Presentation2

অনুশীলনে সবই সম্ভব

Practice Makes Everything Perfect

মানুষ হিসাবে আমরা সব সময় নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ হয়ে থাকতে পছন্দ করি। ভিন্ন ভিন্ন দক্ষতা আমার ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত হবে এটাই আমার সব সময়ের কাম্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো নতুন কিছু শেখা বড়ই কঠিন, বিশেষত শুরুতে যখন আমরা শিখতে আরম্ভ করি এবং বার বার ভুল করি, তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা ভুলের কথা মনে করে মাঝ পথে ছেড়ে চলে আসি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নতুন কিছু শেখার একমাত্র উপায় হলো নিরলশ অনুশীলন, বার বার ভুল করা এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকা যে একই ভুল পুনরাবৃত্তি না করা।

কানাডিয়ান সাংবাদিক, লেখক ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল তার বিখ্যাত বই আউটলিয়ারস এ বলেছেন ”কোন একটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হতে প্রয়োজন দশ হাজার (১০,০০০) ঘন্টার অনুশীলন”। আরও একধাপ বাস্তববাদী হয়ে লেখক জোশ কাউফম্যান তার বই  দ্য পার্সোনাল এমবিএ-তে উল্লেখ করেছেন “কিছুই পারি না থেকে মোটামুটি পারি” পর্যন্তু আসতে প্রয়োজন প্রায় ২০ ঘন্টার অনুশীলন – যা প্রতিদিন ৪৫ মিনিট করে এক মাসের নিয়মিত অনুশীলন।

সুতরাং কোন একটি বিষয়ে আমি “মোটামুটি ভালো” বা “বিশেষজ্ঞ” যেটাই হতে চাই না কেন তার জন্য আমার প্রয়োজন হবে অনুশীলনের। বিভিন্ন গবেষনা বলছে অনুশীলন তাদের জন্যও অত্যন্ত কঠিন এবং প্ররিশ্রমের যারা ইতিমধ্যে কোন একটি বিষয়ে উচ্চ দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং নতুন আরেকটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চাচ্ছেন। আর একারনেই সম্ভবত অভিজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই নতুন কোন দক্ষতা অর্জনে কিছুটা অনিহা কাজ করে। তারা মনে করেন কোন বিষয়ে সক্ষমতা অর্জনের জন্য পড়া এবং আলোচনাই যথেষ্ট। আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির দিকে তাকালেই আমরা এর ছাপ খুব ভালোভাবেই দেখতে পাই। ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রী প্রদান করা হচ্ছে কে কত ভালোভাবে মুখস্ত করেছে তার উপর ভিত্তি করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এটা সবাই একবাক্যে স্বীকার করছেন যে পড়া এবং আলোচনার পাশাপাশি হাতেকলমে শেখা এবং সেটা বার বার অনুশীলন না করলে দক্ষতা কখনই সম্ভব নয়। তাই দক্ষতা বিকাশ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই মনে পড়ে আমার সাইকেল চালানো শেখার কথা। মাত্র তিন বছর আগে সাইকেল চালানো শিখেছি। ছোটবেলা থেকেই শখ ছিল সাইকেল চালানোর। সেজন্য সাইকেল বিষয়ে অনেক পড়েছি, কি কি ধরনের সাইকেল আছে, সাইকেলের ওয়ার্ল্ড রেসিং, সাইকেলের বিভিন্ন পার্টস এমনকি বন্ধুদের আড্ডায় সাইকেল বিষয়ে কতো আলোচনা শুনেছি কিন্তু কোনদিন সাইকেলের উপর উঠে চালানোর সাহস করিনি। তিনবছর আগে আমার এক বন্ধুকে বলার পর ও বললো কোন ব্যাপার না মাত্র দুই ঘন্টায় তুই সাইকেল চালাবি। পরবর্তী দিন আমার বন্ধু তার সাইকেল নিয়ে আসলো এবং শুরু হলো প্রশিক্ষন। ১০ বছর বয়সে যেটা করার কথা সেটা করলাম অনেক বছর পর এসে। যেহেতু সাইকেল নিয়ে আমার আগেই ধারনা ছিল এবং আমার বন্ধুর সুদক্ষ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সত্যি সত্যিই আমি চার ঘন্টার মাথায় সম্পূর্ন একা সাইকেল চালালাম। তারপর সাতদিন আর সাইকেল বের করিনি ভয়ে। হঠাৎ একদিন মনে হলো আজ একাই সাইকেল বের করে চালাবো। প্রচন্ড ভয় নিয়ে বের করলাম এবং আস্তে আস্তে চালালাম। ৩০ দিনের ব্যবধানে একদম পাকা সাইকেল চালক হয়ে গেলাম এবং অনায়াসে দ্রুতগতিতে চলতে থাকা রিকশার সাথে নিজে নিজে প্রতিযোগিতা করে জিতেও গেলাম। আহ! কি সুখ!

সাধারণত জন্মগতভাবেই আমাদের একটি গুন আছে যে কোন একটি বিষয় মন দিয়ে পড়লে এবং বন্ধুদের সাথে আলাপ করলেই সে বিষয়ের একটি স্পষ্ট ধারণা আমরা দ্রুত উপলব্ধি করতে পারি। কিন্তু ভুল হয় তখন, যখন আমরা মনে করি যে হয়তো আমি এখন বাস্তবে সেটা প্রয়োগ করতে পারবো এবং সেটা করতে গিয়েই আমাদের ভুল ভেঙে যায়। আসলে জ্ঞান এবং দক্ষতা কখনই এক জিনিস নয়। বাস্তবতা হ’ল কোন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জনের পর হাতে-কলমে করে সেটা বার বার অনুশীলন করতে হবে, তারপর সেই দক্ষতা প্রয়োগ করার মাধ্যমে বন্ধু বা অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে মতামত খোলা মনে গ্রহন করতে হবে।  অভিজ্ঞদের মতামত অনুসারে তা পরিমার্জন বা পরিবর্ধন করে আবার নিরলশ অনুশীলন করতে হবে যা ২০ থেকে ১০,০০০ ঘন্টা পর্যন্ত হতে পারে।

আমি আবারও স্বীকার করছি এটি করা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। শুধু দরকার উন্নত মানসিকতা। কেননা একমাত্র উন্নত মানসিকতাই আমাদেরকে ‘না’ কে ‘হ্যা তে রুপান্তর করতে শেখায়। নতুন কিছু শেখার অর্থ হলো প্রাথমিকভাবে নিজেকে একদম আনাড়ি ভাবা, প্রয়োগের মাধ্যমে ভুল করা, মতামত নিয়ে সংশোধন করা এবং বার বার চেষ্টা করা। নিঃসন্দেহে এতগুলো ধাপ অনুসরণ করা অস্বস্তিকর। যদিও আমরা জানি, যেই দক্ষতাকে আমি আমার ক্যারিয়ারের সাথে যুক্ত করতে চাচ্ছি সেটা অত্যন্ত মূল্যবান, তবুও ২০ থেকে ১০,০০০ ঘন্টার কথা মনে হলেই চেষ্টা করা বন্ধ করে দেই এবং পুরানো অভ্যাসে ফিরে আসি। অনুশীলনের গুরুত্ব আমরা সবাই জানি কিন্তু প্রশ্ন হলো কীভাবে আমরা এটিকে সম্ভব করতে পারি? এই বিষয়ে বিষেজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তা নীচে তুলে ধরলামঃ

  • নিজেকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করতে হবেঃ নতুন কিছু শেখা এবং দক্ষতা অর্জন করা মানেই হলো অনেক পরিশ্রম করা, এটিকে মেনে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে এবং শেখাটা যে কঠিন হবে সে বিষয়ে নিজের কাছে সৎ থাকতে হবে বিশেষ করে যখন আমি নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকি।
  • নিজের সীমাবদ্ধ অনুধাবন করতে হবেঃ আমরা চাইলেই সবকিছুতে একেবারে দক্ষ হতে পারবো না। এটাই বাস্তবতা। তাই যে বিষয়ে আমি দক্ষ হতে চাচ্ছি সে বিষয়ে নিজেকে বার বার অনুশীলনের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে হবে। যখন বুঝবো যে আমি ভালোভাবেই দক্ষতা অর্জন করেছি তখন নতুন আরেকটি বিষয় নিয়ে অনুশীলন শুরু করবো।
  • সময়ের প্রতি যত্নবান হতে হবেঃ অনুশীলনের জন্য প্রতিদিন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে। অনেকে ক্যালেন্ডারে  সময় ব্লক করে রাখেন বা আরো অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেন যার অর্থ হলো নিজের এবং সময়ের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা। মনে করতে হবে এটি একটি প্রজেক্ট এবং আমি তার প্রধান হিসেবে কাজ করছি।
  • সাথে কাউকে পেলে মন্দ হয় নাঃ অনুশীলনের জন্য একে অপরকে দায়বদ্ধ রাখতে সহপাঠিদের বা সহকর্মীদের সাথে কাজ করলে দ্রুত ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

সবশেষে বলতে ইচ্ছে করছে আমার সেই প্রিয় ট্যাগলাইন অনুশীলনে_সবই_সম্ভব। মাত্র তিনটি শব্দ কিন্তু মন থেকে অনুধাবন করার চেষ্টা করলে দেখবো এর গভীরতা বিশাল। আসলে এটি বিশ্বাস করার ব্যাপার। আর কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদুর। আসুন আজ থেকেই আমরা আবার বিশ্বাস করি কঠিন বা অস্বস্তিকর হলেও এটা সত্যি ”অনুশীলনে_সবই_সম্ভবশেষ করতে চাই একটি প্রশ্নের মাধ্যমে আপনি এখন কোন নতুন দক্ষতা অনুশীলন করার কথা ভাবছেন?

