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসি। দ্বিতীয় যে কাজটি আমি করি তা হলো একটু বিরতি নিয়ে তারপর আবার শুরু করি। তৃতীয়তো আমি এমন কোন ব্যক্তির সাথে পারত পক্ষে কথা বলিনা যার সাথে যোগযোগ করলে আমি তার আচরনের কারনে মেজাজ হারিয়ে ফেলতে পারি। এ তিনটি উপায় হয়তো আমার জন্য কাজে লেগেছে, সবার জন্য যে প্রয়োজনে আসবে সেটি নয়। আপনার অনুশীলনের প্রক্রিয়া আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। অনেক মানুষের কাছে শুনেছি যে বিরক্তিকর মুহুর্তে তারা করেকটি কাজ করে থাকেন যেমনঃ

  • উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কথা বলার আগে অনেকবার চিন্তা করেন।
  • পরিস্থিতি একবার শান্ত হয়ে গেলে তারপর নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
  • উত্তপ্ত জায়গা থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসেন।
  • একটু বিরতি নিয়ে তারপর গুছিয়ে উত্তর দেবার চেষ্টা করেন।
  • উত্তেজনা মুক্ত করতে হিউমার ব্যবহার করেন।
  • মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখবার বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অনুশীলন করেন ইত্যাদি।   

বন্ধুরা ক্রেধকে নিয়ন্ত্রন করবার কাজটি হয়তো প্রথমে অনেক কঠিন মনে হবে কিন্তু মনে রাখতে হবে সঠিকভাবে অনুশীলন করলে সবকিছুই সম্ভব করা যায়। কারন আমি বিশ্বাস করি 

অনুশীলনে সবই সম্ভব | Practice makes everything perfect


গল্পটি গুগল থেকে সংগৃহীত। অনুবাদ এবং সারমর্ম লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

Teaser-65

অনুপ্রেরণামূলক গল্প | ছেলের প্রশ্নে মা উট বিব্রত

একদিন একটি মা এবং একটি শিশু উট অলস দুপুরে বসে ছিল এবং হঠাৎ শিশু উটটি মা উটটিকে জিজ্ঞাসা করলো, মা, আমি কি তোমাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি?

মা বললো, অবশ্যই! কেন বাবা, তোমাকে কি কোন কিছু বিরক্ত করছে? না! তবে আমার মনের ভেতর কিছু প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে।

তোমার কাছে আমার প্রথম প্রশ্ন আমাদের পিঠের উপর কুঁজ কেন?”

আচ্ছা বাবা শোন, আমরা মরুভূমির প্রাণী, আমাদের শক্তির প্রয়োজন আর সেজন্যই আমরা কুঁজের মাধ্যমে শক্তি সঞ্চয় করে থাকি এবং আমরা খাবার ছাড়া মরুভূমিতে প্রায় একমাস বেঁচে থাকার জন্য পরিচিত।

ঠিক আছে, তাহলে ২য় প্রশ্ন আমাদের পা এতো দীর্ঘ এবং বৃত্তাকার কেন?

বাবা, এটি আমাদের মরুভূমিতে দ্রুত গতিতে চলবার জন্য সাহায্য করে। এই পা দিয়ে আমি মরুভূমির চারপাশে যে কারও চেয়ে দ্রুত গতিতে চলতে পারি!

ঠিক আছে, তাহলে ৩য় এবং শেষ প্রশ্ন আমাদের চোখের পাতা দীর্ঘ কেন? কখনও কখনও এটি আমাকে বিরক্ত করে!

মৃদু হেসে মা বললো, এই দীর্ঘ ঘন চোখের পাতা গুলি আমাদের মরুভূমির বালুঝড় থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

এবার শিশু উটটি কিছুক্ষণ ভাবনার পর বলল, সুতরাং বলা যায় যে আমরা যখন মরুভূমিতে থাকি তখন কুঁজের মাধ্যমে আমরা শক্তি সঞ্চয় করি, বৃত্তাকার বড় বড় পা গুলো মরুভূমির মধ্য দিয়ে চলতে সাহায্য করে এবং এই চোখের বড় ঘন পাতা আমার চোখকে মরুভূমির বালুঝড় থেকে রক্ষা করে। “মা তাহলে আমরা চিড়িয়াখানায় কি করছি?”


গল্পের সারমর্ম:

আপনার জ্ঞান, দক্ষতা, আচরন, কর্মক্ষমতা এবং যোগ্যতা তখনই কাজে আসবে যদি এটি সঠিক জায়গায় ব্যবহার করা হয়। আমরা প্রত্যেকেই দক্ষতা বিকাশ করছি কোন লক্ষ্যকে সামনে না রেখে। এককথায় বলা যায় লক্ষ্য ছাড়া দক্ষতা বিকাশ ঘটছে প্রতিনিয়ত। আমরা প্রায়ই দেখছি আমরা যেটি ভালোবাসি সেটি আমরা দক্ষভাবে করতে পারছি না। আমরা যেটি দক্ষভাবে করতে পারছি সেটি আমরা ভালোবাসি না। যার ফলে আমাদের মধ্যে একধরনের বিরক্তির জন্ম নেয়। কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের মনের সাথে লক্ষ্যের এবং লক্ষ্যের সাথে দক্ষতার কোন সংযোগ থাকে না। তাই সময় থাকতে আমাদের এখনি লক্ষ্যকে নির্ধারন করে জ্ঞান এবং দক্ষতা বিকাশ করতে হবে। না হলে শিশু উটটির মতো হয়তো আমাদেরও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে কোনও না কোন একদিন।

গল্পটি গুগল থেকে সংগৃহীত। অনুবাদ এবং সারমর্ম লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট