pexels-photo-462360

আমি কি আত্ম মূল্যায়ন করতে পারি

আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি তখন একদিন আমার এক অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক আমাদের ক্লাশের সবাইকে কাজ দিলেন যেন আমরা আমাদের আত্ম মূল্যায়ন করি। যেখানে আমরা ১০০% সৎ মন্তব্য করবো। আমাদের সবার হাতে একটি করে কাগজ ধরিয়ে দিলেন। যেখানে অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল এবং সবগুলো প্রশ্নের পাশে হ্যা/না লেখা ছিল। যেহেতু আমরা অনেকে মিলে আত্ম মূল্যায়ন করছিলাম তাই আমরা একজন আরেকজনের টা মিলিয়ে ফরমটা পূরণ করছিলাম। আসলে সেটা আত্ম মূল্যায়ন কোনভাবেই হচ্ছিলনা। কারন মোটামুটি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হ্যা আসছিল। যাই হোক আমাদের স্যার খুব হতাশ হলেন এবং হালকা মোটিভেশন দিয়ে চলে গেলেন আর আমরা বেচে গেলাম। আমাদের সবার কাছেই মনে হচ্ছিল এই কাজটা করার কি দরকার ছিল। পরের বার কোন একটা ওয়ার্কশপে আমি অংশগ্রহন করি এবং সেখানেও এরকম একটি আত্ম মূল্যায়ন কিছু করতে দিয়েছিল এবং যথারীতি আগেরবারের মতোই কাজ হলো। তৃতীয়বার আরেকটি ওয়ার্কশপে আমাদের ফ্যাসিলিটেটর ড. রনজীৎ সিং মালহী ঐরকম একটি আত্ম মূল্যায়ন টাইপের ফরম ধরিয়ে দিয়ে বললেন সবাই বাসায় যান এবং দরজা-জানালা বন্ধ করে একদম একা বসে পূরণ করবেন। যাই হোক ততদিনে যেহেতু ক্যারিয়ার জিনিসটি বুঝতে পেসেছি তাই বাসায় এসে অনেকরাতে একা বসে নিজের কাছে ১০০% সৎ থেকে ফরমটি পূরণ করলাম। এবার দেখলাম বেশীরভাগ প্রশ্নের উত্তর ”না” আসছে। একটি বিষয় নিশ্চিত হলাম যে নিজের ক্যারিয়ারকে মজবুত করতে হলে এখনও ‍অনেক কাজ নিজের উদ্দ্যোগেই করতে হবে, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে আশানুরূপ ফলাফলের জন্য। সেই থেকে ব্যক্তিগত এবং কর্মক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সর্ট কোর্স, বিভিন্ন ক্লাব/এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হতে শুরু করলাম। আমি একটি কথা বিশ্বাস করি “God helps only people who work Hard” আমি অনেক পরিশ্রম করলাম এবং ফলাফলও পেয়ে গেলাম। এবং আমি এও বিশ্বাস করি এই পরিশ্রমের কোন নিদৃষ্ট সময়সীমা নেই, যতদিন বেচে থাকবো এটা চলতেই থাকবে।

ছাত্রজীবন থেকেই আসলে আমাদের আত্ম মূল্যায়ন করা উচিত। আত্ম-মূল্যায়নের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি আমরা কি কি জানি, কি কি জানিনা, আমাদের কি কি জানা উচিত ইত্যাদি।

নিন্মে ২০টি প্রশ্ন দেয়া হলো এবং অনুরোধ থাকবে একদম সচেতন হয়ে প্রশ্নগুলো উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন এবং যদি আপনার অন্তত ১৬টি প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যা হয় তাহলে আপনার ব্যক্তিগত গুনাগুণ অত্যন্ত শক্তিশালী।

সেল্ফ কুইজ হ্যা না
আমি নিজেকে ভালোবাসি    
আমার দক্ষতা সম্পর্কে অবগত    
আমি একজন Pro-Active মানুষ (আমি হুকুমের অপেক্ষায় থাকি না)    
আমি যা প্রতিজ্ঞা করি সেটা যেকোন মূল্যে রক্ষা করি    
আমি আমার পোষাকের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন    
আমি সবসময় আমার সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন    
আমি সময়ের মুল্য সম্পর্কে সচেতন এবং আমি অযথা সময় অপচয় করি না।    
আমি যা বলি বুঝে বলি! আমি যা পড়ি বুঝে পড়ি! আমি যা লিখি বুঝে লিখি।    
আমার কাজ কি সেটা আমি ভলো করে জেনে নেই এবং যদি না জানি তাহলে নিজ দায়িত্বে সেটা বুঝে নেই।    
আমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমার কাজ সম্পন্ন করতে পারি এবং সময়ের আগেই জমা দেই।    
আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ বাছাই করে সম্পন্ন করতে পারি।    
আমি একজন টিম প্লেয়ার।    
আমি সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নিতে জানি।    
আমি মানুষের সাথে সম্মান বজায় রেখে কাজ করি    
আমি গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারি এবং প্রয়োজনে গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারি    
যেখানে প্রশংসার প্রয়োজন সেখানে আমি কার্পণ্য করি না    
আমি সবকিছুকেই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করি আগে    
”তুমিও জিতবে আর আমিও জিতবো” আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী    
আমি ব্যঙ্গাত্মকমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকি    
সবচেয়ে বড় কথা আমি হাসতে জানি    

নিচের ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ব্যপারটি আরো পরিস্কার হবে, আমি বিশ্বাস করি

https://www.youtube.com/watch?v=OYZKInRfHq4

দক্ষ হন!

pexels-photo-374016

আপনার স্বপ্নের কাজের জন্য ২০টি ইন্টারভিউ টিপস

একটি কাজ পাওয়ার অন্যতম অংশ হচ্ছে ইন্টারভিউ। অনেকেই আছে, যারা প্রচুর মেধাবী। কিন্তু সঠিকভাবে ইন্টারভিউ না দিতে পারায় কাজ পাওয়া হয়ে ওঠে না। একটি সফল ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রয়োজন বিশেষ কিছু প্রস্তুতি, সফ্ট স্কিলস এবং কিছু জ্ঞান। আমরা প্রায় কমবেশী ১৬/১৭ বছর পড়াশুনা করার পর কাজ পাওয়ার বা কাজ চাইবার যোগ্যতা অর্জন করি। আবার অনেকে আরো আগেই সে যোগ্যতা অর্জন করে থাকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি কাজ পাওয়ার অনেক আগে থেকেই নিজের মনোভাব, দক্ষতা এবং জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে নিতে হয়। সাধারনত আমরা ইংরেজীতে যেটাকে বলি “Attitude, Skills & Knowledge (ASK) model”

ইন্টারভিউ হচ্ছে কাজদাতা এবং কাজপ্রত্যাশীর মধ্যকার আলোচনা। একজন কাজপ্রত্যাশী চান নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান আর কাজদাতা চান একজন যোগ্য, দায়িত্ববান কর্মী। তাই দুজনেরই লক্ষ্য যেহেতু টেকসই সেহেতু টেকসই কিছু অর্জনে ইন্টারভিউ হচ্ছে আপানার প্রথম পদক্ষেপ। এ প্রথম পদক্ষেপটাই আপনাকে হয়তো বড় একটি ক্যারিয়ারের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে।

ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Talent will get you in the Interview Door but Character will keep you in the Room”. এখানে ট্যালেন্ট বলতে বোঝানো হয়েছে যেসকল জ্ঞান এবং দক্ষতার কারনে আপনাকে একজন কাজদাতা কাজে লাগাবার উদ্দেশ্যে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু এখানে আমাদের সকলের স্মরন রাখা প্রয়োজন যে কাজের নিশ্চয়তা আমি পাবো আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ঠের কারনে। ইন্টারভিউতে আমার আত্মবিশ্বাস, কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে নিদৃষ্ট জায়গায় ব্যবহার করার ক্ষমতা, আচার-আচরন কে বিবেচয় রেখে আমাকে কাজ দেবার স্বীদ্ধান্ত নেওয়া হয়।      

আপনার পরবর্তী যেকোন ইন্টনভিউতে যাবার আগে আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন আসলে ইন্টারভিউ কতধরনের হয়ে থাকে। সাধারনত আমরা ৬ ধরনের ইন্টারভিউর দেখা পাই।

১. ট্রেডিশনাল ওয়ান টু ওয়ান ইন্টারভিউঃ আপনি যে কাজের জন্য আবেদন করেছেন তার পরিচালক যখন আপনার সাথে একান্তে আলোচনার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানান।

২. প্যানেল ইন্টনভিউঃ পতিষ্ঠানের একাধিক ব্যক্তিরা মিলে যখন আপনার সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন। এ ধরনের একটি প্যানেল সাধারনত ঐ প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারণী বা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের দক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা গঠন করা হয়।

৩. বিহেভিয়র ইন্টনভিউঃ এ ক্ষেত্রে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ঐ পদের সাথে মিলিয়ে পূর্বের কোন অভিজ্ঞতার আলোকে আচরনগত প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করে থাকেন যে ঐ সময়ে তার পদক্ষেপগুলো কি ছিল।

৪. গ্রুপ ইন্টনভিউঃ এ ধরনের ইন্টরভিউতে প্রতিষ্ঠান একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সকল কাজ প্রত্যাশীদের একসাথে ডেকে কাজ, প্রতিষ্ঠান এবং প্যাকেজ সম্পর্কে জানাবার পর প্রাথমিক সিলেকশন করে থাকেন।

.ফোন ইন্টারভিউঃ এখানে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ফোনের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেন যে তিনি কাজ এবং কাজের ধরন সম্পর্কে জানার পর তার মতামত কি। যদি সন্তোশজনক হয় তাহলে তাকে ফরমাল ইন্টারভিউতে ডাকবেন।

৬. লাঞ্চ ইন্টারভিউঃ অনেক সময় দ্বিতীয় ইন্টারভিউ হিসেবে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ডাকেন যেখানে প্যানেলে নতুন আরো কিছু সদস্য কে যুক্ত করেন যারা প্রশ্নের মাধ্যমে দেখার টেষ্টা করেন আপনি কতটুকু দক্ষ কাজটির জন্য।

ইন্টারভিউর সফল করার জন্য ২০টি টিপস

ইন্টারভিউর ক্ষেত্রে প্রথম যে কাজটি করণীয় সেটি হচ্ছে ইন্টারভিউকে কখনোই সাধারণ কোনো বিষয় হিসেবে নেয়া যাবে না। কাজপ্রত্যাশীর লক্ষ্য হওয়া উচিত, ”আমি ইন্টারভিউতে অবশ্যই অংশ নেব এবং জয় করে তারপর ফিরবো’। ইন্টারভিউর আগে, ইন্টারভিউ চলাকালীন এবং ইন্টারভিউ পরবর্তী বেশ কিছু করণীয় থাকে। এখানে সে বিষয়গুলো মূলত আলোচনা করা হবে।

১. প্রথমেই বলি ইন্টারভিউয়ের আগের প্রস্তুতির বিষয় সম্পর্কে। প্র‍থমে ভাবতে হবে, এই কাজটির সুযোগ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে এবং কেন এসেছে? এটি ভালো করে জানতে পারলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর আত্মবিশ্বাসের সাথে দেয়া সহজ হয়ে যায়। সাথে সাথে জানতে হবে কোন সূত্র থেকে ইন্টারভিউয়ের ডাক এলো। ইন্টারভিউয়ের ডাক আসার পরে আপনার প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি অবশ্যই ইন্টারভিউতে সময়ের অন্তত ২০ মিনিট অংশগ্রহণ করছেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইন্টারভিউতে যেতে চেয়েও অনেকের যাওয়া হয় না। সেক্ষেত্রে পরবর্তিতে ঐ প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে আর তাকে ডাকা হয় না, এককথায় কালো তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

২. ইন্টারভিউয়ের আগে আরেকটি কাজ করতে হয় আর সেটি হলো ”হোমওয়ার্ক”। ইন্টারভিউতে জানতে চাওয়া হতে পারে যে, আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাচ্ছেন, সেটা সম্পর্কে কতটুকু জানেন বা খোঁজ নিয়েছেন। আর সেজন্যই বাড়িতে বসে সেই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় বিষয়গুলো জেনে তারপর ইন্টারভিউয়ে যাওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। যেমনঃ

৩. প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট ভিজিট করে সহজেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। অথবা এমন কোন তথ্য যেমন বিগত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন ঘেটে আপনি জানাতে পারেন আপনি কোথায় কিভাবে কাজ করে আরো উন্নত ফলাফল নিয়ে আসতে পারেন।

৪. প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের এখন নিজস্ব সোস্যাল মিডিয়ায় পেজ আছে যেমন Facebook, LinkedIn, YouTube, Instagram যেখানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্নকার্যক্রম তুলে ধরা থাকে, সেখান থেকেও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

৫. Google কে ব্যবহার করেও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

৬. কাজের বিবরণী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক সময় আমরা দেখতে পাই কাজ প্রত্যাশী বেশীরভাগ মানুষ কাজে বিবরণী না পর্যালোচনা করেই ইন্টরভিউ দিতে চলে আসেন যা কোনভাবেই কাম্য নয়। বরং কাজের বিবরণীকে পর্যালোচনা করে সে মোতাবেক তার সিভি তৈরী করে ইন্টরভিউতে অংশ নিতে হবে।

৭. পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী কাছ থেকেও যদি তথ্য সংগ্রহ করা যায় তাহলে তাই করতে হবে ইন্টারভিউর কক্ষে প্রবেশের পূর্বে।

৮. ইন্টারভিউয়ের পূর্বমুহূর্তের কিছু প্রস্তুতি অবশ্যই নিতে হবে। যেমন আপনার একাডেমিক কাগজপত্র, সনদপত্র, বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সনদ এবং অন্য কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা এবং ফোল্ডারে সাজানো আছে কিনা দেখে নিতে হবে। এখন অনেক চমৎকার ফাইল/ফোল্ডার অনেক কম দামে পাওয়া যায়। এতে দুটি সুবিধা হবেঃ একটি কাজদাতার চাহিদা অনুযায়ী তৎখনাত আপনি দিতে পারছের এবং দ্বিতীয়টি হলো আপনি যে অত্যন্ত গোছানো একজন কর্মী সেটা প্রমানীত হয়ে গেলো।  

৯. ইন্টারভিউতে একটা কমন প্রশ্ন হলো, নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন। এখানে আপনি একটি সুযোগ পেলেন নিজের ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ, দক্ষতা এবং জ্ঞানকে কাজদাতার সম্মুখে প্রকাশ করার। এক্ষেত্রে প্রচুর পরিমানে অণুশীলন করতে হবে যেন ঘাবরে গিয়ে এই চমৎকার সুযোগটি নষ্ট করে না ফেলেন। মনে রাখতে হবে এই সুযোগটি হলো নিজের জন্য তৈরি করা একটি বিজ্ঞাপন চিত্রের মতো। ৬টি ভাগে আপনি আপনা উত্তরকে সাজাতে পারেন:

১০. প্রথমেই আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শক্তি (Strength) সেটা দিয়ে শুরু করুন যেমন: Commitment, Critical Thinking, Leadership Quality, Patience ইত্যাদি

১১. দ্বিতীয়ভাগে আপনি আপনার সেই শক্তি বা সামর্থ্যকে কিভাবে আপনার পূর্বের কর্মক্ষেত্রে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রয়োগ ঘটিয়ে আশানুরুপ ফলাফল এনে দিয়েছেন।

১২. তৃতীয়তো ধরুন আপনার পূর্বের কর্মক্ষেত্রে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আপনার সরাসরি উপস্থিতির কারনে ৮০% সফলতা বা এক লক্ষ টাকা অর্জিত হয়েছে, আপনি সেটা আত্মবিশ্বাস মনোভাব নিয়ে বলে ফেলুন

১৩. চথুর্থতো বর্তমান সুযোগটি আপানার দক্ষতা উন্নয়নে কিভাবে কাজ করবে এবং আপনি প্রতিষ্ঠানকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।

১৪. সবচেয়ে বড় যে ভুল করি তা হলো মুখস্তবিদ্যার মতো সিভিটাকে পড়তে থাকি এবং যথারীতী কাজ পাবার থেকে অনেক দুরে সরে যাই।  

১৫. সময়কে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। জায়গার দূরত্ব, যানজট, সব কিছু মাথায় রেখে কমপক্ষে ইন্টারভিউর ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ভালো। এতে যে সুবিধা হয় তা হলো ইন্টারভিউয়ের স্থানে গিয়ে একটু ফ্রেশ হওয়া যায়। ইন্টারভিউ কক্ষে ঢুকার সময় যেন আপনি সতেজ এবং ফ্রেশ থাকেন সেটা অবশ্যই মাথায় রাখা উচিৎ।

১৬. আমার কাছে একটি প্রবাদ অত্যন্ত প্রিয় “First Impression is the Best Impression”. আমার বাবা আমাকে বলতেন জানো আমরা যেকোন আমন্ত্রনে আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি কেন পরিধান করি? কারন আমি যখন আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি পরে অনুষ্ঠানে গেলাম তখন যিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি উপলব্ধী করেন যে আমি তার আমন্ত্রণকে সম্মান জানালাম। এটি শোনার পর আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি পরিধান করবার।  ইন্টারভিউর পোশাক অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ইন্টারভিউর জন্য পরিপাটি পরিস্কার পোশাক পরিধান করা অত্যন্ত জরুরী।

সবচেয়ে ভালো হয় আলাদা করে শুধুমাত্র ইন্টারভিউর জন্য একসেট পোষাক রেখে দেয়া। পোশাক অনেক সময় ইন্টারভিউ গ্রহণকারীর কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে। সাধারণ রঙের পোশাক এক্ষেত্রে উত্তম। বেশি গাঢ় রঙের পোষাক না পরিধান করাই ভালো। মেয়েদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় দেখা যায় যে, তারা প্রচুর পরিমানে মেকাপ দিয়ে বা খুব কড়া পারফিউম দিয়ে ইন্টারভিউতে যাচ্ছেন। এটা  না করাই ভলো। ইন্টারভিউর পোষাক নিয়ে আমি আলাদা একটি ভিডিও করেছি যেখানে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছি কি পরিধান করা উচিৎ।
লিংক: http://youtube.com/kmhasanripon

১৭. ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে কিছু প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। যেমন ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে হাসিমুখে থাকাটা শ্রেয়। ইন্টারভিউ রুমে আপনি সিওর হয়ে নিন যে, আপনার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করেছেন। অনেক সময় ইন্টারভিউর মাঝে অনেকের ফোন বেজে ওঠে। অনেকে আবার সেখানে ফোন রিসিভ করে কথা বলা শুরু করেন। এগুলো করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এমনকি কে আপনকে ফোন করলো সেটাও না দেখে সরাসরি ফোন বন্ধ করে দিতে হবে। এতে করে কাজদাতা বুঝতে পারবেন এই ইন্টারভিউটিকে আপনি কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছেন।  

১৮.আরেকটি বিষয় হলো হাত মেলানো। অনেক সময় ইন্টারভিউ কক্ষে হাত মেলানোর জন্য যখন কাজদাতা হাত বাড়িয়ে দেন, তখন কাজপ্রত্যাশী খুব অস্বাভাবিক বা আত্মবিশ্বাসহীনভাবে হাত মেলান। হাত মেলানোর ক্ষেত্রে হাসিমাখা মুখ নিয়ে Smartly এবং Friendly হতে হবে। ইন্টারভিউ কক্ষে চেয়ারে বসা নিয়েও আমাদের অনেক ঝামেলা হয়। সবসময় যেকোন মুহুর্তে সোজা হয়ে বসা অত্যন্ত জরুরী। চেয়ারে আরামে হেলেদুলে বসে কথা বলা একটু যেন কেমন দেখায়। আবার অনেকে  ইন্টারভিউ ‍দিতে এসে টেবিলে থাকা বিভিন্ন জিনিস নিয়ে খেলতে শুরু করে দেন যেটা একদম উচিৎ নয়। অনেকে আবার গোমরা মুখে না তাকিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেন যেটা করা একদমই যাবে না। Eye Contact একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তরদিলে আত্মবিশ্বাসের লেভেল বুঝা যায়। তাই কথা বলার সময় নিচের দিকে তাকিয়ে থেকে বা এক পলকে কারো দিকে তাকিয়ে থেকে কথা না বলাটা জরুরী।

১৯. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার সময় খুব উত্তেজিত হয়ে না দিয়ে ধীরে ধীরে গুছিয়ে বললে সঠিক উত্তরটি দেওয়া যায়। সহজভাবে উত্তর দেয়ার অনুশীলন করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, প্রশ্নকর্তাকে কখনই বুঝতে দেয়া যাবে না যে, আপনি বেতনের জন্য এই কাজটা করতে চাচ্ছেন। অথবা অযৌক্তিক বেতন চাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। শেষের দিকে একটি কথা হলো, ইন্টারভিউর মাধ্যমে আপনার ব্যাক্তিত্বকে প্রকাশ করতে হবে।

২০. ইন্টারভিউ শেষ হয়ে গেলেও কিন্তু কিছু কাজ থাকে। যেটিকে বলছি After Interview। যেমন, আপনি ইন্টারভিউয়ারের ভিজিটিং কার্ডটা নিয়েছেন। বাসায় পৌছে তাকে একটা ছোট্ট মেসেজ দিন, বা থ্যাংস নোট দিন। এটা আপনার জন্য পজিটিভ ইম্প্রেশন ক্যারি করবে।

উপসংহার

উপরে আলোচিত ইন্টারভিউর আগে, ইন্টারভিউর সময়, এবং ইন্টারভিউর পরের বিষয়গুলো যদি মেনে চলি, তাহলে ইন্টারভিউ জয় করা কঠিন কিছু হবে না। মনে রাখতে হবে একটা ইন্টারভিউর ডাক জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমন্ত্রণ। এটিকে যত গুরুত্বের সাথে দেখা যায় ততোই আশানুরুপ ফলাফল পাওয়া যায়।

এরজন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অণুশীলন। আমি সবসময় বিশ্বাস করি “Practice Makes Perfect”. নিজের ঘরের আয়নার সামনে দাড়িয়ে প্রতিদিন উত্তর দেবার অনুশীলন করুন। আর এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা মোটামুটি সবাই কমবেশী জানি কি কি প্রশ্ন সাধারনত করা হয়ে থাকে ইন্টারভিউতে।

মনে রাখবেন নিজেকে বড় করতে হলে আগে নিজেকে ভালোভাবে জানাটা অত্যন্ত প্রয়োজন। তারপর প্রতিষ্ঠানকে জেনে নিজের সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে হাসিমুখে যদি ইন্টারভিউ সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

আর তারপরও যদি কাজ না পান তাহলে সমস্যা কি এখানে হয়নি আরেকটি ইন্টারভিউতে হবে কারন প্রতিষ্ঠানের তো অভাব নেই আমাদের দেশে। হাল ছাড়বেন নাম হতাশ হবেন না। আজ না হোক কাল হবেই।

ভিডিও লিংক যেখানে YouTube এ ইন্টারভিউ নিয়ে আমার তৈরি করা কিছু ভিডিও:

  • https://www.youtube.com/watch?v=tHqU_69I4nM&t=346s
  • https://www.youtube.com/watch?v=cYGEhMCa-S4
  • https://www.youtube.com/watch?v=0o3DELvYFVw&t=314s
getty_160689726_9706469704500126_90490

বিশ্বাস ব্যতীত টেকসই নেতৃত্ব স্থাপন সম্ভব নয়

সপ্ন মানুষকে বাচতে শেখায়, সপ্ন মানুষকে সামনে বাড়তে প্রেরনা যোগায়। আমরা সপ্ন দেখি, আমরা সপ্নকে নিজের মতো করে মাঝে মাঝে সাজাতেও পারি। এমন অনেক সময়ই হয়েছে একটি সপ্ন দেখার পর মনে হলো আরেকটু উত্তেজনাপূর্ণ হলে ভালোই হতো এবং সাথে সাথে ঘুমিয়ে ওটাকে নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলতাম। একবার মনে আছে আমি সপ্নের ভেতর চাকরির ইন্টার্ভিউ দিচ্ছিলাম। সপ্নের ভেতরই দেখলাম যিনি আমার ইন্টার্ভিউ নিচ্ছিলেন তিনি আমাকে বললেন আমি চাকরিটার জন্য যোগ্য নই এবং সাথে সাথে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম এবং ইন্টার্ভিউর রেজাল্ট আমার পক্ষে নিয়ে আসলাম। মজার ব্যাপার হলো এবার আর ঘুম ভাঙ্গেনি। কারন এটি আমার নিজের তৈরি করা সপ্ন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো ঠিক তার একবছর পর এরকমই একটি ইন্টার্ভিউর সম্মোখিন হলাম এবং যথারিতি যিনি আমার ইন্টার্ভিউ নিচ্ছিলেন তার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম তিনি আমাকে না বলবেন। সাথে সাথে আমার সেই সপ্নের কথা মনে পড়ে গেলো এবং আমি সপ্নে যা বলেছিলাম তাই বললাম “স্যার আমার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে না বলবেন, না বলবার আগে আমার একটি ছোট্ট প্রস্তাব আছে। আমাকে আপনি একমাস কাজ করার সুযোগ দেবেন এবং তার বিনিময়ে আমাকে কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে না। যদি এই একমাসে আমি আমার কর্মদক্ষতা প্রমান করতে পারি তাহলে আপনার উপর স্বীদ্ধান্তের ভার দিয়ে চলে যাবো। তিনি রাজি হলেন এবং একমাস পর আমি নিয়োগপত্র হাতে পাই। সপ্নকে নিজের মতো করে বানানো এবং যথাসময়ে তার প্রয়োগ সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাসের কারনে। আমার ক্যারিয়ারের বয়স যখন মাত্র একবছর তখন আমার বস একদিন আমাকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন প্রজেক্টের দায়িত্ব দিলেন। আমার বসের অনেক গুনাগুন ছিল তবে সবচেয়ে বড় যে গুনটি ছিল সেটা হলো তিনি বিশ্বস্ত ছিলেন। আর যেহেতু তিনি বিশ্বস্ত ছিলেন তাই প্রত্যেকেই তার স্বীদ্ধান্তকে নিজের বলে মেনে নিতেন।  
আজকে লিখতে বসেছি নেতৃত্ব নিয়ে, নেতৃত্বের গুনাবলী সম্মন্ধে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেক টেকসই নেতৃত্বের পেছনে রয়েছে একটিই শব্দ “বিশ্বাস” বা ”বিশ্বস্ততা”। নেতৃত্বের স্থানে থেকে আমরা সবাই সবচেয়ে বড় যে ভুলটি করি এই ভেবে যে আমার পদবী বা পদমর্যাদার করনে আমাকে সবাই বিশ্বাস করবে। বিশ্বাস বা বিশ্বস্ততা কখনই পদবী বা পদমর্যাদার সাথে আসে না। বিশ্বাস অর্জন করার ব্যাপার। ধরুন আপনি অনেক পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, কৌশলী, চমৎকার যোগাযোগ দক্ষতা, উদ্ভাবনী অন্তর্দৃষ্টি, আপনার আছে দক্ষ দল কিন্তু মানুষের বিশ্বাস আপনি অর্জন করতে পারেননি। আপনি কখনই আপনার আশানুরুপ ফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন না। নেতৃত্বের স্থানে থেকে বিশ্বস্ততা তখনই অর্জন করা সম্ভব যখন আপনি আপনার সক্ষমতায় মানুষের আস্থা কায়েম করতে পারবেন। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Practice Makes Perfect” বা “অণুশীলনেই সক্ষমতা”। বিশ্বস্ততা বা বিশ্বাস স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন অণুশীলন। খুব সহজেই আমরা নিজ অবস্থান থেকে ছোট ছোট কিছু কাজের মাধ্যমে “বিশ্বস্ত নেতৃত্ব” বা “Trustworthy Leadership” অর্জন করতে পারি। নিচে কিছু বিষয় অণুশীলনের জন্য উল্লেখ করা হলোঃ 
১. মানুষ স্পষ্টতাকে বিশ্বাস করে। অবিশ্বাস বা দ্বিধান্বিতকে অবিশ্বাস করে। আপনার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রত্যাশা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পর্কে পরিষ্কার হতে হবে। তাহলেই আপনার সাথে যারা কাজ করছেন তাদের আস্থা অর্জনে সম্ভব হবে।
২. নেতৃত্বের স্থানে থেকে কথা এবং কাজে মিল থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় একবার যদি আপনার উপর আস্থা রাখাটা কষ্টকর হয় তাহলে সেটা পুনরায় অর্জন করা কঠিন। 
৩. আমরা অনেকসময় স্বীদ্ধান্তহীনতায় ভুগী। সঠিক স্বীদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আমরা হিমসীম খাই। এসময় অনেক মানুষ আশপাশ থেকে এসে বিভ্রান্ত করার চেষ্ট করে এবং আমরা সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। যার পরিনাম ভুল স্বীদ্ধান্ত আর পরিনতি মানুষের অনাস্থা। 
৪. নেতৃত্বের স্থানে থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা অত্যন্ত জরূরী। কথা এবং কাজে যদি মিল না থাকে তাহলেই অবিশ্বাস জন্ম নেয়। কিন্তু একটা বিষয় আমাদের সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যে মানুষ সবসময় কোনটি আপনার অন্তরের আর কোনটি আপনার শুধুমাত্র মুখের লোক দেখানো তা খুব সহজেই বুঝতে পারে। 
৫. আপনার সহকর্মীরা যখন বিশ্বাস করবে যে আপনি তাদের যেকোন সমস্যায় সামনে এগিয়ে আসবেন তখনই তারা আপনার সপ্নকে বাস্তবায়ন করতে নিজের সবটুকু দিয়ে এক হয়ে কাজ করবে।  
৬. Leaders become great not for their Power but because of their ability to empower others. আমাদের সামনে নেতৃত্বের অনেক উদাহরন আছে যেখানে আমরা দেখতে পাই সফল নেতৃত্বদানকারী ইচ্ছাকৃতভাবেই ক্ষমতা ছেড়ে দেন এবং সরাসরি কর্মীদের হাতে তুলে দেন। তারা এটি করেন কারন তারা তাদের দলের প্রত্যেকের কর্মদক্ষতার উপর আস্থাশীল। যার ফলে কর্মীরাও তাদের দক্ষতার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেন লক্ষ্য অর্জনের জন্য। 
৭. ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “If you are the smartest person in the room, you are in the wrong room.” সফল নেতৃত্বস্থানীয় ব্যাক্তিরা সবসময় স্বীদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সকলের মতামত প্রদানের জন্য পরিবেশ তৈরী করেন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে। 
৮. রবার্ট এ্যান্থনী অত্যন্ত চমৎকার একটি উক্তি করেছিলেন “When you blame others, you give up your power to change”। আমরা কখনই সহজে আত্মসমালোচক হতে পারি না। নিজের ভুলগুলোকে দেখতে পাই না বা কেউ দেখালে তা সহ্য করতে পারি না। এটি টেকসই নেতৃত্বের জন্য বড় প্রতিবন্ধক।  

এরকম আরো অনেক উদাহরন দেওয়া যায়। কিন্তু একটি কথাই পরিশেষে বলতে চাই বিশ্বাস এবং নেতৃত্ব একই সাথে তাল মিলিয়ে চলে অন্যভাবে বলা যায় একটি আরেকটির পরিপূরক। বিশ্বাস প্রতিটি ভাল সম্পর্কের মূল ‍হিসেবে কাজ করে সেটি ব্যাক্তি জীবনে হোক আর কর্মক্ষেত্রে। যখন মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করে এবং আস্থা রাখে যে আপনি যাই করছেন তা সততার সাথে করছেন। তখন তারা আপনার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে। আজকের লেখায় আমার শেষ উক্তি “বিশ্বাস ব্যতীত টেকসই নেতৃত্ব স্থাপন সম্ভব নয়” এবং এটিই আমার আজকের শিরোনাম।