উত্তরটি কমেন্টে লিখে পাঠিয়ে দিন। আর যদি আপনার এই দক্ষতা অর্জনে আমি বা আমাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট কোন কাজে আসতে পারি তাহলে নিশ্চিন্তে আমাদের লিখে বা ফোন করে জানাতে পারেন নীচের দেয়া তথ্যে: ad@bsdi-bd,org বা +৮৮ ০১৭১৩ ৪৯৩ ২০৬

Learn How Perfect Practice Makes Perfect

 



n-education-a-20170615-870x569

জাপান হঠাৎ করেই আজকের উন্নত জাপান হয়নি! জেনে নিন

(১) জাপানের স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিদিন তাদের শিক্ষকদের সাথে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে তাদের স্কুল পরিষ্কারে সহায়তা করে। যা তাদের একটি পরিচ্ছন্ন জাতি হিসেবে চিহ্নিত ও প্রতিষ্ঠিত করে।

(২) জাপানে আবর্জনা ক্লিনারদের হেলথ ইঞ্জিনিয়ার বলে, তারা ৫০০০-৮০০০ ডলার মাসিক বেতন পায়।

(৩) জাপানীরা রাস্তায় ময়লা ফেলে না, তাদের ধূমপায়ীরা ব্যাগে করে ছাইদানি নিয়ে ঘুরে, জাপানের রাস্তায় যে সিগারেটের ছাই পর্যন্ত ফেলা নিষিদ্ধ!

(৪) জাপানের কোন প্রাকৃতিক সম্পদ নেই এবং প্রতি বছর শত শত ভূমিকম্প হয় তবু তারা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।

(৫) হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্র কতৃক পারমানবিক বোমা হামলার মাত্র ১০ বছরের মাথায় হিরোশিমা তার আগের অবস্থানে ফিরে আসে।

(৬) জাপানে রেস্টুরেন্ট ও ট্রেনে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ।

(৭) জাপানে শিক্ষাজীবনের প্রথম ৬ বছর শেখানো হয় নৈতিকতা ও আচার-ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয় যাতে কিভাবে মানুষের সাথে আচার-ব্যবহার করতে হবে তা শিক্ষার্থীরা জানতে পারে।

(৮) বিশ্বের একটি ধনী দেশ হয়েও তারা ঘরে কোন কাজের মানুষ রাখেনা। সকল কাজের দায়িত্ব মা, বাবাকে নিতে হয় আর সহযোগিতা করে ছেলে-মেয়েরা।

(৯) জাপানে শিক্ষাজীবনের প্রথম ৩ বছর কোন পরীক্ষা হয়না। কারণ তারা মনে করে লেখাপড়া চরিত্র গঠনের জন্য, পরীক্ষা নেয়ার জন্য নয়।

(১০) জাপানিরা খাবার অপচয় করে না, রেস্টুরেন্টে গেলে দেখবেন। মানুষ যার যতটুকু দরকার এর বেশি নেয় না ও খায় না।

(১১) জাপানের ট্রেন দেরি করে আসার গড় সময় বছরে ৭ সেকেন্ড! তারা প্রতিটা সেকেন্ডের হিসেব করে চলে।

(১২) জাপানে শিক্ষার্থীদের খাওয়ার জন্য আধ ঘন্টা বিরতি দেয়া হয় যা সঠিক হজমের জন্য প্রয়োজনীয়। কারণ তারা ছাত্র-ছাত্রীদের জাতির ভবিষ্যত মনে করে থাকে।

(১৩) দীর্ঘজীবী মানুষের তালিকায় জাপানের অবস্থান তৃতীয়। গড়ে প্রায় ৮৩ বছর বাঁচে জাপানিরা।

(১৪) জাপানিদের আত্মসম্মানবোধ খুব বেশি। সম্মানের খাতিরে জীবন বিলিয়ে দেওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে দেশটিতে। জাপানের বেশ কয়জন প্রধানমন্ত্রী অল্প কয়টি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, কথা দিয়ে সে কথা রক্ষার ব্যাপারে তারা এতটাই কঠোর।

(১৫) টাইটানিক জাহাজডুবি থেকে যে কয়জন জাপানি বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছিলেন, দেশে ফিরে তাদের প্রবল জনরোষের সম্মুখীন হতে হয়। “সহযাত্রীদের বাঁচাতে যদি নাই পারলে, তবে তাদের সাথেই প্রাণ কেন দিলে না!” এই ছিলো জনতার আক্ষেপ!

(১৬) নির্ধারিত সময়ের পরও কাজ করার জন্য “ওভারটাইম” নামে একটি শব্দ প্রচলিত দুনিয়া জুড়ে রয়েছে, শুধুমাত্র জাপানে এই শব্দটির কোন অর্থ নেই। জাপানিরা স্বভাবগতভাবেই অফিসের সময় শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে কাজ নিয়ে। ঊর্ধতন কর্মকর্তার আগে অফিস ত্যাগ করার কথা কল্পনাতেও ভাবতে পারে না তারা, যত জরুরী তাড়াই থাকুক না কেন ঘরে ফেরার।

(১৭) সাধারণত আমাদের দেশে অফিসে ঘুমানো খুবই খারাপ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু জাপান এর সম্পূর্ণ উল্টো! জাপানে অফিসে ঘুমালে ভাবা হয় ঘুমন্ত ব্যক্তির ওপর কাজের প্রচুর চাপ ছিল। তখন বসের সামনে তার ভাবমূর্তি খারাপ না হয়ে আরও ভালো হয়!

(১৮) অনেক সময় সমস্যা মোকাবিলায় বা দুশ্চিন্তায় আরামের জন্য একক বিছানায় থাকার প্রবণতা চলে আসে। জাপান এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলায় ক্যাপসুল হোটেল তৈরি করে থাকে, যেখানে শুধু একটি বিছানার সমপরিমাণ স্থান রয়েছে। তবে এই ঘরে ওয়াইফাই সুবিধা রয়েছে। এই ক্যাপসুল হোটেল শুধু ছেলেদের জন্য তৈরি করা হয়।

(১৯) জাপান অনেক উন্নত দেশ। হয়তো ভাবতে পারেন তাদের জমি অনেক উর্বর। যেখানে প্রচুর ফসল ফলে। কিন্তু তা নয়। জাপানে শতকরা ৭০ ভাগ ভূমি হচ্ছে পাহাড়ি। এ ছাড়াও দেশটিতে ২০০-এর মতো আগ্নেয়গিরি রয়েছে!

(২০) জাপানে মোট প্রকাশিত বইয়ের ২০% হচ্ছে কমিকস বই।

(২১) সন্তান দত্তক বা পালক সন্তান গ্রহণতো পুরো বিশ্বেই রয়েছে। জাপানে মোট দত্তক গ্রহণের শতকরা ৯৮ ভাগের বয়স ২০-৩০ বছর! অর্থাৎ তারা বয়স্কদের দত্তক গ্রহণ করে! ব্যবসায়িক পরিবার কিন্তু ছেলে নেই, তখন তারা দত্তক নেয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে, যদি নিজের ছেলে বাবা-মা রাখতে অক্ষম হয় তবে অন্য একজনের ছেলে নিয়ে আসে।

(২২) জাপানে শ্রম আইন বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভাল। এজন্য কোন কোম্পানি চাইলেই তার কর্মী বিদায় করতে পারে না। এজন্য মোটা অঙ্কের টাকা গুণতে হবে! তাই বলে কোম্পানির মালিক পক্ষরাও কিন্তু বোকা নন। তারা যে কর্মীকে ছাঁটাই করতে চান তাকে বিরক্তিকর কাজ দিয়ে থাকেন। হতে পারে সারাদিন টিভি পর্দার সামনে বসিয়ে রাখা। এসবের জন্য আবার আলাদা শাস্তি কক্ষ রয়েছে।

(২৩) জাপানে স্বাক্ষরতার হার শতকরা ১০০ ভাগ। তাদের পত্রিকায় আমাদের দেশের মত সংবাদ দূর্ঘটনা, রাজনীতি, সিনেমার সংবাদ ইত্যাদি ছাপানো হয় না। সেখানে শুধু প্রয়োজনীয় ও আধুনিক জগৎ সম্পর্কে

*******************************************************************************************************************************

(1) Japanese school students – students have made their school clean up for at least 15 minutes with their teachers, which also established them as a clean nation.

(2) in Japan, the garbage cleaner in Japan says they get $ 5000-8000 monthly salary.

(3) Japanese people don’t throw trash on the streets, their smokers take a bag of ash, who is banned in the streets of Japan to the ashes of the cigarette!

(4) Japan has no natural resources and hundreds of earthquakes every year, they are the third largest economy in the world.

(5) in Hiroshima, the United States of the United States came back to the previous position in the 10-Year-old head of the 10-Year-old.

(6) is banned using mobile phones in Japan and train in Japan.

(7) in Japan, the first 6 years of education is taught to learn about ethics and sizes – how to use the people to use to use a human-to-use people.

(8) the world has become a rich country in the world and they do not have any work in the house. All work has to take care of the parents, and cooperate with boys and girls.

(9) in Japan, the first 3 years of education is not a test. Because they think it is not for the form of writing, not to be tested.

(10) Japanese food does not waste food, you will see the restaurant. People who don’t take much more than they don’t take it.

(11) the average time for Japan’s train is 7 seconds in a year! They are in every second time.

(12) a half-hour break to eat students in Japan are necessary for the right to be accurate. Because they remember the future of the students of the students.

(13) long live in the list of Japan’s locations in the list of Japan. 83 years live in Japan.

(14) the self-respect of Japanese is too much. Many examples of living in the country have a lot of examples in the country. How Many Prime Minister of Japan would have failed to fulfill a few electoral promises in Japan. It’s so hard to keep talking about what he has left.

(15) from titanic jāhājaḍubi, how many Japanese people have to come back to the country, back to the country. If you could not save the public, why don’t you have the life with them!” This was the penance of the people!

(16) a word in the name of the “overtime” to work in the same time, there is no meaning of this word in Japan. The Japanese nature is after the end of the office after the end of the office. In the work of the work, it can’t even think about the office to leave the office before the senior officer, as much as I do not go to the home.

(17) usually sleeping in our country in our country. But the whole of Japan is completely upside down! In Japan, there was a lot of pressure on the sleeping person in Japan, and his attitude is better than sitting in front of the day!

(18) a lot of time to deal with a problem with a problem in the face of a long time, in Japan, the capsule hotel creates a capsule hotel, where there is only a bed of a bed. There are wifi benefits in this home. This Capsule Hotel is only made for boys.

(19) Japan is a lot of developed countries. May think their land is very fertile. But it is not a lot of crops. But it is not 70 percent of the land. In Japan, 200 % of the land is in the country. – there’s a volcano like this!

(20) 20 % of comic books in Japan is the book of comic books.

(21) child adoption or foster children are in the whole world. 98 percent of the total adoption of total adoption in Japan is 20-30 years old! That’s the adoption of elderly people! Business family is not a boy but they adopted. in many cases, if you are unable to keep your son parents, it comes to another boy.

(22) the labor law in Japan is better than other countries in the world. If any company wants to leave his staff, he will not be able to count the fat money for this! So, the company’s owner is not a fool, but they are not stupid. They want to keep the worker’s work in front of the tv screens. It may be a separate punishment for the whole day.

(23) the signature of Japan is 100 percent. in their magazine, the news of the news, politics, cinema, etc. Do not have to be printed in the news of the world. There is only the necessary and the modern world. The news was printed.

(collected)

1

ভিডিও প্রোফাইল আছে তো?

সিভি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম কাজ প্রত্যাশী এবং কাজদাতার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য। কাজদাতা সিভির মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেন কাজ প্রত্যাশীর জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কর্মক্ষমতা সম্পর্কে। কিন্তু এমনও অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে অত্যন্ত চমৎকারভাবে সিভিতে একজন কাজ প্রত্যাশী নিজেকে উপস্থাপন করেছেন এবং কাজদাতা মুগ্ধ হয়ে সাথে সাথেই তাকে ইন্টারভিউর জন্য ডাক দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে সম্পূর্ন উল্টো। কাজ দেবার আগে প্রত্যেকেই জানার বা দেখার চেষ্টা করেন কাজ প্রত্যাশীর Attitude, Communication Skills (Specially Body Language), Presentation Skills, Voice Tone, Emotion, Reaction Ability, Confidence ইত্যাদি। যেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সিভির মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। আর সেজন্যই বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ দেবার আগে যাচাই করে নিতে চান। আর সেজন্যই বর্তমান সময়ে ভিডিও প্রোফাইল (Video Profile) অত্যন্ত জরুরী আরেকটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আমি প্রায় ১০ ঘন্টা বিভিন্ন দেশী-বিদেশী ভিডিও প্রোফাইল রিসার্চ করে এই আর্টিক্যাল তৈরি করেছি যেখানে আমি ভিডিও প্রোফাইলের গুরুত্ব, কিভাবে করা যায়, কি কি থাকা উচিত এবং এবং স্যাম্পল স্ক্রিপ্ট তুলে ধরেছি। আশা করি সম্পূর্ন আর্টিক্যালটি আপনারা পড়বেন।

আমি আগেই বলেছি ভিডিও প্রোফাইল বর্তমান সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারন আমার Body Language, Presentation Skills, Voice Tone, Emotion, Confidence আমি কাগজের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি না যা আমি অনেক সহজেই ভিডিও প্রোফাইলের মাধ্যমে করতে পারি যা একজন কাজ প্রত্যাশী অনায়াশে দেখে নিতে পারেন। ভিডিও প্রোফাইল শুধু চাকরির জন্য নয়, তরুন উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনার একটি ব্যবসায়িক ধারনা আছে এবং আপনি চাচ্ছেন সেটি আপনার কাঙ্খিত ইনভেস্টারদের কাছে পৌছে যাক। যেহেতু ভিডিও প্রোফাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে যায় পৃথিবী এ প্রান্ত থেকে ওপর প্রান্তে, তাই সহজেই পৃথিবীর কোন না কোন প্রান্ত থেকে আমার জন্য সুযোগ তৈরি হয়ে যেতে পারে।  ভিডিও প্রোফাইল কিছু কিছু পেশার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সেই সমস্ত পেশা যেখানে যোগাযোগ সক্ষমতা বেশী প্রয়োজন। যেমন শিক্ষতা, মার্কেটিং, সেলস, মিডিয়া এজেন্সি, কমিউনিকেশন বিশেজ্ঞ ইত্যাদি।

নীচে আমি একটি স্যাম্পল ভিডিও প্রোফাইলের স্ক্রিপ্ট তৈরী করেছি যেখানে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাশ করা একটি ছেলে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। 

Start with a Question? In this global economy your organization needs someone who can understand how things are working in different parts in our country? You need someone who can understand the core business values of your company. Also you need someone who can communicate with your clients through effective media.

Greetings & Very Brief Introduction: “Assalamualaikum! My name is K M Hasan Ripon and I am that person. I have just done my MBA degree major in Marketing from Daffodil International University. I am looking for a Marketing Executive position with a fast growing high energy company.

Brief on Past experience: “From the past 5 years during my university life, I have been involved with many clubs in our university and some of the reputed youth organizations of the country where I worked as one the key members. Also, I have completed my internship in the country’s one of the reputed IT companies to manage the external communication with the prime stakeholders and partners.”

What I did in my last experience: “During my internship I prepared and assisted the communication between many high profile clients in the national and international arena and the best & most brilliant professionals in the IT sectors.”

My Unique selling points: “I have been told by many of my friends that I have limitless energy, High sense of Humor and Smile which makes me unique from others. I am a multilingual person. I can Speak and Understand Bangla, English, and Hindi. I have also traveled to 10 countries around the world.  

Closing Statement: If you are looking for a highly energized, focused, dedicated, self-motivated individual with an entrepreneurial mindset, I am your Candidate!

উপরের স্ক্রিপ্টে কে এম হাসান রিপন তার ভিডিও প্রোফিইল শুরু করেছেন কয়েকটি প্রশ্ন দিয়ে। তারপর শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তৃতীয় অংশে তার পূর্বের অভিজ্ঞতার বর্ননা দিয়েছেন। ছতুর্থ অংশে তিনি কি ধরনের কাজ করেছেন তার বিবরন দিয়েছেন। ৫ম অংশে তিনি বলবার চেষ্টা করেছেন তার অনন্য গুণগুলো। এবং শেষ অংশে তিনি ইতি টেনেছেন কেন আপনি তাকে কাজ দেবেন।

ভিডিও প্রোফাইল তৈরী করার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবেঃ

  • মনে রাখতে হবে ভিডিও প্রোফাইল হচ্ছে একধরনের ইন্টারভিউ যার মাধ্যমে আপনি কাজ দাতার সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি করছেন। তাই যতটা সম্ভব কম সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে কেন আপনাকে কাজের সুযোগ দেয়া হবে।
  • ভিডিও প্রোফাইলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উপস্থাপন এবং কন্টেন্ট। তাই সবারই উচিত পর্যাপ্ত গবেষনা করা।
  • ভিডিও প্রোফাইল সাধারনত ১ খেকে ২ মিনিটের মধ্যে হতে।
  • অবশ্যই এমন জায়গায় ভিডিও প্রোফাইল করতে হবে যেখানে শব্দ নিয়ন্ত্রিত, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা আছে।
  • সঠিক স্ক্রিপ্টিং এবং ১/২ মিনিটের মধ্যে উপস্থাপন করার জন্য যথেষ্ঠ পরিমানে অনুশীলন করা দরকার।
  • ভিডিও প্রোফাইলে বডি ল্যাংগুয়েজ অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে আপনার পোষাক-পরিচ্ছদ, হাসি, দৃষ্টি সংযোগ অত্যন্ত জরুরী।৬. আপনার দক্ষতার বিশাল তালিকা উল্লেখ না করে যে দক্ষতাগুলো প্রয়োজন শুধুমাত্র সেগুলো উল্লেখ করুন।

পরিশেষে বলতে চাই ভিডিও প্রোফাইল অত্যন্ত জরুরী বর্তমান সময়ে। আপনার ক্যারিয়ারে নতুন কিছু যোগ করুন। সবাই সিভি নিয়ে ব্যস্ত এবং আপনিও। চিন্তা করুন আপনি যদি আপনার কাজদাতাকে কভার লেটারের সাথে সিভি এবং YouTube এ আপলোড করা আপনার ভিডিও প্রোফাইলের লিংক দিয়ে দিতে পারেন, তাহলে আপনি অবশ্যই এগিয়ে থাকলেন অন্যদের থেকে। বর্তমান সময়ে সবাই দেখতে চায় আপনি কতটুকু আধুনিক।

ভিডিও প্রোফাইল নিঃসন্দেহে নতুন কিন্তু কঠিন কিছু নয়। যার হাতেই স্মার্ট ফোন আছে, সেই ভিডিও প্রোফাইল বানাতে পারবে। শুধু দরকার পর্যাপ্ত অণুশীলন। যারাই ভাবছেন ভিডিও প্রোফাইল বানাবার কথা, তারা যদি মনে করেন কোন প্রকার সহযোগীতার প্রয়োজন, তাহলে আমাদের প্রতিষ্ঠান http://skill.jobs এর সাথে যোগাযোগ করতে। ‍ বিশ্বাস করুন সম্পূর্ন ফ্রি কনসালটেশন!

