Illustration Lion Blog Banner (3)

ইংরেজী ভাষা শিখতে, নিজেই নিজেকে নিয়োগ করুন!

আমরা সবাই নিজেদের দক্ষতা বিকাশ করতে চাই। সারাদিন ফেসবুক, ইউটিউভ বা গুগল ঘেটে আমরা অনুপ্রানিত হয়ে সীদ্ধান্ত নেই যে অনেক হয়েছে এবার দক্ষতা বিকাশের পালা। শুরু হয় ভিডিও দেখা। আর মাশাআল্লাহ ফেসবুক, ইউটিউভে ভিডিওর অভাব নেই। কখনো এই ভিডিও কখনো বা সেই ভিডিও। আবার অনলাইন লার্নিং পোর্টাল তো আছেই। আমি একটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সার্ভে করেছিলাম যেখানে আমি কয়েকটি প্রশ্ন রেখেছিলাম তরুনদের কাছেঃ

  1. আপনি কোর্স শুরু করেছেন কিন্তু শেষ করেন নি? (হ্যা অথবা না)
  2. আপনি কোর্স শুরু করেছেন কোন লক্ষ্য নির্ধারন না করেই? (হ্যা অথবা না)
  3. আপনি কোর্স সম্পন্ন করেছেন কিন্তু কোন রুপান্তর হয়নি? (হ্যা অথবা না)

অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে “না”র সংখ্যা বেশী আসছে কেন? লক্ষ্য ছাড়া কোন কিছুই করা মানে হলো কোন কাজে না আসা। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়। আমি ইংরেজী ভাষা শিখতে ও কাজে লাগাতে চাই। এখন আপনাকে SMART প্ল্যান করতে হবে।

তাহলে আসুন আমরা এই লক্ষ্যটাকে ভেঙে ফেলি।

  • আমার লক্ষ্যঃ আমি ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে চাই
  • কেনঃ আমি যেহেতু মার্কেটিংয়ে কাজ করবো তাই ইংরেজী ভাষা আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
  • কারনঃ অধিকাংশ সময় আমাকে বাইরের দেশের সাথে কথা বলতে হয়, বিভিন্ন জায়গায় প্রেজেন্টেশন দিতে হয় এবং সেখানে ইংরেজী ভাষাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়।
  • কতদিন সময় দেবেন নিজেকে: এটি তিন মাসের (৯০ দিন) জন্য নিজেকে রুপান্তরের একটি কার্যক্রম হবে।
  • কি কি দক্ষতা অর্জন করতে চান?: ইংরেজীতে কথা বলতে চাই, পড়তে চাই, শুনে বুঝতে চাই

আমার ইংরেজী ভাষা শিক্ষার এই লক্ষ্যকে কিভাবে ভাগ করবো?

 পড়ার ক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস):

  • আমি প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ৩০ দিন বিভিন্ন ইংরেজী সংবাদপত্র/বই/নিবন্ধ/ব্লগ পড়ব।
  • আমি অক্সফোর্ড অ্যাডভান্সড লার্নার্স অভিধান থেকে নতুন শব্দের অর্থ খুঁজে বের করব এবং সেগুলি একটি ডায়েরিতে নোট করব।

শ্রবণ ক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস)

  • আমি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ৩০ দিন বিবিসি / সিএনএন / অন্যান্য ইংরেজি নিউজ চ্যানেল ইত্যাদি চোখ, কান এবং মন দিয়ে শুনব।
  • আমি গুগল / ইউটিউব ব্যবহার করে নতুন শব্দের উচ্চারণ খুঁজে বের করব।

স্পিকিং সক্ষমতা বাড়ানো (টার্গেট এক মাস)

  • যতটুকু সম্ভব আমি ইংরেজিতে কথা বলবো; এবং পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের সাথে কথা বলার সময় যতটা পারি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করব। লক্ষ্য তিন মাস অনুশীলনটি চর্চা করা।

নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি এবং মেন্টরশিপ সন্ধান করা (টার্গেট তিন মাস)

  • আমি অনুশীলনের জন্য একটি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবে যোগদান করব।
  • আমি পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞ এবং পরামর্শদাতাদের অনুরোধ করব।
  • আমি দরকার হলে কোন সনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে এক মাসব্যাপী ইংরেজী ভাষার উপর একটি কোর্স সম্পূর্ন করব (যদি প্রয়োজন হয়)
  • আমি GoEdu.ac, লিংকডইন, গুগল গ্যারেজ ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মগুলি ভিজিট করে অন্তত ১০ টি অনলাইন কোর্সে যোগদান এবং সম্পূর্ণ করব

নীচের ছকটি অনুসরণ করুনঃ

আপনাদের জন্য বিশেষ এই ছকটি তৈরি করেছি 

শেষ কথা

উপরের যে পরিকল্পনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম সেটা কিন্তু শুধুমাত্র নিজেকে রুপান্তরের নিমিত্তে করা হয়েছে। লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা ছাড়া হাজার হাজার কোর্স করেও রুপান্তরের দেখা পাওয়া যাবে না। আমি যে ছকটি আকবার চেষ্টা করেছি সেটি আপনারা আপনাদের মতো করে আকবার চেষ্টা করুন। তবে মনে রাখবেন জ্ঞান, দক্ষতা এবং আচরন তখনই প্রয়োজনে আসবে যদি তা আপনার লক্ষ্যে সাথে সামঞ্জস্য হয়।

অনুশীলনে সবই সম্ভব | Practice makes everything perfect


লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

rtwretwret

অপরিচিত কারো সাথে কথোপকথনে কীভাবে অংশ নেব?

আমি প্রচুর মানুষের সাথে কথা বলি। যারা পরিচিত তাদের সাথে বলি আবার যারা অপরিচিত তাদের সাথে আরো বেশী বলি।  সরাসরি কথা বলি, মোবাইলের মাধ্যমে বলি, ওয়াটসএ্যাপ, বা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারতো আছেই। আমি যেহেতু প্রচুর ভ্রমন করি, দেশের ভেতরে বা দেশের বাইরে সেজন্য ভ্রমনের সময় আমার এই কথোপকথনের কাজটি বেশী হয়। আরো ভালো লাগে যখন রিকশা, সিএসজি, উবারে উঠি তখন চালকের সাথে গল্প করা। অনেক কিছু শেখা যায় যা লিখে বোঝানো যাবে না। যখন কোন কর্পোরেট ডিনারে বা অনুষ্ঠানে যাবার সুযোগ হয় তখন খুঁজে খুঁজে বের করি কাদের সাথে এখনও আমার পরিচয় হয়নি। তাদের কাছে গিয়ে কথোপকথন শুরু করে দেই। কারন প্রতিটি মানুষের একটি করে গল্প আছে যা কথোপকথনের মাধ্যমে জানা যায় এবং সেখান থেকে নতুন নতুন ধারানা তৈরি করা যায়।

মানুষের জীবন পুরোটাই যোগাযোগ নির্ভর। ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমাতে যাবার আগ পর্যন্তু আমাদের যোগাযোগ করতে হয়। বিভিন্ন উপায়ে আমরা যোগযোগ রক্ষা করি। আসলে যোগযোগ এমনই একটি বিষয় যা একজনকে সমৃদ্ধ করে তোলে। যোগাযোগের কথা উঠলেই আমরা মনে করি কর্মক্ষেত্রে আমার যোগাযোগ কেমন হবে? অফিসে বা নিজের ব্যবসায় আমি কিভাবে যোগাযোগ করবো? আসলে ব্যাপারটি পুরোপুরি সেটা নয়। যোগাযোগ সর্বত্র। নিজের ব্যক্তি জীবনের উন্নয়নের জন্য, মানসিকতা বিকাশের জন্য, মানুষের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এবং কর্মক্ষেত্রে শীর্ষ পারফরমারের তকমা লাগাবার জন্য বা ব্যবসায় উন্নতি সাধনের জন্য গুনগত যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমের মাঝে  কথোপকথন অত্যন্ত মূল্যবান। মনে রাখতে হবে  কথোপকথন কয়েক ধরনের মানুষের সাথে সাধারনত হয়ে থাকতে পারে

  • আপনি চেনেন এমন মানুষ
  • আপনি চেনেন না এমন মানুষ

যাদেরকে জানেন বা চেনেন এমন মানুষের সাথেই আমরা  কথোপকথন চালিয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি। ধরুন আপনি একটি কর্পোরেট ডিনারের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। আপনি আপনার একজন কলিগের সাথে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। আপনারা দুজনই অনুষ্ঠানের এককোনায় দাড়িয়ে আছেন এবং নিজেদের মধ্যেই অফিসের কর্মব্যস্ত দিন নিয়ে আলোচনা করলেন এবং ডিনার শেষ করে বাড়ি ফিরে এলেন। অথবা আপনি একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহনের সুযোগ পেলেন এবং আপনার এক বন্ধুর সাথে গেলেন। আপনারা দুজনই বেছে নিলেন একদম কোনায় অবস্থিত দুটি চেয়ার এবং যথারিতী বসে পুরো সেশনে অংশ নিয়ে বাড়ি চলে এলেন। অথচ আপনার ডান-বামে বা চারপাশে এমন অনেক মানুষ ছিলেন যাদের সাথে আপনি হাত মেলাতে পারতেন এবং পরবর্তিতে তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারতেন। আবার এমন চিত্রই বেশী দেখা যায় যে কাছে এসে মোবাইল ফোনটি বের করে হাসি দিয়ে বললেন একটা সেলফি তুলি? যাকে বললেন তিনিও হাসি দিয়ে সেলফিতে অংশ নিয়েই শেষ। যদিও প্রথম দুই ব্যক্তির তুলনায় তৃতীয় ব্যক্তি কিছুটা এগিয়ে কারন বাড়ি ফিরে তিনি যখন ছবিটি ফেসবুকে বা লিংকডইনে আপলোড করবেন চমৎকার একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তখন ফেসবুক সেই ব্যক্তিকে এআই (AI) ব্যবহারের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে যে কেউ তার ছবি ফেসবুকে যুক্ত করেছে। যদি স্ট্যাটাসটি পছন্দ হয় তাহলে তিনি তার প্রোফাইলে ঢ়ুকে দেখবার চেষ্টা করবেন। এখানে একটা লীড তৈরি হবার আশা থাকে। কিন্তু যিনি কথাও বললেন না, ছবিও তুললেন না, তার জন্য ঐ দু-ঘন্টা বিনিয়োগের ফল কি হলো? কিন্তু বিষয়টি অন্যরকম হতে পারতো!




অনুষ্ঠানে বা কনফারেন্সে যাবার আগে যদি একটু হোম ওয়ার্ক করে নেয়া যায় যেমনঃ

  • খুজে বের করা আপনি কেন সেখানে আছেন বা কেন সেখানে যাচ্ছেন?
  • ঐ অনুষ্ঠানে কারা আসছেন, তাদের নিয়ে হালকা একটু গবেষনা করা।
  • অতিথীদের মধ্যে কারা আছেন যারা আপনার কাজের ক্ষেত্রের সাথে সংযুক্ত এবং তাদের বর্তমান প্রকল্প নিয়ে একটা ধারনা নেয়া।
  • অতিথীদের ফেসবুক বা লিংকডইনের প্রোফাইলটা একটু ব্রাউজ করে যেনে নেয়া কোন ধরনের কাজের সাথে তারা এই মুহুর্তে ব্যস্ত। এটি অবশ্য অনুষ্ঠানে থেকেও করা সম্ভব যদি আগে থেকে অতিথীদের তথ্য পাওয়া না যায়।
  • আসলে পুরো বিষয়টিকে গেম প্ল্যানের সাথে তুলনা করা যায়। গেম প্ল্যান যেমন একটি দল বা একজন খেলোয়াড়ের জন্য বুঝে নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন তেমনি একজন প্রফেশনাল বা গ্রাজুয়েটের জন্য তার নিজের গেম প্ল্যান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তাহলেই সময় বিনিয়োগের ভালো ফল আশা করা যায়।

একটি বিষয় আমাদের সবসময় স্মরন রাখতে হবে যে প্রত্যেক অপরিচিত মানুষ আপনাকে নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। অতএব তার সফলতা অনেক বেশী হয়ে থাকে যিনি অপরিচিত মানুষকে পরিচিত মানুষে রুপান্তর করতে পারেন। অপরিচিত মানুষকে পরিচিত করে তুলবার প্রথম ধাপ হচ্ছে  কথোপকথন।

কথোপকথনের অনেক সুবিধা রয়েছেঃ

  • যেকোন মানুষের সাথে কথোপকথন আপনাকে সম্পূর্ন নতুন একটি ধারনা বা প্রেক্ষপট তৈরিতে সাহায্য করে।
  • যেকোন মানুষের সাথে কথোপকথন আপনাকে একটি নতুন সুযোগের দরজা খুলতে সহায়তা করে
  • আপনাকে নতুনকে সনাক্ত করতে সহায়তা করে
  • আপনার জন্য নতুন লিঙ্ক তৈরি করে দেয় এবং নিজেকে সেই লিংকের সাথে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করে।
  • জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে।
  • দক্ষতা তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে।
  • ইতিবাচক মানসিকতা অর্জনে ভূমিকা রাখে।

ধরুন আপনি কোনও অনুষ্ঠানে রয়েছেন এবং আপনি দেখছেন যে আপনি অনুষ্ঠানের আয়োজক ছাড়া কাউকেই চেনেন না কিন্তু একটি ছোট্ট আলোচনা দিয়ে আপনি অনেক কিছুই অর্জন করতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে  কথোপকথনে বলা এবং শোনার মাঝে একধরনের ব্যালেন্স রাখাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং এই বিষয়ে প্রায় সকলেই একমত হয়েছেন যে কথোপকথনে বলার চেয়ে শুনবার মানসিকতাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। গৌতম বুদ্ধের একটি চমৎকার উক্তি রয়েছে ”আপনার মুখ খোলা থাকলে বুঝবেন কিছুই আপনি শিখছেন না”। তার মানে জানবার মানসিকতা নিয়ে কথোপকথনে অংশ নিতে হবে।

দুর্দান্ত কথোপকথনের জন্য কয়েকটি টিপস

দুর্দান্ত যোগাযোগকারী সবসময় একধরনের বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন সর্বক্ষেত্রে এবং তিনি অত্যন্ত সচেতন থাকেন তার এই দক্ষতার ব্যপারে। তারা জানেন কিভাবে একটি দুর্দান্ত কথোপকথন চালিয়ে নেয়া যায়। অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ন দক্ষতা যা সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।

  • আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে একটি ইংরেজী বাক্য “I am excited”. কোন একটি কাজ করবার আগে আমাদের ভালো করে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে আমি যে কাজাট করতে যাচ্ছি তার জন্য আমার ভেতরে কোন উত্তেজনা কাজ করছে কিনা? যদি উত্তেজনা অনুভাব করা যায় তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনি সফলভাবে কাজটি শেষ করতে পারবেন। আর যদি না হয় তাহলে হাজার চেষ্টা করেও আপনি কোন সমাধান বের করতে পারবেন না। বের করতে পারবেন শুধু অজুহাত। কোন অপরিচিত মানুষের সাথে কথোপকথনের প্রধান শর্ত হলো নিজ থেকে মনে মনে বার বার বলতে থাকা “Yes I am Excited”.
  • সঠিকভাবে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন হলো শর্ত হলো বডি ল্যাংগুয়েজের উপর নজর রাখা বিশেষ করে “Nonverbal Skills” । আপনার সত্যিকারের মন থেকে একটি হাসি, ইতিবাচক অঙ্গভঙ্গি এবং আবেগ দিয়ে শ্রবন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কথোপকথনের সময় আপনার অভিব্যক্তিগুলোর (Expressions) উপর সর্বদা সচেতন থাকবেন। কোন একটি আলোচনায় অতি সাধারন কিন্তু মূল্যবান আপনার ভুরুর (Eyebrow) সঠিক ব্যবহারও কিন্তু আপনাকে একধাপ এগিয়ে নিতে পারে।
  • মাল্টিটাস্কিং করবেন না। কথোপকথনের সময় আমরা নিজের অজান্তেই একাধিক কাজের সাথে যুক্ত থাকি যেটা মোটেও ইতিবাচক নয়। মোবাইল নিয়ে খেলা করা, চাবির রিং ঘোড়ানো, এখানে এবং সেখানে দেখা, হাত গুটিয়ে পকেটের ভেতর রেখে দেয়া ইত্যাদি পরিহার অত্যন্ত জরুরী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কথোপকথনে মনোনিবেশ (Concentration) করা এবং মননশীলতা (mindfulness) নিশ্চিত করা।
  • ভালো করে দেখে নেন আপনার ভেতর ”আমিও” (me too) লক্ষণ আছে কিনা। ধরুন কেউ একজন তার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অভিজ্ঞতার কথা আপনার সাথে শেয়ার করছেন। তার কথা শেষ হবার সাথে সাথেই আপনিও বলে উঠলেন আমারও এরকম একটি অভিজ্ঞতা আছে এবং বলা শুরু করে দিলেন। এটি দুর্দান্ত কথোপকথনের জন্য একটি বড় বাধা।
  • অনেকে বিশেষজ্ঞ হয়ে বিরোধী মন্তব্য তৎক্ষনাত দেবার চেষ্ট করেন, এটি আরেকটি বাধা দুর্দান্ত কথোপকথনের। প্রত্যেকেরই বিভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে। সুতরাং আমাদের নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হবে, তাত্ক্ষণিকভাবে বিরোধীতা করা উচিত নয়। আপনার যদি ভিন্ন মতামত থাকে তাহলে বাড়ি ফিরে ঐ বিষয়ে ব্লগ লিখে নিজস্ব ব্লগ সাইটে পাবলিশ করে দিতে পারেন। তবে কোনভাবেই কথোপকথনের সময় তর্কে যাওয়া ঠিক নয়। যদি বন্ধুদের আড্ডা হয় বা অতি পরিচিত কেউ হয় সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।
  • কথোপকথনে যাবার আগে এই মানসিকতা তৈরি করুন যে আপনি কিছুই জানেন না। তাহলেই আপনি অনেক কিছেই জানতে পারবেন। সক্রেটিসের একটি দারুন উদ্ধৃতি রয়েছে ”আমি জানি যে অনেক কিছুই আমি জানি না”
  • যেকোন কথোপকথন শুরু করার আগে প্রয়োজন প্রশ্ন আর সে প্রশ্ন হতে পারে অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যতকে ঘিরে। ধরুন গুগলের মতো বিশাল একটি সাইট খুলে বসে আছেন। কিন্তু কোন প্রশ্ন করছেন না। তাহলে ঐ বিশাল সাইটি খুলে বসে থাকার মানে কি হলো? গুগলের কাছ থেকে সত্যিকারের উপকার পেতে হলে আপনাকে যেমন একটি প্রশ্ন করা দরকার তেমনি পরিচিত বা অপরিচিত কারো কাছ থেকে সত্যিকারের উপকার বা লিংক পেতে হলে দরকার উন্মুক্ত প্রশ্ন। এমন প্রশ্ন যার উত্তর সাধারনত কেউ শুধুমাত্র হ্যা বা না দিয়ে শেষ করতে পারবে না। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় যে যদি কোন অপরিচিত মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পরে যদি বলেন “কোভিড আমাদের অনেক বিপদে ফেলে দিয়েছে না?” উত্তর আসতে পারে শুধু হ্যা সূচক মাথা নাড়ানো। আর যদি প্রশ্নটি এমনভাবে করা যায় কোভিডের কারনে যে চাপ অর্থনীতির উপর পড়েছে তার থেকে কি সহজে আমরা বের হতে পারবো, আপনি কি মনে করেন? এই খোলা প্রশ্নের কারনে তাকে মন্তব্য করতে হবে।
  • ”Happy Hello” কনসেপ্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন টুলস কথোপকথনের শুরুতেই একজনকে আকৃষ্ট করবার জন্য যা বিনা ব্যয়ে যে কারও সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার শক্তি হিসেবে কাজ করে। আসল হাসি দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় সবসময় কাজ করে।
  • ইংরেজীতে একটি কোট আছে “Happiness is an unexpected compliment”. প্রশংসা আরেকটি টুলস যা কখনও বৃথা যায় না তবে অপ্রয়োজনীয় প্রশংসা হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। তাই আগামীতে যার সাথে আপনার কথোপকথনের সম্ভাবনা রয়েছে তাকে নিয়ে একটু গবেষনা করুন। আপনার একটি সত্যিকারের প্রশংসা কারো দিনকে রঙিন করতে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করতে পারে।
  • কথোপকথনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন এবং অভিজ্ঞরা সবচেয়ে বেশী যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তা হলো চোখ, কান ও মন দিয়ে শোনা এবং কানেক্ট করবার চেষ্টা করা। মনে রাখবেন শ্রবণশক্তি দুর্দান্ত গল্প আবিষ্কারের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অস্ত্র যা আমরা অনেকেই নিজের অজান্তে অব্যবহারিত হিসেবে রেখে দেই।

কথোপকথন শুরু করবেন কিভাবে?

  • নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন যে আপনি কিছুক্ষনের মধ্যেই দারুন একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যাচ্ছেন
  • নিজের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে রাখুন এবং দুটি হাত ফ্রী করে রাখুন
  • যার সাথে কথা বলবেন তার সম্পর্কে হালকা একটু জেনে নিন কাছে পরিচিত মানুষের কাছ থেকে অথবা তার লিংকডইন প্রোফাইল ঘেটে দেখে নিন তার বর্তমান কোন কাজ সম্পর্কে
  • এবার দেখুন তিনি কারো ইতিমধ্যে কথোপকথনে যুক্ত আছেন কিনা। যদি দেখেন তিনি একদম মুখোমুখি দাড়িয়ে কথা বলছেন তাহলে তাকে আর বিরক্ত করবেন না। একটু ধৈর্য ধরুন। যখনই দেখবেন তিনি আর মখোমুখি দাড়িয়ে কথা বলছেন না, তারমানে এখন সঠিক সময়।
  • কাছে গিয়ে বড় একটা হাসির মাধ্যমে সালাম দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান এবং আপনার আনন্দ প্রকাশ করুন। তারপর আপনার নিজের পরিচয়টি দিন।
  • তার কোন একটি কাজের প্রশংসা করতে পারেন যেমন: ”মানবতার প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আশ্চর্যজন“ বা আপনার ব্লগ বা ভিডিও আমাকে অত্যন্ত অনুপ্রানিত করে”।
  • এবার কথোপকথন শুরু হতে হবে একটি প্রশ্ন দিয়ে যেমন: স্যার বা ভাইয়া আপনি এখন পর্যন্ত যে সমস্ত সৃজনশীল কাজ করেছেন তার জন্য অনুপ্রেরণার উত্স কী? এটা দিয়ে শুরু তারপর ধীরে এগিয়ে যাবেন।
  • কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে এবং কোন প্রকার বাধা ছাড়াই। তবে সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং খুব বেশা পেচানো যাবে না।
  • ফিউচার লিংক তৈরি করতে হবে যেন তার সাথে পরবর্তীতে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে তার কোন ভিজিটিং কার্ড বা লিংকডইনে তার সাথে কানেক্ট হবার চেষ্টা করা। ফেসবুকে কানেকশনের জন্য রিকোয়েস্ট না করাই ভালো। কারন অনেকেই ফেসবুককে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যবহার করেন। তবে বাড়ি ফিরে কথোপকথনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ফেসবুকে বন্ধুত্বের রিকোয়েস্ট পাঠানো যেতে পারে।
  • সর্বশেষে একটি রিকোয়েস্ট রাখতে পারেন যে আমি কি আপনার সাথে এই কথোপকথনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন স্মৃতিটি ক্যামেরা বন্দি করতে পারি?
  • বাড়ি ফিরে ধন্যবাদ বার্তা প্রেরণ করতে ভুলবেন না।