IMG_3372

টেকসই ক্যারিয়ারের জন্য কর্মদক্ষতা

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। একজন উদ্যোক্তা বা চাকরিদাতা তার চাকরী প্রত্যাশী বা তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছেন, প্রত্যেকের কাছে প্রত্যাশা করে থাকেন। কর্মদক্ষতা (Employability Skills) একজন কর্মীর মধ্যে যদি থাকে তাহলে তিনি তার কর্মক্ষেত্রকে বর্তমান অবস্থা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে বা তার সহকর্মীদের সাথে দলগতভাবে কাজ করে নিদির্ষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। আর ঠিক এই কারনেই একজন উদ্যোক্তা বা একজন চাকরীদাতা সব সময়ই প্রত্যেক চাকরী প্রত্যাশীর মাঝে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) খুজবার চেষ্টা করে থাকেন।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে আবার ট্রান্সফারেবল স্কিলস বা Soft Skills বলা হয়ে থাকে। এর কারন কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নির্দিষ্ট কোনো একটি বিশেষ চাকরি ক্ষেত্রের জন্য নয়। এর মানে একজন কর্মদক্ষতা সম্পন্ন ব্যাক্তি যেকোন ক্ষেত্রে বা যেকোন পদবীতে কাজ করার সুযোগ পেলে তিনি তার কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে তার ব্যাক্তিগত বা তার কর্মক্ষেত্রের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগাতে পারেন। এর মানে কর্মদক্ষতা সব সময় প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই সম্পূর্ন তার নিজস্ব বা ব্যক্তিগত দক্ষতা যা কিনা সে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার তাগিদে ব্যবহার করতে পারছেন। উদাহরনস্বরুপ ধরা যাক বিশ্ববিদ্যালয়/পলিটেকনিকের পড়াশুনা শেষ করে রাসেল রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করতে শুরু করলেন এবং ভালোভাবেই দক্ষতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ রাসেলের ভাবনাতে এলো যে তিনি তার চাকরি ক্ষেত্র পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি ক্ষেত্রে কর্মজীবন শুরু করবেন এবং যথারীতি তিনি টেলিকম সেক্টরে যোগ দিলেন। এখন আমরা বিষয়টি যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পারবো ঐ দুই সেক্টরে দুই ধরনের Functional Skills প্রয়োজন যা একটি আরেকটি থেকে সম্পন্ন ভিন্ন।  কিন্তু দুই সেক্টরেই একই ধরনের দক্ষতা সমুহ প্রয়োজন যাকেই আমরা বলছি কর্মদক্ষতা (Employability Skills)।

প্রশ্ন আসতেই পারে এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কেন প্রয়োজন?

প্রথমত আমাদের সকলেরই একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি প্রয়োগ করতে হবে আর সেটা হলো প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই দুটি বিষয়ের প্রতি আমাদের কঠোর মনোযোগ রাখতে হয় আর তা হলো সহকর্মিদের কোন বিষয় ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া বা সহকর্মিদের কাছ থেকে কোন বিষয় ভালো করে বুঝে নেয়া। যদি কোন ব্যক্তি ঠিক ভাবে কোন কাজ বুঝে না নেয় তাহলে সে ঠিক ভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারবেন না। আবার অন্যদিকে যদি সে কাজটি যদি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার সহকর্মীরা ঠিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে না। আর এই বুঝিয়ে দেয়া বা বুঝে নেয়া ঠিক তখনই সম্ভব যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকবে। একজন ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন সে প্রতিষ্ঠানে তার কর্মদক্ষতার (Employability Skills) দ্বারা তার নিজস্ব কাজকর্ম গুলো সে নিজেই খুব সহজে বুঝে নিতে পারে বা তা নিজের দলের সাথে একত্রে মিলে কাজ করতে পারে। আবার সে নিজেই একটি কাজ তার সহকর্মীকে সাথে নিয়ে অনায়াসে সম্পাদন করতে পারে।

দ্বিতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে তিনি যেকোন সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন বা যেকোন সমস্যা আসার পূর্বেই সেই বিষয়ে বিশ্লেষন করে তা উপর একটি প্রতিবেদন করতে পারবে বা সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারবেন। একজন কর্মদক্ষহীন মানুষই শুধুমাত্র সমস্যাকে দেখতে পান কিন্তু তার সমাধানের রাস্তা তিনি দেখতে অক্ষম থাকেন।

তৃতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে সে তার নিজস্ব দক্ষতাগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজাতে পারেন। আবার যে দক্ষতাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন বা প্রয়োজনীয় কিন্তু নিজের ভেতর সেগুলোর অনুপস্থিতি নিজেই চিহ্নিত করতে পারবে এবং সেই ঘাটটিগুলো পূরুন করতে সে তার নিজস্ব দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবে। আর এই সব কিছু করা সম্ভব যখন কোনো ব্যক্তির কর্মদক্ষতা বা এমপ্লোয়াবিলিটি স্কিলটি থাকবে।

এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় আছে কিনা? আমার মতে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় নেই। শুধুমাত্র প্রয়োজন সচেতনতা এবং শেখার মনোভাব থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন অনুশীলন। আমাদের ভুল হবেই কিন্তু আমরা যদি আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে নিয়ে যদি সঠিকভাবে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারি তাহলে আমাদের যেকোন পরিকল্পনা অর্জনে সহজ হবে। তবে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সব থেকে সঠিক সময় আমাদের ছাত্রজীবন। কারন ছাত্রজীবনে আমরা অন্য একধরনের স্বাধীনতা ভোগ করি যেটা আমরা অনেকেই ধরতে অক্ষম থাকি। এই সময়ে আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, যার সাথে ইচ্ছা তার সাথেই কাজ করতে পারি, যার সাহায্য প্রয়োজন তার কাছেই পেতে পারি। তাই আমি মনে করি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন এবং তীক্ষ্ণ করার সঠিক সময় ছাত্রজীবন।     একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, যত দ্রুত এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিশ্চিত করা যাবে ঠিক তত দ্রুত ক্যারিয়ারের অগ্রগতি বা উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিয়ে লিখতে গেলেই আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর কথা চলে আসে। আসলে কর্মদক্ষতার (Employability Skills) উপরই নির্ভর করে আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী অথবা বলা যায় ব্যক্তিগত গুণাবলীর সমন্বয়ে গঠিত আমাদের কর্মদক্ষতা। আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী তিনটি স্তম্ভের দাড়িয়ে থাকে। 

প্রথম স্তম্ভঃ ইতিবাচক ব্যক্তিগত গুণাবলী (Positive Personal Attributes)

আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর প্রথম স্তম্ভ। এই স্তম্ভের গুণাবলীগুলো সম্পূর্ন আমাদের ব্যক্তিগত। যেকোন অর্পিত কাজ দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করা, ব্যক্তিগত নিয়মানুবর্তিতা অক্ষুন্ন রাখা, যা বলছি তা নিজের ক্ষেত্রে অনুশীলন করা, যেকোন পরিবর্তনে হ্যা-সূচক মনোভাব বজায় রাখা, সময়ের প্রতি যত্নবান থাকা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আত্মসম্মানবোধ নিয়ে জীবন পরিচালন করা। 

দ্বিতীয় স্তম্ভঃ সু-সম্পর্ক (Good Human Relation)

শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় আমাদের চারপাশে সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জীবন পরিচলনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। খুব সহজেই আমরা যেকোন সম্পর্ক মুহুর্তেই নষ্ট করে দিতে পারি যেটি তৈরিতে হয়তো আমাদের অনেক সময় এবং পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুবই সামান্য ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে হয়তো আমার অতি কাছের বন্ধুটির সাথে নিজের অজান্তেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেললাম। আর কর্মক্ষেত্রে সুসম্পর্ক অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব সহজেই আমরা আমাদের যেকোন সম্পর্ককে মজবুদ রাখতে পারি। নিন্মের কাজগুলো সম্পর্ক দৃঢ় করতে সহায়তা করবেঃ

