IMG_3372

টেকসই ক্যারিয়ারের জন্য কর্মদক্ষতা

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। একজন উদ্যোক্তা বা চাকরিদাতা তার চাকরী প্রত্যাশী বা তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছেন, প্রত্যেকের কাছে প্রত্যাশা করে থাকেন। কর্মদক্ষতা (Employability Skills) একজন কর্মীর মধ্যে যদি থাকে তাহলে তিনি তার কর্মক্ষেত্রকে বর্তমান অবস্থা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে বা তার সহকর্মীদের সাথে দলগতভাবে কাজ করে নিদির্ষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। আর ঠিক এই কারনেই একজন উদ্যোক্তা বা একজন চাকরীদাতা সব সময়ই প্রত্যেক চাকরী প্রত্যাশীর মাঝে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) খুজবার চেষ্টা করে থাকেন।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে আবার ট্রান্সফারেবল স্কিলস বা Soft Skills বলা হয়ে থাকে। এর কারন কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নির্দিষ্ট কোনো একটি বিশেষ চাকরি ক্ষেত্রের জন্য নয়। এর মানে একজন কর্মদক্ষতা সম্পন্ন ব্যাক্তি যেকোন ক্ষেত্রে বা যেকোন পদবীতে কাজ করার সুযোগ পেলে তিনি তার কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে তার ব্যাক্তিগত বা তার কর্মক্ষেত্রের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগাতে পারেন। এর মানে কর্মদক্ষতা সব সময় প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই সম্পূর্ন তার নিজস্ব বা ব্যক্তিগত দক্ষতা যা কিনা সে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার তাগিদে ব্যবহার করতে পারছেন। উদাহরনস্বরুপ ধরা যাক বিশ্ববিদ্যালয়/পলিটেকনিকের পড়াশুনা শেষ করে রাসেল রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করতে শুরু করলেন এবং ভালোভাবেই দক্ষতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ রাসেলের ভাবনাতে এলো যে তিনি তার চাকরি ক্ষেত্র পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি ক্ষেত্রে কর্মজীবন শুরু করবেন এবং যথারীতি তিনি টেলিকম সেক্টরে যোগ দিলেন। এখন আমরা বিষয়টি যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পারবো ঐ দুই সেক্টরে দুই ধরনের Functional Skills প্রয়োজন যা একটি আরেকটি থেকে সম্পন্ন ভিন্ন।  কিন্তু দুই সেক্টরেই একই ধরনের দক্ষতা সমুহ প্রয়োজন যাকেই আমরা বলছি কর্মদক্ষতা (Employability Skills)।

প্রশ্ন আসতেই পারে এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কেন প্রয়োজন?

প্রথমত আমাদের সকলেরই একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি প্রয়োগ করতে হবে আর সেটা হলো প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই দুটি বিষয়ের প্রতি আমাদের কঠোর মনোযোগ রাখতে হয় আর তা হলো সহকর্মিদের কোন বিষয় ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া বা সহকর্মিদের কাছ থেকে কোন বিষয় ভালো করে বুঝে নেয়া। যদি কোন ব্যক্তি ঠিক ভাবে কোন কাজ বুঝে না নেয় তাহলে সে ঠিক ভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারবেন না। আবার অন্যদিকে যদি সে কাজটি যদি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার সহকর্মীরা ঠিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে না। আর এই বুঝিয়ে দেয়া বা বুঝে নেয়া ঠিক তখনই সম্ভব যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকবে। একজন ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন সে প্রতিষ্ঠানে তার কর্মদক্ষতার (Employability Skills) দ্বারা তার নিজস্ব কাজকর্ম গুলো সে নিজেই খুব সহজে বুঝে নিতে পারে বা তা নিজের দলের সাথে একত্রে মিলে কাজ করতে পারে। আবার সে নিজেই একটি কাজ তার সহকর্মীকে সাথে নিয়ে অনায়াসে সম্পাদন করতে পারে।

দ্বিতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে তিনি যেকোন সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন বা যেকোন সমস্যা আসার পূর্বেই সেই বিষয়ে বিশ্লেষন করে তা উপর একটি প্রতিবেদন করতে পারবে বা সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারবেন। একজন কর্মদক্ষহীন মানুষই শুধুমাত্র সমস্যাকে দেখতে পান কিন্তু তার সমাধানের রাস্তা তিনি দেখতে অক্ষম থাকেন।

তৃতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে সে তার নিজস্ব দক্ষতাগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজাতে পারেন। আবার যে দক্ষতাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন বা প্রয়োজনীয় কিন্তু নিজের ভেতর সেগুলোর অনুপস্থিতি নিজেই চিহ্নিত করতে পারবে এবং সেই ঘাটটিগুলো পূরুন করতে সে তার নিজস্ব দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবে। আর এই সব কিছু করা সম্ভব যখন কোনো ব্যক্তির কর্মদক্ষতা বা এমপ্লোয়াবিলিটি স্কিলটি থাকবে।

এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় আছে কিনা? আমার মতে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় নেই। শুধুমাত্র প্রয়োজন সচেতনতা এবং শেখার মনোভাব থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন অনুশীলন। আমাদের ভুল হবেই কিন্তু আমরা যদি আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে নিয়ে যদি সঠিকভাবে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারি তাহলে আমাদের যেকোন পরিকল্পনা অর্জনে সহজ হবে। তবে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সব থেকে সঠিক সময় আমাদের ছাত্রজীবন। কারন ছাত্রজীবনে আমরা অন্য একধরনের স্বাধীনতা ভোগ করি যেটা আমরা অনেকেই ধরতে অক্ষম থাকি। এই সময়ে আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, যার সাথে ইচ্ছা তার সাথেই কাজ করতে পারি, যার সাহায্য প্রয়োজন তার কাছেই পেতে পারি। তাই আমি মনে করি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন এবং তীক্ষ্ণ করার সঠিক সময় ছাত্রজীবন।     একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, যত দ্রুত এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিশ্চিত করা যাবে ঠিক তত দ্রুত ক্যারিয়ারের অগ্রগতি বা উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিয়ে লিখতে গেলেই আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর কথা চলে আসে। আসলে কর্মদক্ষতার (Employability Skills) উপরই নির্ভর করে আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী অথবা বলা যায় ব্যক্তিগত গুণাবলীর সমন্বয়ে গঠিত আমাদের কর্মদক্ষতা। আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী তিনটি স্তম্ভের দাড়িয়ে থাকে। 

প্রথম স্তম্ভঃ ইতিবাচক ব্যক্তিগত গুণাবলী (Positive Personal Attributes)

আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর প্রথম স্তম্ভ। এই স্তম্ভের গুণাবলীগুলো সম্পূর্ন আমাদের ব্যক্তিগত। যেকোন অর্পিত কাজ দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করা, ব্যক্তিগত নিয়মানুবর্তিতা অক্ষুন্ন রাখা, যা বলছি তা নিজের ক্ষেত্রে অনুশীলন করা, যেকোন পরিবর্তনে হ্যা-সূচক মনোভাব বজায় রাখা, সময়ের প্রতি যত্নবান থাকা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আত্মসম্মানবোধ নিয়ে জীবন পরিচালন করা। 

দ্বিতীয় স্তম্ভঃ সু-সম্পর্ক (Good Human Relation)

শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় আমাদের চারপাশে সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জীবন পরিচলনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। খুব সহজেই আমরা যেকোন সম্পর্ক মুহুর্তেই নষ্ট করে দিতে পারি যেটি তৈরিতে হয়তো আমাদের অনেক সময় এবং পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুবই সামান্য ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে হয়তো আমার অতি কাছের বন্ধুটির সাথে নিজের অজান্তেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেললাম। আর কর্মক্ষেত্রে সুসম্পর্ক অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব সহজেই আমরা আমাদের যেকোন সম্পর্ককে মজবুদ রাখতে পারি। নিন্মের কাজগুলো সম্পর্ক দৃঢ় করতে সহায়তা করবেঃ

·       যেকোন পরিস্থিতিতে দুঃখিত বা ধন্যবাদ অত্যন্ত কার্যকর
·       দক্ষতা শেয়ারিং
·       ”তুমিও জিতবে এবং আমিও জিতবো” এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা
·       উত্তর দেবার আগে ভালোভাবে শুনে নেয়া 
·       যে কারো ভালো কাজে প্রশংসা করা
·       নিজের ভুল স্বীকার করা
·       অন্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা
·       সবসময় সবক্ষেত্রে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করা

তৃতীয় স্তম্ভঃ উচ্চতর কর্মক্ষমতা অর্জন (Superior Work Performance)

ব্যক্তিগত গুণাবলীর তৃতীয় এবং শেষ স্তম্ভটি কর্মক্ষেত্রের সাথে জরিত। কর্মক্ষেত্রে আপনার কর্মক্ষমতা নির্ধারিত হয় আপনি কিভাবে কর্মসম্পাদন করছেন। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন যেমনঃ

  • ত্রুটি বিহীন কাজ করছেন কিনা
  • সময়সীমার মধ্যে আপনি কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন কিনা
  • কর্মক্ষেত্রে আপনার উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে বুঝে নিয়েছেন কিনা
  • আপনার কাজের ধরনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন কিনা
  • কাজের অগ্রধিকার নির্ধারন করতে পারছেন কিনা
  • আপনি কি দলগতভাবে কাজ করতে পারছেন কিনা
  • আপনি সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনকে কতটুকু গুরুত্ব দেন
  • আপনি কি সমস্যা শুধুই দেখছেন নাকি সমাধানও করতে পারছেন
  • আপনি কি সঠিক সময়ে স্বীদ্ধান্ত নিতে পারছেন কিনা
  • অন্যের স্বীদ্ধান্তকে সম্মান করছেন কিনা

এই ৩টি স্তম্ভ যখন একজন পেশাজীবি নিশ্চিত করবেন তখন তার সাথে সাথে কর্মদক্ষতাও (Employability Skills) সুনিশ্চিত হবে।

এবার কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে নিয়ে যদি একটু গভীরে যাই তাহলে আমরা দেখতে পাই বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দক্ষতার সন্নিবেশ ঘটিয়ে কর্মদক্ষতাকে সংগায়িত করার চেষ্টা করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।

  • ফান্ডামেন্টাল স্কিলসঃ একজন ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন। সেক্ষেত্রে তিনি তার অফিসের নিয়ম কানুন কতটুকু মেনে চলেন, সে কতটুকু তথ্য সন্ধানকারী, তার যে নিয়মিত কাজগুলো থাকে সেগুলো তা কতটুকু যত্ন সহকারে করছেন বা কত দ্রুত করছেন ও কাজের নির্দিষ্ট ডেডলাইন মেনে চলছেন কিনা ইত্যাদি সবকিছু ফান্ডামেন্টাল স্কিলস এর অন্তর্গত। অর্থাৎ যদি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন করতেই হয় তাহলে অবশ্যই ফান্ডামেন্টাল স্কিলস থাকতেই হবে।
  • ইন্টারপার্সোনাল স্কিলসঃ এটি মূলত এমন একটি দক্ষতা যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস বলতে একটি প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী বা চাকরীজীবি তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী বা আশেপাশে যারা আছেন তাদের সাথে তার ব্যবহার, আচার আচরন কেমন। অর্থাৎ সে তার সহকর্মীদের সহায়তা করে, সে কি তার কর্মীদের সমস্যা নিজে অনূভব করে। আর এই সব গুলো হল ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস।
  • কমিউনিকেশন স্কিলঃ কমিউনিকেশ্ন স্কিলস ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবন দুটি ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। কারন আমরা আমাদের জীবনে যেকোন কিছু যোগাযোগের মাধ্যমেই সম্পন্ন করি। লেখা থেকে শুরু করে কথা বলা, উপস্থাপন করা, অঙ্গভঙ্গি সবকিছু মিলেই কমিউনিকেশন স্কিলস। একজন চাকরিদাতা চাকরি প্রত্যাশীর কাছে শুধুমাত্র দেখতে চান যে তিনি পড়ে বোঝেন কিনা, বলে বোঝাতে পারেন কিনা এবং তিনি সঠিকভাবে লিখতে পারেন কিনা।  এখন কেউ যদি ঠিকভাবে লিখে বা কথা বলে অথবা অঙ্গভঙ্গি কিংবা ইশারা দ্বারা কিছু উপস্থাপন বা বোঝাতে না পারেন তাহলে সেক্ষেত্রে কোনভাবেই তার পক্ষে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবেনা। আর তাই কমিউনিকেশন স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • সমস্যা দূরীকরনঃ আমাদের সমাজে যেকোনো স্থানেই সমস্যা বিদ্যমান। এখন এই ক্ষেত্রে ২টি বিষয় আসে। আমরা কি সেই সমস্যাগুলো নির্ধারন করতে পারছি বা সেটা নির্ধারনের পর আমরা কি বসে থাকছি না সেটা নিরসনের উপায় খুজছি। যদি উপায় খুজে বের করতে সক্ষম হই তাহলে সেটা ব্যবহার করে সমাধান করতে পারছি কিনা। এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর প্রত্যেক চাকুরীদাতা তার চাকুরী প্রার্থীর কাছ থেকে এই দক্ষতাটি অনেক বেশি আশা করে থাকে।
  •  টিম ওয়ার্কঃ  টিম ওয়ার্ক জিনিসটি কর্মক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। কারন কর্মক্ষেত্রে টিম ওয়ার্ক অনেক বেশি প্রাকটিস করা হয়। একার পক্ষে কোনো কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিষ্ঠানে অনেকে মিলে একসাথে গ্রুপে বা দলে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে একটি বড় কাজ দলের সকল সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে কাজের পরিধি ছোট করা হয়। যাতে অতি সহজেই কাজ শেষ করা যায়। এখন সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তির টিম ওয়ার্ক স্কিলস না থাকে তাহলে সে কাজ করতে পারবেনা। অর্থাৎ তখন প্রতিষ্ঠানের কাজ পরে থাকবে। তাই টিম ওয়ার্ক স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • এথিকাল স্কিল বা নীতিঃ একটা বিষয় প্রায়ই দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা সামান্য স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অন্যের কোন মতামত বা নতুন কোনো বিজনেস  প্রোপোজাল বা আইডিয়া তার বসের কাছে নিজের বলে চালিয়ে দেয়। কিন্তু এই বিষয়টি এথিকাল বা নীতির বাইরে পরে। আর তাই এথিকাল স্কিল অনেক প্রয়োজনীয় একজন ব্যক্তির জন্যে।
  • ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলসঃ ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলস একজন ব্যক্তির জ্ন্যে অনেক গুরুত্বপুর্ণ। ধরা যাক কোনো ব্যক্তি নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছে। সে ক্ষেত্রে তাকে তার প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বার্থে যে ফাংশনাল দক্ষতাগুলো প্রয়োজন তা অর্জন করতে হবে। সেটা যদি নতুন কোন কর্মদক্ষতা হয় সেটাও। এখন ব্যাপার হল সেই ব্যক্তি কি সেই দক্ষতাগুলো খুজে বের করতে পারছেন বা অন্যের কাছ থেকে সেই দক্ষতাগুলো শিখে নিতে পারছেন এবং সে কি সবসময় শেখার মানসিকতা নিয়ে আছেন কিনা।
  • লিডারশীপ স্কিলঃ  লিডারশীপ স্কিলস একটি প্রতিষ্ঠানের জন্যে অনেক বেশী প্রয়োজনীয়। একজন কর্মীর মাঝে লিডারশীপ স্কিলস থাকাটা অনেক গুরুত্বকপূর্ণ। এক্ষেত্রে সে কর্মী তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের কোচও হতে পারেন বা সে তার দক্ষতাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন, কোনো বিষয়ে আলোচনা বা মোটিভেট করতে পারছে কিনা এ সবকিছুই হচ্ছে লিডারশীপ স্কিলস।
  • ইনিশিয়েটিভ স্কিল বা উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতাঃ আজকাল উদ্যোগ গ্রহন ক্ষমতা খুবই প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা। প্রায়ই  অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় কিছু লোক নিজে কাজের উদ্যোগ নেয় আবার অনেকে আছে উর্ধতন কর্মকর্তার আদেশের জন্যে বসে থাকে। এই জিনিষটা অনেক উর্ধতন কর্মকর্তাকে বিরক্ত করে তোলে। তারা আশা করেন তাদের অধীনে যারা কাজ করছেন তারা প্রত্যেকেই যেন নিজে কোনো বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে। আর তাই উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতা থাকাটা প্রত্যেকের জন্যে আবশ্যক।
  • ট্যেকনলজিকাল স্কিলঃ বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সমাজের যেকোনো ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাই সভ্যতার সাথে সাথে আমাদের উচিত এই তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানা এবং করা।
  • বিশেষ করে মাইক্রোসফ্ট এক্সেল, ওয়ার্ড এবং পাওয়ার পয়েন্টের ব্যবহার
    • গুগলের বিভিন্ন ফ্রি টুলসের সঠিক ব্যবহার এবং যথাযথভা্বে যেকোন তথ্যের সন্ধান গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সহজে বের করা

পরিশেষে বলতে হয় কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের বিষয় যা কাজের মাধ্যমে প্রকটিত হয়। বই পড়ে জ্ঞান বৃদ্বি সম্ভব কিন্তু কাজ না করে দক্ষতা অর্জন কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর তাই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সঠিক সময় বেছে নেওয়া উচিত ছাত্রবস্থায়।  আর আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে ”অণুশীলনেই সফলতা”

ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=9xYByg4EqKg

7F9A7856

ক্যারিয়ার চিন্তা কখন?

পড়াশুনা শেষ করে তারপর হয় চাকরি না হয় ব্যবসা, এই রকম চিন্তাধারা থেকে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বের হয়ে আসতে হবে। বেশ কিছুদিন আগে আমি ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করেছিলাম যেখানে আমি দেখাবার চেষ্টা করেছি কিভাবে ক্যারিয়ার প্ল্যান করে শিক্ষাজীবনকে পরিচালিত করা যায়। আমার এবারে লেখা আমার তৈরি করা সেই মাইন্ড ম্যাপকে নিয়ে।

পড়াশুনা শেষ করে তারপর হয় চাকরি না হয় ব্যবসা, এই রকম চিন্তাধারা থেকে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বের হয়ে আসতে হবে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য তার শিক্ষা জীবন হচ্ছে অত্যন্ত মুল্যবান। পলিটেকনিক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বছরে, একজন শিক্ষার্থী তার জীবন গড়ার জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারে, যা চায় তাই পেতে পারে, যাকে প্রয়োজন তার কাছেই পৌছতে পারে। প্রত্যেক সফল ব্যাক্তিই তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্মঠ, বুদ্ধিমান এবং সৎ তরুনদের সান্নিধ্য কামনা করেন। তাদের মেধা এবং বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকেন। সেজন্য আমরা তরুন শিক্ষার্থীদের কদর এবং গুরুত্ব যুগযুগের ইতিহাস ঘাটলেই দেখতে পাই। কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তার এই শিক্ষা জীবনের গুরুত্বকে অনুধাবন করতে না পেরে অবহেলায় ৪/৬টি গুরুত্বপূর্ন বছর নষ্ট করে ফেলে। ছাত্রাবস্থায় কিভাবে নিজের কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করা যায় এবং ছাত্রজীবন শেষ করেই, ডিগ্রী পাওয়ার সাথে সাথেই কিভাবে চাকরি বাজারে প্রবেশ করা যায় তার ওপর আজকের এ লেখা । এখানে এমন সাতটি বিষয় আলোচনা করেছি, যেগুলো অনুশীলন করলে ছাত্র অবস্থায় নিজের কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতে পারবেন যে কোনো শিক্ষার্থী। এগুলো মেনে চললে ভবিষ্যতে থাকবে না কোনো হতাশা, সাফল্য তাকে ডাকবে হাতছানি দিয়ে, চিন্তা থাকবে না চাকরির বা ব্যবসার। ১. হার্ড স্কিলস:

যারা বিশ্ববিদ্যালয় বা পলিটেকনিকে পড়াশুনা করছেন, তাদের প্রত্যেকেরই ভাবনা যে, ‘চার বছর পরে আমি একজন গ্রাজুয়েট হবো বা একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হবো।’ এই পড়াশুনা অবস্থায় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, ভালো সিজিপিএ অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে যত কম সিজিপিএ, ততো বেশি পরিশ্রম এবং ভবিশ্যতে কষ্ট বা হতাশা আসতে পারে আপনার কর্মজীবনে। কিন্তু এ কথা বলা যাবে না যে, ভালো সিজিপিএ না পেলে একেবারেই কিছু হবে না। শুধু মাথায় রাখা প্রয়োজন, সিজিপিএ যতো ভালো হবে, আপনার অর্জনটা ততই এগিয়ে থাকবে। তাই চারটা বছর পরিশ্রম করুন, ভালো একটা সিজিপিএ অর্জনের জন্য।

১.১ কিভাবে ভালো সিজিপিএ অর্জন করবেন:

# নিয়মিত ক্লাশ করা এবং শিক্ষকদের লেকচার চোখ, কান ও মন দিয়ে শোনা এবং যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো সেটা কে স্মরণে রেখে প্রশ্ন করা,   শিক্ষকদের কাছ থেকে উত্তর বুঝে নেয়া এবং বাড়িতে গিয়ে গবেষনা করা।

# ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তাদের সাথেই করতে হবে যারা ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন এবং ভলো কাজের জন্য উদ্দ্যমী।

#লাইব্রেরী হতে হবে প্রিয় জায়গার মধ্যে একটি।

#গ্রুপ ভিত্তিক পড়াশুনা করতে হবে এবং যে বিষয়টি ভালো বুঝি সেটা আপনার বন্ধুদের বুঝাতে সাহায্য করতে হবে (Teach other to become Master) কনসেপ্ট।

২. টেকনিক্যাল স্কিলস বা কারিগরি দক্ষতা:

একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে কেউ যদি বলে যে, তার কারিগরি জ্ঞান নেই, তাহলে তিনি কিন্তু পিছিয়ে থাকবেন। কারন বিশেষজ্ঞরা জোড় দিয়ে বলার চেষ্টা করছেন ”বেকারত্ত্বের ভ্যাকসিন কারিগরি দক্ষতা”। সেজন্য প্রত্যেক গ্রাজুয়েটের এক হাতে থাকবে তার সনদ, অন্যদিকে থাকতে হবে টেকনিক্যাল স্কিলস বা কারিগরি দক্ষতা। এজন্য তার যেসব বিষয়ে দক্ষতা থাকা জরুরী-

প্রথমত, কম্পিউটার অফিস এপ্লিকেশনস তথা এমএস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট পুরোপুরি আয়ত্বে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, বেসিক আইটি দক্ষতা যেমন ইন্টারনেট এন্ড ইমেইল বিশেষ করে কিভাবে সহজে এবং দ্রুততার সাথে গুগলকে ব্যবহার করা যায়, জিমেইলের ফিচারগুলো কে পরিপূর্নভাবে ব্যবহার করা যায়।

তৃতীয়ত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুক, লিংকডইন, ইউটিউব ইত্যাদি কিভাবে কাজ করছে তার জ্ঞান অবশ্যই তাকে রাখতে হবে, বিশেষ করে বর্তমানে এফ-কমার্সে বা ই-কমার্সের যুগে এই বিষয়ে ধারনা কম থাকলে চলবে না ।