IMG_E5677

প্রথম আলো- তারুণ্যের জয়োৎসব

প্রথম আলো গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে আয়োজন করেছিল তরুনদের জন্য জ্ঞান মেলা তারুন্যের জয়োৎসব। প্রায় ৫০০০ তরুন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুক্ত হয়েছিল এই আয়োজনে। বাংলাদেশের অন্যতম ক্যারিয়ার পোর্টাল Skill.Jobs তারুন্যের জয়োৎসবে আয়োজন করেছিল ব্যতিক্রমধর্মী কর্মশালা Meet the Career Doctor যেখানে আমি কে এম হাসান রিপন (নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট) আমন্ত্রিত অতিথী কর্মশালাটি পরিচালনা করি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২৫০ জন তরুন অংশ নিয়েছিল সেই কর্মশালাটিতে। আমিও চেষ্টা করেছি গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে কর্মশালাটি পরিচালিত করবার।

কর্মশালাটি আয়োজনের পেছনে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, যে তরুন ঐ কর্মশালাটিতে অংশ নিতে এসেছিল, তাকে অন্তত এইটুকু ধারনা দেবার যেন এই প্রতিযোগীতামূলক সমাজে টেকসই ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানা দরকার সেগুলোর অনুশীলন প্রক্রিয়াগুলোর চিত্র তুলে ধরা। এক্ষেত্রে আমি বিশ্বব্যপী প্রশংসিত টুলস “Mind Map” কে সবার সামনে তুলে ধরেছি এবং কিভাবে ৩৬০ ডিগ্রী এ্যাংগেলে এই Mind Map কে ব্যবহার করা যায় সেটা সল্প পরিসরে হাতে কলমে শেখাবার চেষ্টা করেছি। আমি Mind Map এর মাধ্যমে ৬টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সবার সামনে নিয়ে এসেছি যে বিষয়গুলো টেকসই ক্যারিয়ার গঠনে অত্যন্ত জরুরী। বিস্তারিত ০১৭১৩৪৯৩২৪৩

IMG_5620

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিডিও বিজুমি তৈরির সেমিনার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ক্যারিয়ারের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং কাঙখিত চাকরি বা উদ্যোক্তা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব গত ১০ বছর তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এই ক্লাবের ১০ বছর পূর্তিতে গত ২৩ এপ্রিল আয়োজন করা হয়েছিল দিনব্যাপী সিভি লিখন কর্মশালা। আমি কে এম হাসান রিপন (নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট) আমন্ত্রিত অতিথী বক্তা হিসেবে উক্ত সেমিনারে অংশগ্রহন করি। প্রায় ৩৫০ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতে আমি ভিডিও রিজুমীর উপর আমার অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করি।

আমরা সবাই জানি বর্তমান সময়ে ভিডিও রিজুমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন টুলস হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে বিশেষ করে চাকরিদাতারা প্রায় চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে তাদের ভিডিও রিজুমির লিংক দেখতে চান। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের অধিকাংশ গ্রাজুয়েট ভিডিও রিজুমিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না। আমার বক্তব্যের শুরুতেই আমি তিনটি সেরা ভিডিও রিজুমির স্যাম্পল ভিডিও শেয়ার করি এবং উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের সেগুলোকে ভালোভাবে অবজারভ করার অনুরোধ করি। তারপর প্রশ্ন করে বের করার চেষ্টা করি, সেখানে কোন কোন বিষয়কে ১ মিনিটের মধ্যে ভিডিও রিজুমির মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।  আমার ৪০ মিনিটের উপস্থাপনায় আমি চেষ্টা করেছি ছাত্রছাত্রীদের বোঝাবার যে বর্তমান সময়ে ভিডিও রিজুমির গুরুত্ব এবং কেন একজন গ্রাজুয়েটের ভিডিও রিজুমি থাকাটা প্রয়োজন। আমার আলোচনায় আমি যে বিষয় গুলো উল্লেখ করেছি তা হলোঃ

১. ভিডিও রিজুমি ‍কি এবং কেন প্রয়োজন

২. কোন কোন বিষয়গুলো ভিডিও রিজুমিতে উল্লেখ করতে হয়

৩. কাদের জন্য ভিডিও রিজুমি বেশী প্রয়োজন

৪. চাকরিদাতা কেন ভিডিও রিজুমি দেখতে চায় এবং কিভাবে আমি আমার ভিডিও রিজুমি শেয়ার করবো বা কাভার লেটারে উল্লেখ করবো।

৫. একজন গ্রাজুয়েট কতো সহজে নিজেই ‍ভিডিও রিজুমি তৈরি করতে পারে এবং কোন কোন বিষয় আমাদের নজরে রাখতে হবে ভিডিও রিজুমি তৈরির সময়।

পরিশেষে আমি সকলের উদ্দেশ্যে অনুশীলনের বিষয়টির উপর নজর দিতে বলি কারন একমাত্র পরিমিত অনুশীলনের মাধ্যমেই আমরা অর্জন করতে পারি আমাদের কাংখিত ক্যারিয়ার। বক্তব্যের শেষে আমরা সবাই মিলে একসাথে চিৎকার করে বলি “Practice Makes Perfect

IMG_5368

৫০ জন তরুনদের নিয়ে কক্সবাজারে ১০ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান

যুক্তরাজ্যের দাতব্য সংস্থা ইউনাইটেড পারপাস (United Purpose), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংগঠনের (IOM) আর্থিক সহায়তায় কক্সবাজারের উখিয়া জেলায় সামাজিক সমন্বয় বাস্তবায়নে একাধিক যুব ফোরাম গঠন করেছে। যার মূল লক্ষ্য হলো উখিয়ার বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিরসনে যুবদের প্রস্তুত করা যাতে তারা সংগঠিত হয়ে সমস্যা মোকাবেলার মাধ্যমে নিজেদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সাধন করতে পারে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুব ফোরামগুলো থেকে ৫০ জন উদীয়মান তরুনদের জন্য কক্সবাজারে ১০ দিন ব্যাপী “উন্নত কর্মসংস্থানের জন্য আইসিটি এবং কর্মদক্ষতা” শীর্ষক নিবিড় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহন করে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমী উক্ত প্রকল্পের প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমীর পক্ষ হতে আমি কে এম হাসান রিপন (নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট), প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষন কার্যক্রম পরিচালনা করি এবং প্রশিক্ষণে সার্বিক সহযোগীতার জন্য সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে আমার সাথে কাজ করেছে জনাব সোমেন কানুংগ (প্রতিষ্ঠাতা, ডি ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাব)। 
৫০ জন প্রশিক্ষণার্থীদের ২টি দলে (২৫+২৫) বিভক্ত করে ৫দিন করে মোট ১০ দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করি। আমাদের প্রশিক্ষণের মূল থিম ছিল ”শুধুই শুনবো না, করবো এবং অনুশীলন করবো”। এই পদ্ধতি অবলম্বনের ফলে আমাদের প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী হাতে কলমে কাজ শিখেছে এবং বাস্তবায়ন করেছে। 
পাচদিনের প্রশিক্ষনে আমরা মোট ৬টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি
১. মাইক্রোসফ্ট অফিস এ্যাপ্লিকেশন (ওয়ার্ড, এক্সেল এবং পাওয়ারপয়েন্ট)
২. উদ্যোক্তা হবার প্রারম্ভীক প্রস্তুতি (How to Generate Business Idea, How to make the idea into profitable Business, How to start the Business, What Legal preparation required, How to generate seed money for the business) 
৩. টেকশই ক্যারিয়ারের জন্য কর্মদক্ষতা 
আমরা আমাদের প্রশিক্ষণটি অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত Competency Based Training & Assessment মেথডকে অনুসরন করে পরিচালনা করেছি। এই মেথড ব্যবহারের মধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিদৃষ্ট বিষয়ে দক্ষতামান নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে তার ফোরামের অন্য সদস্যদের অনুরুপ প্রশিক্ষন প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলবে, এই প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হয়ে ১০দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে। 
pexels-photo-462360

আমি কি আত্ম মূল্যায়ন করতে পারি

আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি তখন একদিন আমার এক অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক আমাদের ক্লাশের সবাইকে কাজ দিলেন যেন আমরা আমাদের আত্ম মূল্যায়ন করি। যেখানে আমরা ১০০% সৎ মন্তব্য করবো। আমাদের সবার হাতে একটি করে কাগজ ধরিয়ে দিলেন। যেখানে অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল এবং সবগুলো প্রশ্নের পাশে হ্যা/না লেখা ছিল। যেহেতু আমরা অনেকে মিলে আত্ম মূল্যায়ন করছিলাম তাই আমরা একজন আরেকজনের টা মিলিয়ে ফরমটা পূরণ করছিলাম। আসলে সেটা আত্ম মূল্যায়ন কোনভাবেই হচ্ছিলনা। কারন মোটামুটি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হ্যা আসছিল। যাই হোক আমাদের স্যার খুব হতাশ হলেন এবং হালকা মোটিভেশন দিয়ে চলে গেলেন আর আমরা বেচে গেলাম। আমাদের সবার কাছেই মনে হচ্ছিল এই কাজটা করার কি দরকার ছিল। পরের বার কোন একটা ওয়ার্কশপে আমি অংশগ্রহন করি এবং সেখানেও এরকম একটি আত্ম মূল্যায়ন কিছু করতে দিয়েছিল এবং যথারীতি আগেরবারের মতোই কাজ হলো। তৃতীয়বার আরেকটি ওয়ার্কশপে আমাদের ফ্যাসিলিটেটর ড. রনজীৎ সিং মালহী ঐরকম একটি আত্ম মূল্যায়ন টাইপের ফরম ধরিয়ে দিয়ে বললেন সবাই বাসায় যান এবং দরজা-জানালা বন্ধ করে একদম একা বসে পূরণ করবেন। যাই হোক ততদিনে যেহেতু ক্যারিয়ার জিনিসটি বুঝতে পেসেছি তাই বাসায় এসে অনেকরাতে একা বসে নিজের কাছে ১০০% সৎ থেকে ফরমটি পূরণ করলাম। এবার দেখলাম বেশীরভাগ প্রশ্নের উত্তর ”না” আসছে। একটি বিষয় নিশ্চিত হলাম যে নিজের ক্যারিয়ারকে মজবুত করতে হলে এখনও ‍অনেক কাজ নিজের উদ্দ্যোগেই করতে হবে, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে আশানুরূপ ফলাফলের জন্য। সেই থেকে ব্যক্তিগত এবং কর্মক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সর্ট কোর্স, বিভিন্ন ক্লাব/এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হতে শুরু করলাম। আমি একটি কথা বিশ্বাস করি “God helps only people who work Hard” আমি অনেক পরিশ্রম করলাম এবং ফলাফলও পেয়ে গেলাম। এবং আমি এও বিশ্বাস করি এই পরিশ্রমের কোন নিদৃষ্ট সময়সীমা নেই, যতদিন বেচে থাকবো এটা চলতেই থাকবে।