·       যেকোন পরিস্থিতিতে দুঃখিত বা ধন্যবাদ অত্যন্ত কার্যকর
·       দক্ষতা শেয়ারিং
·       ”তুমিও জিতবে এবং আমিও জিতবো” এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা
·       উত্তর দেবার আগে ভালোভাবে শুনে নেয়া 
·       যে কারো ভালো কাজে প্রশংসা করা
·       নিজের ভুল স্বীকার করা
·       অন্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা
·       সবসময় সবক্ষেত্রে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করা

তৃতীয় স্তম্ভঃ উচ্চতর কর্মক্ষমতা অর্জন (Superior Work Performance)

ব্যক্তিগত গুণাবলীর তৃতীয় এবং শেষ স্তম্ভটি কর্মক্ষেত্রের সাথে জরিত। কর্মক্ষেত্রে আপনার কর্মক্ষমতা নির্ধারিত হয় আপনি কিভাবে কর্মসম্পাদন করছেন। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন যেমনঃ

  • ত্রুটি বিহীন কাজ করছেন কিনা
  • সময়সীমার মধ্যে আপনি কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন কিনা
  • কর্মক্ষেত্রে আপনার উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে বুঝে নিয়েছেন কিনা
  • আপনার কাজের ধরনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন কিনা
  • কাজের অগ্রধিকার নির্ধারন করতে পারছেন কিনা
  • আপনি কি দলগতভাবে কাজ করতে পারছেন কিনা
  • আপনি সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনকে কতটুকু গুরুত্ব দেন
  • আপনি কি সমস্যা শুধুই দেখছেন নাকি সমাধানও করতে পারছেন
  • আপনি কি সঠিক সময়ে স্বীদ্ধান্ত নিতে পারছেন কিনা
  • অন্যের স্বীদ্ধান্তকে সম্মান করছেন কিনা

এই ৩টি স্তম্ভ যখন একজন পেশাজীবি নিশ্চিত করবেন তখন তার সাথে সাথে কর্মদক্ষতাও (Employability Skills) সুনিশ্চিত হবে।

এবার কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে নিয়ে যদি একটু গভীরে যাই তাহলে আমরা দেখতে পাই বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দক্ষতার সন্নিবেশ ঘটিয়ে কর্মদক্ষতাকে সংগায়িত করার চেষ্টা করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।

  • ফান্ডামেন্টাল স্কিলসঃ একজন ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন। সেক্ষেত্রে তিনি তার অফিসের নিয়ম কানুন কতটুকু মেনে চলেন, সে কতটুকু তথ্য সন্ধানকারী, তার যে নিয়মিত কাজগুলো থাকে সেগুলো তা কতটুকু যত্ন সহকারে করছেন বা কত দ্রুত করছেন ও কাজের নির্দিষ্ট ডেডলাইন মেনে চলছেন কিনা ইত্যাদি সবকিছু ফান্ডামেন্টাল স্কিলস এর অন্তর্গত। অর্থাৎ যদি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন করতেই হয় তাহলে অবশ্যই ফান্ডামেন্টাল স্কিলস থাকতেই হবে।
  • ইন্টারপার্সোনাল স্কিলসঃ এটি মূলত এমন একটি দক্ষতা যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস বলতে একটি প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী বা চাকরীজীবি তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী বা আশেপাশে যারা আছেন তাদের সাথে তার ব্যবহার, আচার আচরন কেমন। অর্থাৎ সে তার সহকর্মীদের সহায়তা করে, সে কি তার কর্মীদের সমস্যা নিজে অনূভব করে। আর এই সব গুলো হল ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস।
  • কমিউনিকেশন স্কিলঃ কমিউনিকেশ্ন স্কিলস ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবন দুটি ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। কারন আমরা আমাদের জীবনে যেকোন কিছু যোগাযোগের মাধ্যমেই সম্পন্ন করি। লেখা থেকে শুরু করে কথা বলা, উপস্থাপন করা, অঙ্গভঙ্গি সবকিছু মিলেই কমিউনিকেশন স্কিলস। একজন চাকরিদাতা চাকরি প্রত্যাশীর কাছে শুধুমাত্র দেখতে চান যে তিনি পড়ে বোঝেন কিনা, বলে বোঝাতে পারেন কিনা এবং তিনি সঠিকভাবে লিখতে পারেন কিনা।  এখন কেউ যদি ঠিকভাবে লিখে বা কথা বলে অথবা অঙ্গভঙ্গি কিংবা ইশারা দ্বারা কিছু উপস্থাপন বা বোঝাতে না পারেন তাহলে সেক্ষেত্রে কোনভাবেই তার পক্ষে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবেনা। আর তাই কমিউনিকেশন স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • সমস্যা দূরীকরনঃ আমাদের সমাজে যেকোনো স্থানেই সমস্যা বিদ্যমান। এখন এই ক্ষেত্রে ২টি বিষয় আসে। আমরা কি সেই সমস্যাগুলো নির্ধারন করতে পারছি বা সেটা নির্ধারনের পর আমরা কি বসে থাকছি না সেটা নিরসনের উপায় খুজছি। যদি উপায় খুজে বের করতে সক্ষম হই তাহলে সেটা ব্যবহার করে সমাধান করতে পারছি কিনা। এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর প্রত্যেক চাকুরীদাতা তার চাকুরী প্রার্থীর কাছ থেকে এই দক্ষতাটি অনেক বেশি আশা করে থাকে।
  •  টিম ওয়ার্কঃ  টিম ওয়ার্ক জিনিসটি কর্মক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। কারন কর্মক্ষেত্রে টিম ওয়ার্ক অনেক বেশি প্রাকটিস করা হয়। একার পক্ষে কোনো কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিষ্ঠানে অনেকে মিলে একসাথে গ্রুপে বা দলে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে একটি বড় কাজ দলের সকল সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে কাজের পরিধি ছোট করা হয়। যাতে অতি সহজেই কাজ শেষ করা যায়। এখন সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তির টিম ওয়ার্ক স্কিলস না থাকে তাহলে সে কাজ করতে পারবেনা। অর্থাৎ তখন প্রতিষ্ঠানের কাজ পরে থাকবে। তাই টিম ওয়ার্ক স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • এথিকাল স্কিল বা নীতিঃ একটা বিষয় প্রায়ই দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা সামান্য স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অন্যের কোন মতামত বা নতুন কোনো বিজনেস  প্রোপোজাল বা আইডিয়া তার বসের কাছে নিজের বলে চালিয়ে দেয়। কিন্তু এই বিষয়টি এথিকাল বা নীতির বাইরে পরে। আর তাই এথিকাল স্কিল অনেক প্রয়োজনীয় একজন ব্যক্তির জন্যে।
  • ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলসঃ ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলস একজন ব্যক্তির জ্ন্যে অনেক গুরুত্বপুর্ণ। ধরা যাক কোনো ব্যক্তি নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছে। সে ক্ষেত্রে তাকে তার প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বার্থে যে ফাংশনাল দক্ষতাগুলো প্রয়োজন তা অর্জন করতে হবে। সেটা যদি নতুন কোন কর্মদক্ষতা হয় সেটাও। এখন ব্যাপার হল সেই ব্যক্তি কি সেই দক্ষতাগুলো খুজে বের করতে পারছেন বা অন্যের কাছ থেকে সেই দক্ষতাগুলো শিখে নিতে পারছেন এবং সে কি সবসময় শেখার মানসিকতা নিয়ে আছেন কিনা।
  • লিডারশীপ স্কিলঃ  লিডারশীপ স্কিলস একটি প্রতিষ্ঠানের জন্যে অনেক বেশী প্রয়োজনীয়। একজন কর্মীর মাঝে লিডারশীপ স্কিলস থাকাটা অনেক গুরুত্বকপূর্ণ। এক্ষেত্রে সে কর্মী তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের কোচও হতে পারেন বা সে তার দক্ষতাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন, কোনো বিষয়ে আলোচনা বা মোটিভেট করতে পারছে কিনা এ সবকিছুই হচ্ছে লিডারশীপ স্কিলস।
  • ইনিশিয়েটিভ স্কিল বা উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতাঃ আজকাল উদ্যোগ গ্রহন ক্ষমতা খুবই প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা। প্রায়ই  অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় কিছু লোক নিজে কাজের উদ্যোগ নেয় আবার অনেকে আছে উর্ধতন কর্মকর্তার আদেশের জন্যে বসে থাকে। এই জিনিষটা অনেক উর্ধতন কর্মকর্তাকে বিরক্ত করে তোলে। তারা আশা করেন তাদের অধীনে যারা কাজ করছেন তারা প্রত্যেকেই যেন নিজে কোনো বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে। আর তাই উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতা থাকাটা প্রত্যেকের জন্যে আবশ্যক।
  • ট্যেকনলজিকাল স্কিলঃ বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সমাজের যেকোনো ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাই সভ্যতার সাথে সাথে আমাদের উচিত এই তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানা এবং করা।
  • বিশেষ করে মাইক্রোসফ্ট এক্সেল, ওয়ার্ড এবং পাওয়ার পয়েন্টের ব্যবহার
    • গুগলের বিভিন্ন ফ্রি টুলসের সঠিক ব্যবহার এবং যথাযথভা্বে যেকোন তথ্যের সন্ধান গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সহজে বের করা