চতুর্থ বেসিক ডিজাইনিং দক্ষতা বিশেষ করে ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটরের মতো বেসিক এডিটিং এর কাজগুলো অবশ্যই আয়ত্বে রাখতে হবে। এছাড়াও বেসিক এডিটিং স্কিলস যেমন ভিডিও এডিটিং, বেসিক এ্যানিমেশন এই প্রাথমিক দক্ষতাগুলো আত্মবিশ্বাসকে অনেকগুনে বাড়িয়ে দেবে।

৩. সফট স্কিলস:

মানুষের জীবন টিকে আছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে যোগাযোগের ওপর ভিত্তি করে। মানুষকে প্রতিনিয়তই যোগাযোগের ওপর থাকতে হয়, আদান-প্রদান করতে হয় তথ্যের। এই তথ্যের আদান-প্রদানে যদি ভুল হয়ে যায় তাহলে নিজের নির্ধারন করা লক্ষ্যে পৌঁছানো দুরূহ হয়ে পড়ে। সেজন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। লেখা, পড়া, কথা বলা, অন্যকে কনভিন্স করা, অন্যকে বোঝাতে পারা, রিস্ক নেয়া, সঠিকভাবে চিন্তা করা প্রভৃতি বিষয়গুলোই হলো সফট স্কিলস। এগুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে চাকরির বাজার কিংবা উদ্যোক্তাদের জগতে বেশী দূর আগানো সম্ভব হবে না। তাই সফট স্কিলস শক্তিশালী করতে প্রচুর চর্চা করতে হবে, এবং সেটা ছাত্রাবস্থাতেই।

৪. ল্যাংগুয়েজ স্কিলস বা ভাষাগত দক্ষতা:

আমরা অন্যের কাছে তথ্য পৌঁছাই ভাষার মাধ্যমে। নিজের অভিব্যক্তি, চাওয়া-পাওয়া অন্যের কাছে প্রকাশ করি এই ভাষার মাধ্যমেই। শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার প্রতি তো অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আঞ্চলিকতা ছাড়া শুদ্ধ প্রমিত বাংলা চর্চার পাশাপাশি অন্য একটি ভাষার ওপর ভালো দক্ষতা রাখতে হবে। এটি হতে পারে চাইনিজ, জার্মান, ইংলিশ বা অন্য কিছু। অন্য আরেকটি ভাষা আয়ত্বে রাখলে, যারা শুধু একটি ভাষায় দক্ষ তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকা যাবে। যে যতো বেশি ভাষায় দক্ষতা রাখবে, সে ততো এগিয়ে থাকবে।

৫. ওপেন টু লার্ন এপ্রোচ:

বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবকিছুই রয়েছে হাতের ছোট্ট একটি ডিভাইসে। এক ক্লিকেই চলে যাওয়া যাচ্ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। এখন বিভিন্ন জায়গায় ফ্রী বা অল্প খরচে ওয়ার্কশপ, সেমিনার, বুট ক্যাম্প, ফেস্টিভ্যাল, কনফারেন্স, সিম্পোজিয়াম হচ্ছে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে সেগুলো দেখতে পাচ্ছি, বা নোটিফিকেশন পাচ্ছি কিন্তু আমি কখনো সেগুলোতে অংশগ্রহণ করছি না। এটা আমাকে পিছিয়ে রাখছে অন্যদের থেকে। ওপেন টু লার্ন এপ্রোচ হচ্ছে এটাই। মনে রাখতে হবে নিজের নলেজ ব্যাংক যতো সমৃদ্ধ হবে, সুযোগের সংখ্যা ততো বৃদ্ধি পাবে কারন প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনেই অনেক সুযোগের হাতছানী থাকে কিন্তু জ্ঞান, দক্ষতার এবং সঠিক আচরনের অভাবে সেগুলো আমরা ছুয়ে দেখবারও সাহস করতে পারি না। কবর থেকে দোলনা পর্যন্তু আমাদের শেথার সময় তার মধ্যে শিক্ষা জীবনের ১০/১২টি বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।

৬. একজন মেন্টর খুজে নেয়া:

‘ফাইন্ড এ মেন্টর’ ধারণাটি অনেক পুরনো। এক্সপার্ট কাউকে মেন্টর হিসেবে বেছে নিতে হবে যার কাছে সে যেকোনও বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারবে। যোগাযোগের এ যুগে সেরকম কাউকে খুঁজে বের করা কঠিন কিছু না। সাফল্য পেতে হলে এরকম আদর্শ কাউকে খুঁজে নেয়া দরকার। হয়তো একদিনেই এরকম কাউকে পাওয়া যাবে না, কিন্তু চেষ্টা করলে পাওয়া সম্ভব। তার পরামর্শ, নেটওয়ার্ক, অভিজ্ঞতা, সাহায্য আপনাকে অনন্য এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।

৭. অভিজ্ঞতা:

আমাদের অনেকের মনে হয়, আমি তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি, আমিতো কোনো চাকরি বা কাজ করিনি। আমি অভিজ্ঞতা কোথা থেকে পাবো? কিন্তু একজন মানুষ চাইলে তার শিক্ষাজীবনে অসংখ্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। যেমন: বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সংগঠন ও ক্লাব থাকে। সেখানে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ইভেন্ট হচ্ছে। সেখানে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে তাদের সাথে কাজ করে অসাধারণ অভিজ্ঞতার পাশাপাশি অর্জন করা যাবে প্রশংসাপত্র। পড়াশুনা চলাকালীন অনেক সংগঠন পার্ট-টাইম, ফুল-টাইম বা চুক্তিভিত্তিক কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে, সেখান থেকেই অর্জিত হতে পারে দারুণ সব অভিজ্ঞতা।

ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Practice Makes Perfect- অনুশীলনে সবই সম্ভব”। উপরোক্ত সাতটি বিষয় যদি কোনো শিক্ষার্থী ছাত্রাবস্থায় অর্জন করতে পারে পর্যাপ্ত অণুশীলনের মাধ্যমে, তবে নিশ্চিত করেই বলা যায় তার পরবর্তী জীবনে সফলতা হাতছানি দিয়ে ডাকবে, তাকে চিন্তা করতে হবে না কাজ নিয়ে।

এই বিষয়ে ভিডিওর মাধ্যমে জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন Start ______________________________________________________________________________________________________ লেখকঃ কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

PMnew

তিনি অন্যরকম একজন

দুর থেকে আমরা যারা তাকে দেখেছি, তখন মনে হয় অসম্ভব বিচক্ষণ একজন নারী। খুব কাছ থেকে যাদের দেখার সুযোগ হয়েছে তাদের কাছে তিনি সদা হাস্যজ্বল ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মহীয়সী নারী নেতৃত্বের উদাহরণ। পরিবারের সদস্য বিশেষ করে ছেলেমেয়ের কাছে অত্যন্ত মমতাময়ী মা আবার সাধারন মানুষের কাছে ভরসার স্থল। অনেকেই ভাবেন হয়তো যেকোন সমস্যার সর্বশেষ সমাধান সৃষ্টিকর্তা উনার মাধ্যমেই দেবেন। উপরের প্রত্যেকটি বিশেষণ যার জন্য প্রযোজ্য তিনি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনা।

প্রায়শই একটা বিষয় লক্ষ্য করি আমরা আমাদের তরুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গুনাগুন এবং তাদের সাফল্যের বিবরণ তুলে ধরি। উদ্দেশ্য একটাই তাদের সামনে অনুসরণ করার মতো একজন ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরা যাতে তরুণরা তাদের মতো করে নিজেদের গড়তে পারে, তাদের সাফল্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় বা পরিচালিত হতে পারে। মূল কথা মানুষ তার স্বপ্ন দ্বারা পরিচালিত হয় সবচেয়ে বেশী, আর সেই স্বপ্নের অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব যদি হয় নিজ দেশের তাহলে তার প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশী। ভাবতে ভীষণ গর্ব হয় যে আমাদের দেশের তরুন সমাজকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এখন আর বহির্বিশ্বের উদাহরণের প্রয়োজন নেই কারন আমাদের বাংলাদেশেও আছে অনুপ্রেরণা পাওয়ার মতো নেতৃত্ব। একজন আদর্শ ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে বড় গুণাবলী হলো যেকোন সৃষ্টিশীল কাজের জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা। গত ১০ বছরে আমরা দেখেছি যে কাজ গুলো আমাদের অনেকের মতেই ছিল অসম্ভব, তিনি সেই চ্যালেঞ্জগুলো ভীষণ দৃঢ়তার সাথে শক্ত হাতে গ্রহণ করেছেন। কোন বাধাই তাকে বিচলিত করেনি বরং এতোটাই দৃঢ় এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে এর আগে কখনো কাউকে দেখা যায়নি। বেশ কিছু প্রমান আমাদের সামনেই রয়েছে।

একজন আদর্শ নেতা নুতন নেতৃত্ব তৈরী করেন। আমরা বিগত কয়েক বছরে এর উপর্যুপুরি প্রমান পেয়েছি। আমরা প্রায়শই শুনি এদেশটাকে বদলাতে হলে সবার আগে তরুণ প্রজন্মকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। তাদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোতে বেশ কিছু নতুন তরুণ নেতৃত্ব দেশকে উপহার দিয়েছেন তার প্রমান আমাদের সকলের সামনেই দৃশ্যমান। পাশাপাশি প্রবীণদের নিয়েও তিনি একই সাথে কাজ করে যাচ্ছেন যাতে করে নতুন সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়। নবীন এবং প্রবীণদের অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানের আলোকে। একজন আদর্শ নেতৃত্বের আরো একটি বড় গুণাবলী হলো সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গী। আচ্ছা এর আগে এমন কি কখনো হয়েছে আজ থেকে ১০০ বছরের সামনের বাংলাদেশকে কেউ দেখার চেষ্টা করেছে অথবা দেখেছে? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে পুরো বাংলাদেশ এখন জননেত্রীর উন্নয়নের নকশা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর আগে আমরা যা বইতে পড়েছি, আধুনিক চীন বা মালয়েশিয়ার কথা জেনেছি তা এখন আমাদের দেশেই দৃশ্যমান এবং এটাই বাস্তবতা।