ছাত্রজীবন থেকেই আসলে আমাদের আত্ম মূল্যায়ন করা উচিত। আত্ম-মূল্যায়নের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি আমরা কি কি জানি, কি কি জানিনা, আমাদের কি কি জানা উচিত ইত্যাদি।

নিন্মে ২০টি প্রশ্ন দেয়া হলো এবং অনুরোধ থাকবে একদম সচেতন হয়ে প্রশ্নগুলো উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবেন এবং যদি আপনার অন্তত ১৬টি প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যা হয় তাহলে আপনার ব্যক্তিগত গুনাগুণ অত্যন্ত শক্তিশালী।

সেল্ফ কুইজ হ্যা না
আমি নিজেকে ভালোবাসি    
আমার দক্ষতা সম্পর্কে অবগত    
আমি একজন Pro-Active মানুষ (আমি হুকুমের অপেক্ষায় থাকি না)    
আমি যা প্রতিজ্ঞা করি সেটা যেকোন মূল্যে রক্ষা করি    
আমি আমার পোষাকের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন    
আমি সবসময় আমার সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন    
আমি সময়ের মুল্য সম্পর্কে সচেতন এবং আমি অযথা সময় অপচয় করি না।    
আমি যা বলি বুঝে বলি! আমি যা পড়ি বুঝে পড়ি! আমি যা লিখি বুঝে লিখি।    
আমার কাজ কি সেটা আমি ভলো করে জেনে নেই এবং যদি না জানি তাহলে নিজ দায়িত্বে সেটা বুঝে নেই।    
আমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমার কাজ সম্পন্ন করতে পারি এবং সময়ের আগেই জমা দেই।    
আমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ বাছাই করে সম্পন্ন করতে পারি।    
আমি একজন টিম প্লেয়ার।    
আমি সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নিতে জানি।    
আমি মানুষের সাথে সম্মান বজায় রেখে কাজ করি    
আমি গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারি এবং প্রয়োজনে গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারি    
যেখানে প্রশংসার প্রয়োজন সেখানে আমি কার্পণ্য করি না    
আমি সবকিছুকেই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করি আগে    
”তুমিও জিতবে আর আমিও জিতবো” আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী    
আমি ব্যঙ্গাত্মকমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকি    
সবচেয়ে বড় কথা আমি হাসতে জানি    

নিচের ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ব্যপারটি আরো পরিস্কার হবে, আমি বিশ্বাস করি

https://www.youtube.com/watch?v=OYZKInRfHq4

দক্ষ হন!

pexels-photo-374016

আপনার স্বপ্নের কাজের জন্য ইন্টারভিউঃ ২০টি পয়েন্ট নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে

একটি কাজ পাওয়ার অন্যতম অংশ হচ্ছে ইন্টারভিউ। অনেকেই আছে, যারা প্রচুর মেধাবী। কিন্তু সঠিকভাবে ইন্টারভিউ না দিতে পারায় কাজ পাওয়া হয়ে ওঠে না। একটি সফল ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রয়োজন বিশেষ কিছু প্রস্তুতি, সফ্ট স্কিলস এবং কিছু জ্ঞান। আমরা প্রায় কমবেশী ১৬/১৭ বছর পড়াশুনা করার পর কাজ পাওয়ার বা কাজ চাইবার যোগ্যতা অর্জন করি। আবার অনেকে আরো আগেই সে যোগ্যতা অর্জন করে থাকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি কাজ পাওয়ার অনেক আগে থেকেই নিজের মনোভাব, দক্ষতা এবং জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে নিতে হয়। সাধারনত আমরা ইংরেজীতে যেটাকে বলি “Attitude, Skills & Knowledge (ASK) model”

আপনার পরবর্তী যেকোন ইন্টনভিউতে যাবার আগে আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন আসলে ইন্টারভিউ কতধরনের হয়ে থাকে। সাধারনত আমরা ৬ ধরনের ইন্টারভিউর দেখা পাই।

১. ট্রেডিশনাল ওয়ান টু ওয়ান ইন্টারভিউঃ আপনি যে কাজের জন্য আবেদন করেছেন তার পরিচালক যখন আপনার সাথে একান্তে আলোচনার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানান।

২. প্যানেল ইন্টনভিউঃ পতিষ্ঠানের একাধিক ব্যক্তিরা মিলে যখন আপনার সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন। এ ধরনের একটি প্যানেল সাধারনত ঐ প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারণী বা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের দক্ষ ব্যক্তিদের দ্বারা গঠন করা হয়।

৩. বিহেভিয়র ইন্টনভিউঃ এ ক্ষেত্রে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ঐ পদের সাথে মিলিয়ে পূর্বের কোন অভিজ্ঞতার আলোকে আচরনগত প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করে থাকেন যে ঐ সময়ে তার পদক্ষেপগুলো কি ছিল।

৪. গ্রুপ ইন্টনভিউঃ এ ধরনের ইন্টরভিউতে প্রতিষ্ঠান একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সকল কাজ প্রত্যাশীদের একসাথে ডেকে কাজ, প্রতিষ্ঠান এবং প্যাকেজ সম্পর্কে জানাবার পর প্রাথমিক সিলেকশন করে থাকেন।

.ফোন ইন্টারভিউঃ এখানে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ফোনের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেন যে তিনি কাজ এবং কাজের ধরন সম্পর্কে জানার পর তার মতামত কি। যদি সন্তোশজনক হয় তাহলে তাকে ফরমাল ইন্টারভিউতে ডাকবেন।

৬. লাঞ্চ ইন্টারভিউঃ অনেক সময় দ্বিতীয় ইন্টারভিউ হিসেবে কাজদাতা কাজ প্রত্যাশীকে ডাকেন যেখানে প্যানেলে নতুন আরো কিছু সদস্য কে যুক্ত করেন যারা প্রশ্নের মাধ্যমে দেখার টেষ্টা করেন আপনি কতটুকু দক্ষ কাজটির জন্য।

ইন্টারভিউ হচ্ছে কাজদাতা এবং কাজপ্রত্যাশীর মধ্যকার আলোচনা। একজন কাজপ্রত্যাশী চান নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান আর কাজদাতা চান একজন যোগ্য, দায়িত্ববান কর্মী। তাই দুজনেরই লক্ষ্য যেহেতু টেকসই সেহেতু টেকসই কিছু অর্জনে ইন্টারভিউ হচ্ছে আপানার প্রথম পদক্ষেপ। এ প্রথম পদক্ষেপটাই আপনাকে হয়তো বড় একটি ক্যারিয়ারের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Talent will get you in the Interview Door but Character will keep you in the Room”. এখানে ট্যালেন্ট বলতে বোঝানো হয়েছে যেসকল জ্ঞান এবং দক্ষতার কারনে আপনাকে একজন কাজদাতা কাজে লাগাবার উদ্দেশ্যে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু এখানে আমাদের সকলের স্মরন রাখা প্রয়োজন যে কাজের নিশ্চয়তা আমি পাবো আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ঠের কারনে। ইন্টারভিউতে আমার আত্মবিশ্বাস, কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে নিদৃষ্ট জায়গায় ব্যবহার করার ক্ষমতা, আচার-আচরন কে বিবেচয় রেখে আমাকে কাজ দেবার স্বীদ্ধান্ত নেওয়া হয়।       

ইন্টারভিউর ক্ষেত্রে প্রথম যে কাজটি করণীয় সেটি হচ্ছে ইন্টারভিউকে কখনোই সাধারণ কোনো বিষয় হিসেবে নেয়া যাবে না। কাজপ্রত্যাশীর লক্ষ্য হওয়া উচিত, ”আমি ইন্টারভিউতে অবশ্যই অংশ নেব এবং জয় করে তারপর ফিরবো’। ইন্টারভিউর আগে, ইন্টারভিউ চলাকালীন এবং ইন্টারভিউ পরবর্তী বেশ কিছু করণীয় থাকে। এখানে সে বিষয়গুলো মূলত আলোচনা করা হবে।