পরিশেষে বলতে হয় কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের বিষয় যা কাজের মাধ্যমে প্রকটিত হয়। বই পড়ে জ্ঞান বৃদ্বি সম্ভব কিন্তু কাজ না করে দক্ষতা অর্জন কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর তাই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সঠিক সময় বেছে নেওয়া উচিত ছাত্রবস্থায়।  আর আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে ”অণুশীলনেই সফলতা”

ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=9xYByg4EqKg

7F9A7856

ক্যারিয়ার চিন্তা কখন?

পড়াশুনা শেষ করে তারপর হয় চাকরি না হয় ব্যবসা, এই রকম চিন্তাধারা থেকে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বের হয়ে আসতে হবে। বেশ কিছুদিন আগে আমি ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি মাইন্ড ম্যাপ তৈরি করেছিলাম যেখানে আমি দেখাবার চেষ্টা করেছি কিভাবে ক্যারিয়ার প্ল্যান করে শিক্ষাজীবনকে পরিচালিত করা যায়। আমার এবারে লেখা আমার তৈরি করা সেই মাইন্ড ম্যাপকে নিয়ে।

পড়াশুনা শেষ করে তারপর হয় চাকরি না হয় ব্যবসা, এই রকম চিন্তাধারা থেকে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বের হয়ে আসতে হবে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য তার শিক্ষা জীবন হচ্ছে অত্যন্ত মুল্যবান। পলিটেকনিক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বছরে, একজন শিক্ষার্থী তার জীবন গড়ার জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারে, যা চায় তাই পেতে পারে, যাকে প্রয়োজন তার কাছেই পৌছতে পারে। প্রত্যেক সফল ব্যাক্তিই তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কর্মঠ, বুদ্ধিমান এবং সৎ তরুনদের সান্নিধ্য কামনা করেন। তাদের মেধা এবং বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকেন। সেজন্য আমরা তরুন শিক্ষার্থীদের কদর এবং গুরুত্ব যুগযুগের ইতিহাস ঘাটলেই দেখতে পাই। কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তার এই শিক্ষা জীবনের গুরুত্বকে অনুধাবন করতে না পেরে অবহেলায় ৪/৬টি গুরুত্বপূর্ন বছর নষ্ট করে ফেলে। ছাত্রাবস্থায় কিভাবে নিজের কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করা যায় এবং ছাত্রজীবন শেষ করেই, ডিগ্রী পাওয়ার সাথে সাথেই কিভাবে চাকরি বাজারে প্রবেশ করা যায় তার ওপর আজকের এ লেখা । এখানে এমন সাতটি বিষয় আলোচনা করেছি, যেগুলো অনুশীলন করলে ছাত্র অবস্থায় নিজের কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতে পারবেন যে কোনো শিক্ষার্থী। এগুলো মেনে চললে ভবিষ্যতে থাকবে না কোনো হতাশা, সাফল্য তাকে ডাকবে হাতছানি দিয়ে, চিন্তা থাকবে না চাকরির বা ব্যবসার। ১. হার্ড স্কিলস:

যারা বিশ্ববিদ্যালয় বা পলিটেকনিকে পড়াশুনা করছেন, তাদের প্রত্যেকেরই ভাবনা যে, ‘চার বছর পরে আমি একজন গ্রাজুয়েট হবো বা একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হবো।’ এই পড়াশুনা অবস্থায় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, ভালো সিজিপিএ অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে যত কম সিজিপিএ, ততো বেশি পরিশ্রম এবং ভবিশ্যতে কষ্ট বা হতাশা আসতে পারে আপনার কর্মজীবনে। কিন্তু এ কথা বলা যাবে না যে, ভালো সিজিপিএ না পেলে একেবারেই কিছু হবে না। শুধু মাথায় রাখা প্রয়োজন, সিজিপিএ যতো ভালো হবে, আপনার অর্জনটা ততই এগিয়ে থাকবে। তাই চারটা বছর পরিশ্রম করুন, ভালো একটা সিজিপিএ অর্জনের জন্য।

১.১ কিভাবে ভালো সিজিপিএ অর্জন করবেন:

# নিয়মিত ক্লাশ করা এবং শিক্ষকদের লেকচার চোখ, কান ও মন দিয়ে শোনা এবং যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো সেটা কে স্মরণে রেখে প্রশ্ন করা,   শিক্ষকদের কাছ থেকে উত্তর বুঝে নেয়া এবং বাড়িতে গিয়ে গবেষনা করা।

# ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব তাদের সাথেই করতে হবে যারা ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন এবং ভলো কাজের জন্য উদ্দ্যমী।

#লাইব্রেরী হতে হবে প্রিয় জায়গার মধ্যে একটি।

#গ্রুপ ভিত্তিক পড়াশুনা করতে হবে এবং যে বিষয়টি ভালো বুঝি সেটা আপনার বন্ধুদের বুঝাতে সাহায্য করতে হবে (Teach other to become Master) কনসেপ্ট।

২. টেকনিক্যাল স্কিলস বা কারিগরি দক্ষতা:

একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে কেউ যদি বলে যে, তার কারিগরি জ্ঞান নেই, তাহলে তিনি কিন্তু পিছিয়ে থাকবেন। কারন বিশেষজ্ঞরা জোড় দিয়ে বলার চেষ্টা করছেন ”বেকারত্ত্বের ভ্যাকসিন কারিগরি দক্ষতা”। সেজন্য প্রত্যেক গ্রাজুয়েটের এক হাতে থাকবে তার সনদ, অন্যদিকে থাকতে হবে টেকনিক্যাল স্কিলস বা কারিগরি দক্ষতা। এজন্য তার যেসব বিষয়ে দক্ষতা থাকা জরুরী-

প্রথমত, কম্পিউটার অফিস এপ্লিকেশনস তথা এমএস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট পুরোপুরি আয়ত্বে রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, বেসিক আইটি দক্ষতা যেমন ইন্টারনেট এন্ড ইমেইল বিশেষ করে কিভাবে সহজে এবং দ্রুততার সাথে গুগলকে ব্যবহার করা যায়, জিমেইলের ফিচারগুলো কে পরিপূর্নভাবে ব্যবহার করা যায়।

তৃতীয়ত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুক, লিংকডইন, ইউটিউব ইত্যাদি কিভাবে কাজ করছে তার জ্ঞান অবশ্যই তাকে রাখতে হবে, বিশেষ করে বর্তমানে এফ-কমার্সে বা ই-কমার্সের যুগে এই বিষয়ে ধারনা কম থাকলে চলবে না ।

চতুর্থ বেসিক ডিজাইনিং দক্ষতা বিশেষ করে ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটরের মতো বেসিক এডিটিং এর কাজগুলো অবশ্যই আয়ত্বে রাখতে হবে। এছাড়াও বেসিক এডিটিং স্কিলস যেমন ভিডিও এডিটিং, বেসিক এ্যানিমেশন এই প্রাথমিক দক্ষতাগুলো আত্মবিশ্বাসকে অনেকগুনে বাড়িয়ে দেবে।