ভালো কাজের স্বীকৃতি মানুষকে আরো ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগায়। তার কাজের গতিকে আরো বাড়িয়ে দেয়। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা কাজে প্রমান করেছেন। তিনি যোগ্য ব্যক্তিদের যেমন গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে নিয়ে এসেছেন আবার অযোগ্যব্যক্তি সে যতো ক্ষমতাশালীই হোক না কেন তাকে দেশের স্বার্থে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন এবং এর একাধিক দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি। একজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব সবসময় নমনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার কাছে খুব সহজেই যাওয়া যায় এবং নিজের কথাগুলো অনায়সে বলা যায়। রাষ্ট্রের স্বার্থে কখনো হয়তো তিনি কঠিন হয়েছেন আবার ঐ একই কারনে পরম মমতায় কাছে টেনে নিয়েছেন। দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব হওয়া সত্ত্বেও অনায়াসে স্বীকার করেছেন উনি এখনও শিখছেন। তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে নিজের সন্তানের কাছে দিনের পর দিন শিখেছেন, বুঝতে চেয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধাগুলো। তিনি প্রমান করেছেন একজন সফল নেতৃত্বকে সাফল্য পেতে গেলে অবশ্যই শিখবার মনমানসিকতা নিয়ে চলতে হবে।

একজন সফল নেতৃত্ব সবসময় তার দলকে সাথে নিয়ে দলগতভাবে কাজ করেন। আমরা যদি পুরো বাংলাদেশকে এ মুহুর্তে চিন্তা করি তাহলে খুব সহজেই বোঝা যাবে যে পুরো বাংলাদেশই যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো কাজ করে যাচ্ছে। বসে থাকার উপায় নেই। পুরোদমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। স্বপ্নটা অনেক বড় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তাই প্রস্তুতির পর্বটাও বেশ জোড়ালো। বিভিন্ন কাজের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করেছেন প্রবীণ এবং নবীনদের সমন্বয়ে গড়া তার দল যারা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। ভালো যিনি করছেন তিনি যেমন স্বীকৃতি পাচ্ছেন আবার কিছুক্ষেত্রে নিজেই আবার দায়িত্ব নিয়েছেন এগিয়ে যাবার সংকল্পে।

স্বপ্নবাজ বা আবেগ ছাড়া যেকোন বড় কিছু অর্জন করা অনেকটা অসম্ভব। বাংলাদেশ এ সময়ে অসম্ভব স্বপ্নবাজ এবং আবেগময় একজন নেতৃত্বের অধিনে পরিচালিত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন যেমন আকাশসম তেমনি আবেগের বিষয়টিও একইভাবে লক্ষ্যনীয়। তবে আকাশসম স্বপ্নের পদ্মাসেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বাস্তবে রুপান্তরের জন্য একদিকে যেমন স্বপ্ন এবং আবেগদ্বারা তাড়িত হয়েছেন ঠিক একইভাবে গভীর দৃঢ়তার সাথে একাগ্রচিত্তে কাজ করেছেন তার স্বপ্নপূরনের প্রয়াসে। আদর্শ নেতৃত্বের এতো উজ্জল উদাহরণ বাংলাদেশ আগে কথনো দেখেনি। ব্যর্থ হবো বলে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করা থেকে কখনো বিরত হননি।

এখন তরুন প্রজন্মের সময় এসেছে নিজেদের নিয়ে ভাব্বার। সদিচ্ছা, সৎমানসিকতা, কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় আর একাগ্রতা থাকলে সৃষ্টিকর্তাও সহায় হন। আমাদের তরুন প্রজন্মের সামনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন সফল নেতৃত্বের সবচেয়ে উজ্জল উদাহরণ। আমরা অনেকেই বলি অনেক কিছু শেখার আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে কিন্তু আমরা ধারন করি কজন? যেদেশে সফল নেতৃত্বের এতো বড় উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে সেদেশের তরুন সমাজ তো কখনো পথভ্রষ্ট হতে পারেনা। অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং সদালাপী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকের কাছে বিশাল বিস্ময়। ভীষন ইতিবাচক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষটি ইতোমধ্যেই তার বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্টের কারনে বিশ্বের ১০০ জন বিশিষ্ঠ ব্যক্তির তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন।বাংলাদেশ কি কখনও ভেবেছে যে এমন একটা সময় আসবে যখন অন্যেরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আমাদের বলবে

বাংলাদেশ তোমরা পেরেছো!