বন্ধুরা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে প্রতিটি দুর্দান্ত কথোপকথন আপনার মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করাবার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। আর প্রতিটি দুর্দান্ত কথোপকথন আপনার জন্য তৈরি করে নতুন সম্ভাবনা। তাই লজ্জাকে পরিহার করে, উত্তেজনাকে অনুভব করে পরিচিত বা অপরিচিত মানুষের সাথে কথোপকথনে যুক্ত হন। কথোপকথন সবসময় ফলপ্রসূ হবে এমন কোন নিশ্চয়তা কারো পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় তবে আপনি যেন মন থেকে বলতে পারেন আপনি চেষ্টার ত্রুটি করেননি।

অনুশীলনে সবই সম্ভব | Practice makes everything perfect


লেখক: কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

Teaser-44

জেনে নিন বিভিন্ন বিষয়ের জনকের নাম

পৃথিবীতে অনেক মনীষী এসেছেন যারা নিজের জ্ঞান, দক্ষতা এবং সঠিক আচরনকে ব্যবহার করে আমাদের জীবনকে সহজ করবার জন্য বিভিন্ন তুলে ধরেছেন। যে বিষয়গুলো আমাদের জীবন পরিচালনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিলো। আমি গুগলকে ব্যবহার করে জানবার চেষ্টা করছিলাম যে বিষয়গুলো আমাদের জীবনকে সহজ করতে সাহায্য করেছে সে বিষয়গুলোর জনকের নাম। আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমি সেই জনকের নাম তুলে ধরলাম যারা বিভিন্ন বিষয়ের জনক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লিখিয়েছেন। নিচে তাদের নাম এবং উইকিপিয়ার লিংক দেওয়া হলো যাতে আপনারা তাদের নিয়ে গবেষনা করতে পারেন।

বিভিন্ন বিষয়ের জনক জেনে নিন

✬ অংকের জনক — আর্কিমিডিস

✬ অপরাধ বিজ্ঞানের জনক — ল্যামব্রাসো।

✬ অর্থনীতির জনক — এডামস্মিথ।

✬ অলিম্পিকের জনক — ব্যারন পিয়েরে দ্য কুবার্তে।

✬ আধুনিক শিক্ষার জনক — জান আমোস কমেনস্কি।

✬ আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার জনক — ম্যাক্স ওয়েবার।