৩. সফট স্কিলস:

মানুষের জীবন টিকে আছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে যোগাযোগের ওপর ভিত্তি করে। মানুষকে প্রতিনিয়তই যোগাযোগের ওপর থাকতে হয়, আদান-প্রদান করতে হয় তথ্যের। এই তথ্যের আদান-প্রদানে যদি ভুল হয়ে যায় তাহলে নিজের নির্ধারন করা লক্ষ্যে পৌঁছানো দুরূহ হয়ে পড়ে। সেজন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। লেখা, পড়া, কথা বলা, অন্যকে কনভিন্স করা, অন্যকে বোঝাতে পারা, রিস্ক নেয়া, সঠিকভাবে চিন্তা করা প্রভৃতি বিষয়গুলোই হলো সফট স্কিলস। এগুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে চাকরির বাজার কিংবা উদ্যোক্তাদের জগতে বেশী দূর আগানো সম্ভব হবে না। তাই সফট স্কিলস শক্তিশালী করতে প্রচুর চর্চা করতে হবে, এবং সেটা ছাত্রাবস্থাতেই।

৪. ল্যাংগুয়েজ স্কিলস বা ভাষাগত দক্ষতা:

আমরা অন্যের কাছে তথ্য পৌঁছাই ভাষার মাধ্যমে। নিজের অভিব্যক্তি, চাওয়া-পাওয়া অন্যের কাছে প্রকাশ করি এই ভাষার মাধ্যমেই। শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার প্রতি তো অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আঞ্চলিকতা ছাড়া শুদ্ধ প্রমিত বাংলা চর্চার পাশাপাশি অন্য একটি ভাষার ওপর ভালো দক্ষতা রাখতে হবে। এটি হতে পারে চাইনিজ, জার্মান, ইংলিশ বা অন্য কিছু। অন্য আরেকটি ভাষা আয়ত্বে রাখলে, যারা শুধু একটি ভাষায় দক্ষ তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকা যাবে। যে যতো বেশি ভাষায় দক্ষতা রাখবে, সে ততো এগিয়ে থাকবে।

৫. ওপেন টু লার্ন এপ্রোচ:

বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সবকিছুই রয়েছে হাতের ছোট্ট একটি ডিভাইসে। এক ক্লিকেই চলে যাওয়া যাচ্ছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। এখন বিভিন্ন জায়গায় ফ্রী বা অল্প খরচে ওয়ার্কশপ, সেমিনার, বুট ক্যাম্প, ফেস্টিভ্যাল, কনফারেন্স, সিম্পোজিয়াম হচ্ছে। আমরা সোশ্যাল মিডিয়াতে সেগুলো দেখতে পাচ্ছি, বা নোটিফিকেশন পাচ্ছি কিন্তু আমি কখনো সেগুলোতে অংশগ্রহণ করছি না। এটা আমাকে পিছিয়ে রাখছে অন্যদের থেকে। ওপেন টু লার্ন এপ্রোচ হচ্ছে এটাই। মনে রাখতে হবে নিজের নলেজ ব্যাংক যতো সমৃদ্ধ হবে, সুযোগের সংখ্যা ততো বৃদ্ধি পাবে কারন প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনেই অনেক সুযোগের হাতছানী থাকে কিন্তু জ্ঞান, দক্ষতার এবং সঠিক আচরনের অভাবে সেগুলো আমরা ছুয়ে দেখবারও সাহস করতে পারি না। কবর থেকে দোলনা পর্যন্তু আমাদের শেথার সময় তার মধ্যে শিক্ষা জীবনের ১০/১২টি বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।

৬. একজন মেন্টর খুজে নেয়া:

‘ফাইন্ড এ মেন্টর’ ধারণাটি অনেক পুরনো। এক্সপার্ট কাউকে মেন্টর হিসেবে বেছে নিতে হবে যার কাছে সে যেকোনও বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারবে। যোগাযোগের এ যুগে সেরকম কাউকে খুঁজে বের করা কঠিন কিছু না। সাফল্য পেতে হলে এরকম আদর্শ কাউকে খুঁজে নেয়া দরকার। হয়তো একদিনেই এরকম কাউকে পাওয়া যাবে না, কিন্তু চেষ্টা করলে পাওয়া সম্ভব। তার পরামর্শ, নেটওয়ার্ক, অভিজ্ঞতা, সাহায্য আপনাকে অনন্য এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।

৭. অভিজ্ঞতা:

আমাদের অনেকের মনে হয়, আমি তো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি, আমিতো কোনো চাকরি বা কাজ করিনি। আমি অভিজ্ঞতা কোথা থেকে পাবো? কিন্তু একজন মানুষ চাইলে তার শিক্ষাজীবনে অসংখ্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। যেমন: বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সংগঠন ও ক্লাব থাকে। সেখানে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ইভেন্ট হচ্ছে। সেখানে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে তাদের সাথে কাজ করে অসাধারণ অভিজ্ঞতার পাশাপাশি অর্জন করা যাবে প্রশংসাপত্র। পড়াশুনা চলাকালীন অনেক সংগঠন পার্ট-টাইম, ফুল-টাইম বা চুক্তিভিত্তিক কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে, সেখান থেকেই অর্জিত হতে পারে দারুণ সব অভিজ্ঞতা।

ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Practice Makes Perfect- অনুশীলনে সবই সম্ভব”। উপরোক্ত সাতটি বিষয় যদি কোনো শিক্ষার্থী ছাত্রাবস্থায় অর্জন করতে পারে পর্যাপ্ত অণুশীলনের মাধ্যমে, তবে নিশ্চিত করেই বলা যায় তার পরবর্তী জীবনে সফলতা হাতছানি দিয়ে ডাকবে, তাকে চিন্তা করতে হবে না কাজ নিয়ে।

এই বিষয়ে ভিডিওর মাধ্যমে জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন Start ______________________________________________________________________________________________________ লেখকঃ কে এম হাসান রিপন, নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট

31950238_10155880372466888_2319476047160016896_n

Am I able to identify my negative symptoms?

In our day to day life, we will find few people around us who always find a cause to say No whatever we do. They always have a bad cause to go against whatever we do and say and at a certain point, we start to avoid them. The most important and surprising part is that even the person with a negative attitude even can’t realize that he/she has been identified with Negativity Syndrome. The person with this syndrome usually fail to identify the reason for which peoples are avoiding them but this avoidance gives them a sad feeling which makes them unhappy. Slowly they lose confidence and at the end of the day it kills their mind, career, potentialities, and health and so on. Who is the negative person? We may go through the following situation:

A man always dreamt to go for a vacation and suddenly he made a plan and on the very morning while he was just about to leave for vacation then the rain came and he canceled his plan. This man was in the permanent resident of the negative zone. Somehow he found a way to cancel the program. He didn’t hesitate to find a cause. Can we realize how this simple story affected his life? The outside circumstances affected him and he was biased too.

Sometimes the person himself remains unaware of this attitude. Maybe he thinks whatever he is doing is right. But in reality, this attitude is killing his personality and losing peoples love. Slowly he becomes alone and he suffers. Alongside in the same situation, the man could imagine the same situation differently. He could feel happy seeing the rain outside and made the journey a remarkable one.

 

Through our Personal Qualities, we can make our life happy

In the same way, we can see the life journey differently. In this life, we meet with people, work, live with family and finally, suddenly we left this beautiful world. Through our Personal Qualities we can make our life happy, we also can extend the hand of cooperation to all and finally we can also make others happy through our personality traits and works. To get real happiness we must become of the solution to the problem, not the problem

Can we just think for a while what our purpose of life is? Are we here just to think of oneself?  Or find bad things? Maybe the answer would be no. But the fact is that Almighty has sent us in this world for a purpose. The purpose is to serve HIM, follow his commandment and his commandment is for the betterment of humanity. It doesn’t take much to make others happy or make your life happy. It just needs a positive mind and willingness to make a lovable society.