  1. প্রথমেই বলি ইন্টারভিউয়ের আগের প্রস্তুতির বিষয় সম্পর্কে। প্র‍থমে ভাবতে হবে, এই কাজটির সুযোগ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছে এবং কেন এসেছে? এটি ভালো করে জানতে পারলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর আত্মবিশ্বাসের সাথে দেয়া সহজ হয়ে যায়। সাথে সাথে জানতে হবে কোন সূত্র থেকে ইন্টারভিউয়ের ডাক এলো। ইন্টারভিউয়ের ডাক আসার পরে আপনার প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে যে, আপনি অবশ্যই ইন্টারভিউতে সময়ের অন্তত ২০ মিনিট অংশগ্রহণ করছেন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ইন্টারভিউতে যেতে চেয়েও অনেকের যাওয়া হয় না। সেক্ষেত্রে পরবর্তিতে ঐ প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে আর তাকে ডাকা হয় না, এককথায় কালো তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  2. ইন্টারভিউয়ের আগে আরেকটি কাজ করতে হয় আর সেটি হলো ”হোমওয়ার্ক”। ইন্টারভিউতে জানতে চাওয়া হতে পারে যে, আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে যাচ্ছেন, সেটা সম্পর্কে কতটুকু জানেন বা খোঁজ নিয়েছেন। আর সেজন্যই বাড়িতে বসে সেই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় বিষয়গুলো জেনে তারপর ইন্টারভিউয়ে যাওয়াটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। যেমনঃ
  3. প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট ভিজিট করে সহজেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। অথবা এমন কোন তথ্য যেমন বিগত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন ঘেটে আপনি জানাতে পারেন আপনি কোথায় কিভাবে কাজ করে আরো উন্নত ফলাফল নিয়ে আসতে পারেন।
  4. প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের এখন নিজস্ব সোস্যাল মিডিয়ায় পেজ আছে যেমন Facebook, LinkedIn, YouTube, Instagram যেখানে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্নকার্যক্রম তুলে ধরা থাকে, সেখান থেকেও অনেক তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
  5. Google কে ব্যবহার করেও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।
  6. কাজের বিবরণী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক সময় আমরা দেখতে পাই কাজ প্রত্যাশী বেশীরভাগ মানুষ কাজে বিবরণী না পর্যালোচনা করেই ইন্টরভিউ দিতে চলে আসেন যা কোনভাবেই কাম্য নয়। বরং কাজের বিবরণীকে পর্যালোচনা করে সে মোতাবেক তার সিভি তৈরী করে ইন্টরভিউতে অংশ নিতে হবে।
  7. পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী কাছ থেকেও যদি তথ্য সংগ্রহ করা যায় তাহলে তাই করতে হবে ইন্টারভিউর কক্ষে প্রবেশের পূর্বে।
  8. ইন্টারভিউয়ের পূর্বমুহূর্তের কিছু প্রস্তুতি অবশ্যই নিতে হবে। যেমন আপনার একাডেমিক কাগজপত্র, সনদপত্র, বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সনদ এবং অন্য কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা এবং ফোল্ডারে সাজানো আছে কিনা দেখে নিতে হবে। এখন অনেক চমৎকার ফাইল/ফোল্ডার অনেক কম দামে পাওয়া যায়। এতে দুটি সুবিধা হবেঃ একটি কাজদাতার চাহিদা অনুযায়ী তৎখনাত আপনি দিতে পারছের এবং দ্বিতীয়টি হলো আপনি যে অত্যন্ত গোছানো একজন কর্মী সেটা প্রমানীত হয়ে গেলো।  
  9. ইন্টারভিউতে একটা কমন প্রশ্ন হলো, নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন। এখানে আপনি একটি সুযোগ পেলেন নিজের ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ঠ, দক্ষতা এবং জ্ঞানকে কাজদাতার সম্মুখে প্রকাশ করার। এক্ষেত্রে প্রচুর পরিমানে অণুশীলন করতে হবে যেন ঘাবরে গিয়ে এই চমৎকার সুযোগটি নষ্ট করে না ফেলেন। মনে রাখতে হবে এই সুযোগটি হলো নিজের জন্য তৈরি করা একটি বিজ্ঞাপন চিত্রের মতো। ৬টি ভাগে আপনি আপনা উত্তরকে সাজাতে পারেন:
  10. প্রথমেই আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শক্তি (Strength) সেটা দিয়ে শুরু করুন যেমন: Commitment, Critical Thinking, Leadership Quality, Patience ইত্যাদি
  11. দ্বিতীয়ভাগে আপনি আপনার সেই শক্তি বা সামর্থ্যকে কিভাবে আপনার পূর্বের কর্মক্ষেত্রে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রয়োগ ঘটিয়ে আশানুরুপ ফলাফল এনে দিয়েছেন।
  12. তৃতীয়তো ধরুন আপনার পূর্বের কর্মক্ষেত্রে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আপনার সরাসরি উপস্থিতির কারনে ৮০% সফলতা বা এক লক্ষ টাকা অর্জিত হয়েছে, আপনি সেটা আত্মবিশ্বাস মনোভাব নিয়ে বলে ফেলুন
  13. চথুর্থতো বর্তমান সুযোগটি আপানার দক্ষতা উন্নয়নে কিভাবে কাজ করবে এবং আপনি প্রতিষ্ঠানকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
  14. সবচেয়ে বড় যে ভুল করি তা হলো মুখস্তবিদ্যার মতো সিভিটাকে পড়তে থাকি এবং যথারীতী কাজ পাবার থেকে অনেক দুরে সরে যাই।  
  15. সময়কে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। জায়গার দূরত্ব, যানজট, সব কিছু মাথায় রেখে কমপক্ষে ইন্টারভিউর ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ভালো। এতে যে সুবিধা হয় তা হলো ইন্টারভিউয়ের স্থানে গিয়ে একটু ফ্রেশ হওয়া যায়। ইন্টারভিউ কক্ষে ঢুকার সময় যেন আপনি সতেজ এবং ফ্রেশ থাকেন সেটা অবশ্যই মাথায় রাখা উচিৎ।
  16. আমার কাছে একটি প্রবাদ অত্যন্ত প্রিয় “First Impression is the Best Impression”. আমার বাবা আমাকে বলতেন জানো আমরা যেকোন আমন্ত্রনে আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি কেন পরিধান করি? কারন আমি যখন আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি পরে অনুষ্ঠানে গেলাম তখন যিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি উপলব্ধী করেন যে আমি তার আমন্ত্রণকে সম্মান জানালাম। এটি শোনার পর আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার সবচেয়ে ভালো পোষাকটি পরিধান করবার।  ইন্টারভিউর পোশাক অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ইন্টারভিউর জন্য পরিপাটি পরিস্কার পোশাক পরিধান করা অত্যন্ত জরুরী। সবচেয়ে ভালো হয় আলাদা করে শুধুমাত্র ইন্টারভিউর জন্য একসেট পোষাক রেখে দেয়া। পোশাক অনেক সময় ইন্টারভিউ গ্রহণকারীর কাছে আকর্ষণীয় হতে পারে। সাধারণ রঙের পোশাক এক্ষেত্রে উত্তম। বেশি গাঢ় রঙের পোষাক না পরিধান করাই ভালো। মেয়েদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় দেখা যায় যে, তারা প্রচুর পরিমানে মেকাপ দিয়ে বা খুব কড়া পারফিউম দিয়ে ইন্টারভিউতে যাচ্ছেন। এটা  না করাই ভলো। ইন্টারভিউর পোষাক নিয়ে আমি আলাদা একটি ভিডিও করেছি যেখানে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছি কি পরিধান করা উচিৎ।
    লিংক: http://youtube.com/kmhasanripon
  17.  
  18. ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে কিছু প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। যেমন ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে হাসিমুখে থাকাটা শ্রেয়। ইন্টারভিউ রুমে আপনি সিওর হয়ে নিন যে, আপনার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করেছেন। অনেক সময় ইন্টারভিউর মাঝে অনেকের ফোন বেজে ওঠে। অনেকে আবার সেখানে ফোন রিসিভ করে কথা বলা শুরু করেন। এগুলো করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। এমনকি কে আপনকে ফোন করলো সেটাও না দেখে সরাসরি ফোন বন্ধ করে দিতে হবে। এতে করে কাজদাতা বুঝতে পারবেন এই ইন্টারভিউটিকে আপনি কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছেন।  
  19. আরেকটি বিষয় হলো হাত মেলানো। অনেক সময় ইন্টারভিউ কক্ষে হাত মেলানোর জন্য যখন কাজদাতা হাত বাড়িয়ে দেন, তখন কাজপ্রত্যাশী খুব অস্বাভাবিক বা আত্মবিশ্বাসহীনভাবে হাত মেলান। হাত মেলানোর ক্ষেত্রে হাসিমাখা মুখ নিয়ে Smartly এবং Friendly হতে হবে। ইন্টারভিউ কক্ষে চেয়ারে বসা নিয়েও আমাদের অনেক ঝামেলা হয়। সবসময় যেকোন মুহুর্তে সোজা হয়ে বসা অত্যন্ত জরুরী। চেয়ারে আরামে হেলেদুলে বসে কথা বলা একটু যেন কেমন দেখায়। আবার অনেকে  ইন্টারভিউ ‍দিতে এসে টেবিলে থাকা বিভিন্ন জিনিস নিয়ে খেলতে শুরু করে দেন যেটা একদম উচিৎ নয়। অনেকে আবার গোমরা মুখে না তাকিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেন যেটা করা একদমই যাবে না। Eye Contact একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চোখের দিকে তাকিয়ে উত্তরদিলে আত্মবিশ্বাসের লেভেল বুঝা যায়। তাই কথা বলার সময় নিচের দিকে তাকিয়ে থেকে বা এক পলকে কারো দিকে তাকিয়ে থেকে কথা না বলাটা জরুরী।
  20. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার সময় খুব উত্তেজিত হয়ে না দিয়ে ধীরে ধীরে গুছিয়ে বললে সঠিক উত্তরটি দেওয়া যায়। সহজভাবে উত্তর দেয়ার অনুশীলন করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, প্রশ্নকর্তাকে কখনই বুঝতে দেয়া যাবে না যে, আপনি বেতনের জন্য এই কাজটা করতে চাচ্ছেন। অথবা অযৌক্তিক বেতন চাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। শেষের দিকে একটি কথা হলো, ইন্টারভিউর মাধ্যমে আপনার ব্যাক্তিত্বকে প্রকাশ করতে হবে।
  21. ইন্টারভিউ শেষ হয়ে গেলেও কিন্তু কিছু কাজ থাকে। যেটিকে বলছি After Interview। যেমন, আপনি ইন্টারভিউয়ারের ভিজিটিং কার্ডটা নিয়েছেন। বাসায় পৌছে তাকে একটা ছোট্ট মেসেজ দিন, বা থ্যাংস নোট দিন। এটা আপনার জন্য পজিটিভ ইম্প্রেশন ক্যারি করবে।


উপরে আলোচিত ইন্টারভিউর আগে, ইন্টারভিউর সময়, এবং ইন্টারভিউর পরের বিষয়গুলো যদি মেনে চলি, তাহলে ইন্টারভিউ জয় করা কঠিন কিছু হবে না। মনে রাখতে হবে একটা ইন্টারভিউর ডাক জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমন্ত্রণ। এটিকে যত গুরুত্বের সাথে দেখা যায় ততোই আশানুরুপ ফলাফল পাওয়া যায়। এরজন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অণুশীলন। আমি সবসময় বিশ্বাস করি “Practice Makes Perfect”. নিজের ঘরের আয়নার সামনে দাড়িয়ে প্রতিদিন উত্তর দেবার অনুশীলন করুন। আর এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা মোটামুটি সবাই কমবেশী জানি কি কি প্রশ্ন সাধারনত করা হয়ে থাকে ইন্টারভিউতে।

মনে রাখবেন নিজেকে বড় করতে হলে আগে নিজেকে ভালোভাবে জানাটা অত্যন্ত প্রয়োজন। তারপর প্রতিষ্ঠানকে জেনে নিজের সম্ভাব্য প্রশ্নের উত্তর সাজিয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে হাসিমুখে যদি ইন্টারভিউ সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর তারপরও যদি কাজ না পান তাহলে সমস্যা কি এখানে হয়নি আরেকটি ইন্টারভিউতে হবে কারন প্রতিষ্ঠানের তো অভাব নেই আমাদের দেশে। হাল ছাড়বেন নাম হতাশ হবেন না। আজ না হোক কাল হবেই।