✬ দর্শনের জনক — সক্রেটিস।

✬ আধুনিক অর্থনীতির জনক — পল স্যামুয়েলসন

✬ আধুনিক গণতন্ত্রের জনক — জন লক।

✬ আধুনিক জোর্তি বিজ্ঞানের জনক — কোপার্নিকাস।

✬ আধুনিক মনোবিজ্ঞানের জনক — সিগমুন্ড ফ্রয়েড।

✬ আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক — নিকোলো মেকিয়াভেলী

✬ আধুনিক রসায়নের জনক — জন ডাল্টন

✬ আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক — আলবার্ট আইনস্টাইন

✬ আধুনিক বিজ্ঞানের জনক — রজার বেকন

✬ আধুনিক কম্পিউটারের জনক — চালর্স ব্যাবেজ

✬ আমেরিকার জনক — জর্জ ওয়াশিংটন

✬ ইংরেজি নাটকের জনক — শেক্সপিয়র

✬ ইংরেজী কবিতার জনক — জিওফ্রে চসার

✬ ইতিহাসের জনক — হেরোডোটাস

✬ ইন্টারনেটের জনক — ভিনটন জি কার্ফ

✬ WWW এর জনক — টিম বার্নাস লি

✬ ই-মেইল এর জনক — রে টমলি সন

✬ ইন্টারনেট সার্চইঞ্জিনের জনক — এলান এমটাজ

✬ উদ্ভিদ বিজ্ঞানের জনক — থিওফ্রাস্টাস

✬ এনাটমির জনক — আঁদ্রে ভেসালিয়াস

✬ ক্যালকুলাসের জনক — আইজ্যাক নিউটন

✬ গণিতশাস্ত্রের জনক — আর্কিমিডিস

✬ চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক — হিপোক্রেটিস

✬ জীবাণুবিদ্যার জনক — লুই পাস্তুর

✬ জীব বিজ্ঞানের জনক — এরিস্টটল

✬ জ্যামিতির জনক — ইউক্লিড

✬ দর্শনশাস্ত্রের জনক — সক্রেটিস

✬ প্রাণি বিজ্ঞানের জনক — এরিস্টটল

✬ বংশগতি বিদ্যার জনক — গ্রেগর জোহান মেন্ডেল

✬ বংশগতির জনক — গ্রেগর মেন্ডেল

✬ বাংলা গদ্য ছন্দের জনক — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

✬ বাংলা উপন্যাসের জনক — বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

✬ বাংলা কবিতার জনক — মাইকেল মধু সূদন দত্ত

✬ বাংলা গদ্যের জনক — ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যা সাগর

✬ বাংলা নাটকের জনক — দীন বন্ধু মিত্র

✬ বাংলা গজলের জনক — কাজী নজরুল ইসলাম

✬ বাংলা সনেটের জনক — মাইকেল মধু সুদন দত্ত

✬ বাংলা মুক্তক ছন্দের জনক — কাজী নজরুল ইসলাম

✬ বাংলা চলচিত্রের জনক — হীরালাল সেন

✬ বিজ্ঞানের জনক — থেলিস

✬ বীজগণিতের জনক — আল-খাওয়ারিজমি

✬ ভূগোলের জনক — ইরাতেস্থিনিস

✬ পদার্থ বিজ্ঞানের জনক — আইজ্যাক নিউটন

✬ মনোবিজ্ঞানের জনক — উইলহেম উন্ড

✬ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক — এরিস্টটল

✬ রসায়নের জনক — জাবির ইবনে হাইয়ান

✬ শারীরবিদ্যার জনক — উইলিয়াম হার্ভে।

✬ হিসাব বিজ্ঞানের জনক — লুকাপ্যাসিওলি

✬ শ্রেণীকরণ বিদ্যার জনক — ক্যারোলাস লিনিয়াস

✬ সনেটের জনক — পের্ত্রাক।

✬ সামাজিক বিবর্তনবাদের জনক — হার্বাট স্পেন্সর

✬ সমাজবিজ্ঞানের জনক — অগাষ্ট কোঁৎ

✬ ফেসবুক এর জনক — মার্ক জুকারবার্গ

✬ চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক — ইবনে সিনা

✬ হোমিওপ্যাথির জনক — হ্যানিম্যান

✬ মেডিসিনের জনক — হিপোক্রটিস

✬ কম্পিউটার মাউসের জনক — ডগলাস এঙ্গেলবার্ট

✬ মোবাইল ফোনের জনক — মার্টিন কুপার