ভিডিও লিংক যেখানে YouTube এ ইন্টারভিউ নিয়ে আমার তৈরি করা কিছু ভিডিও:

https://www.youtube.com/watch?v=tHqU_69I4nM&t=346s

 

https://www.youtube.com/watch?v=cYGEhMCa-S4
https://www.youtube.com/watch?v=0o3DELvYFVw&t=314s
getty_160689726_9706469704500126_90490

বিশ্বাস ব্যতীত টেকসই নেতৃত্ব স্থাপন সম্ভব নয়

সপ্ন মানুষকে বাচতে শেখায়, সপ্ন মানুষকে সামনে বাড়তে প্রেরনা যোগায়। আমরা সপ্ন দেখি, আমরা সপ্নকে নিজের মতো করে মাঝে মাঝে সাজাতেও পারি। এমন অনেক সময়ই হয়েছে একটি সপ্ন দেখার পর মনে হলো আরেকটু উত্তেজনাপূর্ণ হলে ভালোই হতো এবং সাথে সাথে ঘুমিয়ে ওটাকে নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলতাম। একবার মনে আছে আমি সপ্নের ভেতর চাকরির ইন্টার্ভিউ দিচ্ছিলাম। সপ্নের ভেতরই দেখলাম যিনি আমার ইন্টার্ভিউ নিচ্ছিলেন তিনি আমাকে বললেন আমি চাকরিটার জন্য যোগ্য নই এবং সাথে সাথে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম এবং ইন্টার্ভিউর রেজাল্ট আমার পক্ষে নিয়ে আসলাম। মজার ব্যাপার হলো এবার আর ঘুম ভাঙ্গেনি। কারন এটি আমার নিজের তৈরি করা সপ্ন। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো ঠিক তার একবছর পর এরকমই একটি ইন্টার্ভিউর সম্মোখিন হলাম এবং যথারিতি যিনি আমার ইন্টার্ভিউ নিচ্ছিলেন তার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম তিনি আমাকে না বলবেন। সাথে সাথে আমার সেই সপ্নের কথা মনে পড়ে গেলো এবং আমি সপ্নে যা বলেছিলাম তাই বললাম “স্যার আমার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে না বলবেন, না বলবার আগে আমার একটি ছোট্ট প্রস্তাব আছে। আমাকে আপনি একমাস কাজ করার সুযোগ দেবেন এবং তার বিনিময়ে আমাকে কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে না। যদি এই একমাসে আমি আমার কর্মদক্ষতা প্রমান করতে পারি তাহলে আপনার উপর স্বীদ্ধান্তের ভার দিয়ে চলে যাবো। তিনি রাজি হলেন এবং একমাস পর আমি নিয়োগপত্র হাতে পাই। সপ্নকে নিজের মতো করে বানানো এবং যথাসময়ে তার প্রয়োগ সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাসের কারনে। আমার ক্যারিয়ারের বয়স যখন মাত্র একবছর তখন আমার বস একদিন আমাকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন প্রজেক্টের দায়িত্ব দিলেন। আমার বসের অনেক গুনাগুন ছিল তবে সবচেয়ে বড় যে গুনটি ছিল সেটা হলো তিনি বিশ্বস্ত ছিলেন। আর যেহেতু তিনি বিশ্বস্ত ছিলেন তাই প্রত্যেকেই তার স্বীদ্ধান্তকে নিজের বলে মেনে নিতেন।  
আজকে লিখতে বসেছি নেতৃত্ব নিয়ে, নেতৃত্বের গুনাবলী সম্মন্ধে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেক টেকসই নেতৃত্বের পেছনে রয়েছে একটিই শব্দ “বিশ্বাস” বা ”বিশ্বস্ততা”। নেতৃত্বের স্থানে থেকে আমরা সবাই সবচেয়ে বড় যে ভুলটি করি এই ভেবে যে আমার পদবী বা পদমর্যাদার করনে আমাকে সবাই বিশ্বাস করবে। বিশ্বাস বা বিশ্বস্ততা কখনই পদবী বা পদমর্যাদার সাথে আসে না। বিশ্বাস অর্জন করার ব্যাপার। ধরুন আপনি অনেক পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, কৌশলী, চমৎকার যোগাযোগ দক্ষতা, উদ্ভাবনী অন্তর্দৃষ্টি, আপনার আছে দক্ষ দল কিন্তু মানুষের বিশ্বাস আপনি অর্জন করতে পারেননি। আপনি কখনই আপনার আশানুরুপ ফল অর্জন করতে সক্ষম হবেন না। নেতৃত্বের স্থানে থেকে বিশ্বস্ততা তখনই অর্জন করা সম্ভব যখন আপনি আপনার সক্ষমতায় মানুষের আস্থা কায়েম করতে পারবেন। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Practice Makes Perfect” বা “অণুশীলনেই সক্ষমতা”। বিশ্বস্ততা বা বিশ্বাস স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন অণুশীলন। খুব সহজেই আমরা নিজ অবস্থান থেকে ছোট ছোট কিছু কাজের মাধ্যমে “বিশ্বস্ত নেতৃত্ব” বা “Trustworthy Leadership” অর্জন করতে পারি। নিচে কিছু বিষয় অণুশীলনের জন্য উল্লেখ করা হলোঃ 
১. মানুষ স্পষ্টতাকে বিশ্বাস করে। অবিশ্বাস বা দ্বিধান্বিতকে অবিশ্বাস করে। আপনার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রত্যাশা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পর্কে পরিষ্কার হতে হবে। তাহলেই আপনার সাথে যারা কাজ করছেন তাদের আস্থা অর্জনে সম্ভব হবে।
২. নেতৃত্বের স্থানে থেকে কথা এবং কাজে মিল থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় একবার যদি আপনার উপর আস্থা রাখাটা কষ্টকর হয় তাহলে সেটা পুনরায় অর্জন করা কঠিন। 
৩. আমরা অনেকসময় স্বীদ্ধান্তহীনতায় ভুগী। সঠিক স্বীদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আমরা হিমসীম খাই। এসময় অনেক মানুষ আশপাশ থেকে এসে বিভ্রান্ত করার চেষ্ট করে এবং আমরা সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। যার পরিনাম ভুল স্বীদ্ধান্ত আর পরিনতি মানুষের অনাস্থা। 
৪. নেতৃত্বের স্থানে থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা অত্যন্ত জরূরী। কথা এবং কাজে যদি মিল না থাকে তাহলেই অবিশ্বাস জন্ম নেয়। কিন্তু একটা বিষয় আমাদের সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যে মানুষ সবসময় কোনটি আপনার অন্তরের আর কোনটি আপনার শুধুমাত্র মুখের লোক দেখানো তা খুব সহজেই বুঝতে পারে। 
৫. আপনার সহকর্মীরা যখন বিশ্বাস করবে যে আপনি তাদের যেকোন সমস্যায় সামনে এগিয়ে আসবেন তখনই তারা আপনার সপ্নকে বাস্তবায়ন করতে নিজের সবটুকু দিয়ে এক হয়ে কাজ করবে।  
৬. Leaders become great not for their Power but because of their ability to empower others. আমাদের সামনে নেতৃত্বের অনেক উদাহরন আছে যেখানে আমরা দেখতে পাই সফল নেতৃত্বদানকারী ইচ্ছাকৃতভাবেই ক্ষমতা ছেড়ে দেন এবং সরাসরি কর্মীদের হাতে তুলে দেন। তারা এটি করেন কারন তারা তাদের দলের প্রত্যেকের কর্মদক্ষতার উপর আস্থাশীল। যার ফলে কর্মীরাও তাদের দক্ষতার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেন লক্ষ্য অর্জনের জন্য। 
৭. ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “If you are the smartest person in the room, you are in the wrong room.” সফল নেতৃত্বস্থানীয় ব্যাক্তিরা সবসময় স্বীদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সকলের মতামত প্রদানের জন্য পরিবেশ তৈরী করেন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে। 
৮. রবার্ট এ্যান্থনী অত্যন্ত চমৎকার একটি উক্তি করেছিলেন “When you blame others, you give up your power to change”। আমরা কখনই সহজে আত্মসমালোচক হতে পারি না। নিজের ভুলগুলোকে দেখতে পাই না বা কেউ দেখালে তা সহ্য করতে পারি না। এটি টেকসই নেতৃত্বের জন্য বড় প্রতিবন্ধক।  

এরকম আরো অনেক উদাহরন দেওয়া যায়। কিন্তু একটি কথাই পরিশেষে বলতে চাই বিশ্বাস এবং নেতৃত্ব একই সাথে তাল মিলিয়ে চলে অন্যভাবে বলা যায় একটি আরেকটির পরিপূরক। বিশ্বাস প্রতিটি ভাল সম্পর্কের মূল ‍হিসেবে কাজ করে সেটি ব্যাক্তি জীবনে হোক আর কর্মক্ষেত্রে। যখন মানুষ আপনাকে বিশ্বাস করে এবং আস্থা রাখে যে আপনি যাই করছেন তা সততার সাথে করছেন। তখন তারা আপনার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করে। আজকের লেখায় আমার শেষ উক্তি “বিশ্বাস ব্যতীত টেকসই নেতৃত্ব স্থাপন সম্ভব নয়” এবং এটিই আমার আজকের শিরোনাম।

IMG_3372

টেকসই ক্যারিয়ারের জন্য কর্মদক্ষতা

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) বর্তমান সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। একজন উদ্যোক্তা বা চাকরিদাতা তার চাকরী প্রত্যাশী বা তার প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছেন, প্রত্যেকের কাছে প্রত্যাশা করে থাকেন। কর্মদক্ষতা (Employability Skills) একজন কর্মীর মধ্যে যদি থাকে তাহলে তিনি তার কর্মক্ষেত্রকে বর্তমান অবস্থা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে বা তার সহকর্মীদের সাথে দলগতভাবে কাজ করে নিদির্ষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারেন। আর ঠিক এই কারনেই একজন উদ্যোক্তা বা একজন চাকরীদাতা সব সময়ই প্রত্যেক চাকরী প্রত্যাশীর মাঝে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) খুজবার চেষ্টা করে থাকেন।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে আবার ট্রান্সফারেবল স্কিলস বা Soft Skills বলা হয়ে থাকে। এর কারন কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নির্দিষ্ট কোনো একটি বিশেষ চাকরি ক্ষেত্রের জন্য নয়। এর মানে একজন কর্মদক্ষতা সম্পন্ন ব্যাক্তি যেকোন ক্ষেত্রে বা যেকোন পদবীতে কাজ করার সুযোগ পেলে তিনি তার কর্মদক্ষতাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে তার ব্যাক্তিগত বা তার কর্মক্ষেত্রের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগাতে পারেন। এর মানে কর্মদক্ষতা সব সময় প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই সম্পূর্ন তার নিজস্ব বা ব্যক্তিগত দক্ষতা যা কিনা সে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করার তাগিদে ব্যবহার করতে পারছেন। উদাহরনস্বরুপ ধরা যাক বিশ্ববিদ্যালয়/পলিটেকনিকের পড়াশুনা শেষ করে রাসেল রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করতে শুরু করলেন এবং ভালোভাবেই দক্ষতার সাথে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবার চেষ্টা করলেন। হঠাৎ রাসেলের ভাবনাতে এলো যে তিনি তার চাকরি ক্ষেত্র পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি ক্ষেত্রে কর্মজীবন শুরু করবেন এবং যথারীতি তিনি টেলিকম সেক্টরে যোগ দিলেন। এখন আমরা বিষয়টি যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পারবো ঐ দুই সেক্টরে দুই ধরনের Functional Skills প্রয়োজন যা একটি আরেকটি থেকে সম্পন্ন ভিন্ন।  কিন্তু দুই সেক্টরেই একই ধরনের দক্ষতা সমুহ প্রয়োজন যাকেই আমরা বলছি কর্মদক্ষতা (Employability Skills)।

প্রশ্ন আসতেই পারে এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কেন প্রয়োজন?

প্রথমত আমাদের সকলেরই একটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি প্রয়োগ করতে হবে আর সেটা হলো প্রত্যেক কর্মক্ষেত্রেই দুটি বিষয়ের প্রতি আমাদের কঠোর মনোযোগ রাখতে হয় আর তা হলো সহকর্মিদের কোন বিষয় ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া বা সহকর্মিদের কাছ থেকে কোন বিষয় ভালো করে বুঝে নেয়া। যদি কোন ব্যক্তি ঠিক ভাবে কোন কাজ বুঝে না নেয় তাহলে সে ঠিক ভাবে কাজটি সম্পাদন করতে পারবেন না। আবার অন্যদিকে যদি সে কাজটি যদি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার সহকর্মীরা ঠিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে না। আর এই বুঝিয়ে দেয়া বা বুঝে নেয়া ঠিক তখনই সম্ভব যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকবে। একজন ব্যক্তি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন সে প্রতিষ্ঠানে তার কর্মদক্ষতার (Employability Skills) দ্বারা তার নিজস্ব কাজকর্ম গুলো সে নিজেই খুব সহজে বুঝে নিতে পারে বা তা নিজের দলের সাথে একত্রে মিলে কাজ করতে পারে। আবার সে নিজেই একটি কাজ তার সহকর্মীকে সাথে নিয়ে অনায়াসে সম্পাদন করতে পারে।

দ্বিতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে তিনি যেকোন সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন বা যেকোন সমস্যা আসার পূর্বেই সেই বিষয়ে বিশ্লেষন করে তা উপর একটি প্রতিবেদন করতে পারবে বা সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারবেন। একজন কর্মদক্ষহীন মানুষই শুধুমাত্র সমস্যাকে দেখতে পান কিন্তু তার সমাধানের রাস্তা তিনি দেখতে অক্ষম থাকেন।

তৃতীয়ত একজন ব্যক্তির কর্মদক্ষতা (Employability Skills) থাকলে সে তার নিজস্ব দক্ষতাগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী সাজাতে পারেন। আবার যে দক্ষতাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ন বা প্রয়োজনীয় কিন্তু নিজের ভেতর সেগুলোর অনুপস্থিতি নিজেই চিহ্নিত করতে পারবে এবং সেই ঘাটটিগুলো পূরুন করতে সে তার নিজস্ব দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারবে। আর এই সব কিছু করা সম্ভব যখন কোনো ব্যক্তির কর্মদক্ষতা বা এমপ্লোয়াবিলিটি স্কিলটি থাকবে।

এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন যে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় আছে কিনা? আমার মতে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের নিদৃষ্ট কোন সময় নেই। শুধুমাত্র প্রয়োজন সচেতনতা এবং শেখার মনোভাব থাকাটা সবচেয়ে বেশী জরুরী। তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন অনুশীলন। আমাদের ভুল হবেই কিন্তু আমরা যদি আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে নিয়ে যদি সঠিকভাবে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারি তাহলে আমাদের যেকোন পরিকল্পনা অর্জনে সহজ হবে। তবে কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সব থেকে সঠিক সময় আমাদের ছাত্রজীবন। কারন ছাত্রজীবনে আমরা অন্য একধরনের স্বাধীনতা ভোগ করি যেটা আমরা অনেকেই ধরতে অক্ষম থাকি। এই সময়ে আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, যার সাথে ইচ্ছা তার সাথেই কাজ করতে পারি, যার সাহায্য প্রয়োজন তার কাছেই পেতে পারি। তাই আমি মনে করি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন এবং তীক্ষ্ণ করার সঠিক সময় ছাত্রজীবন।     একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে, যত দ্রুত এই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিশ্চিত করা যাবে ঠিক তত দ্রুত ক্যারিয়ারের অগ্রগতি বা উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

কর্মদক্ষতা (Employability Skills) নিয়ে লিখতে গেলেই আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর কথা চলে আসে। আসলে কর্মদক্ষতার (Employability Skills) উপরই নির্ভর করে আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী অথবা বলা যায় ব্যক্তিগত গুণাবলীর সমন্বয়ে গঠিত আমাদের কর্মদক্ষতা। আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলী তিনটি স্তম্ভের দাড়িয়ে থাকে। 

প্রথম স্তম্ভঃ ইতিবাচক ব্যক্তিগত গুণাবলী (Positive Personal Attributes)

আমাদের ব্যক্তিগত গুণাবলীর প্রথম স্তম্ভ। এই স্তম্ভের গুণাবলীগুলো সম্পূর্ন আমাদের ব্যক্তিগত। যেকোন অর্পিত কাজ দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করা, ব্যক্তিগত নিয়মানুবর্তিতা অক্ষুন্ন রাখা, যা বলছি তা নিজের ক্ষেত্রে অনুশীলন করা, যেকোন পরিবর্তনে হ্যা-সূচক মনোভাব বজায় রাখা, সময়ের প্রতি যত্নবান থাকা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আত্মসম্মানবোধ নিয়ে জীবন পরিচালন করা। 

দ্বিতীয় স্তম্ভঃ সু-সম্পর্ক (Good Human Relation)

শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় আমাদের চারপাশে সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জীবন পরিচলনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। খুব সহজেই আমরা যেকোন সম্পর্ক মুহুর্তেই নষ্ট করে দিতে পারি যেটি তৈরিতে হয়তো আমাদের অনেক সময় এবং পরিশ্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুবই সামান্য ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে হয়তো আমার অতি কাছের বন্ধুটির সাথে নিজের অজান্তেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেললাম। আর কর্মক্ষেত্রে সুসম্পর্ক অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব সহজেই আমরা আমাদের যেকোন সম্পর্ককে মজবুদ রাখতে পারি। নিন্মের কাজগুলো সম্পর্ক দৃঢ় করতে সহায়তা করবেঃ

·       যেকোন পরিস্থিতিতে দুঃখিত বা ধন্যবাদ অত্যন্ত কার্যকর
·       দক্ষতা শেয়ারিং
·       ”তুমিও জিতবে এবং আমিও জিতবো” এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা
·       উত্তর দেবার আগে ভালোভাবে শুনে নেয়া 
·       যে কারো ভালো কাজে প্রশংসা করা
·       নিজের ভুল স্বীকার করা
·       অন্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা
·       সবসময় সবক্ষেত্রে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করা

তৃতীয় স্তম্ভঃ উচ্চতর কর্মক্ষমতা অর্জন (Superior Work Performance)

ব্যক্তিগত গুণাবলীর তৃতীয় এবং শেষ স্তম্ভটি কর্মক্ষেত্রের সাথে জরিত। কর্মক্ষেত্রে আপনার কর্মক্ষমতা নির্ধারিত হয় আপনি কিভাবে কর্মসম্পাদন করছেন। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন যেমনঃ

  • ত্রুটি বিহীন কাজ করছেন কিনা
  • সময়সীমার মধ্যে আপনি কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন কিনা
  • কর্মক্ষেত্রে আপনার উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে বুঝে নিয়েছেন কিনা
  • আপনার কাজের ধরনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন কিনা
  • কাজের অগ্রধিকার নির্ধারন করতে পারছেন কিনা
  • আপনি কি দলগতভাবে কাজ করতে পারছেন কিনা
  • আপনি সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনকে কতটুকু গুরুত্ব দেন
  • আপনি কি সমস্যা শুধুই দেখছেন নাকি সমাধানও করতে পারছেন
  • আপনি কি সঠিক সময়ে স্বীদ্ধান্ত নিতে পারছেন কিনা
  • অন্যের স্বীদ্ধান্তকে সম্মান করছেন কিনা

এই ৩টি স্তম্ভ যখন একজন পেশাজীবি নিশ্চিত করবেন তখন তার সাথে সাথে কর্মদক্ষতাও (Employability Skills) সুনিশ্চিত হবে।

এবার কর্মদক্ষতা (Employability Skills) কে নিয়ে যদি একটু গভীরে যাই তাহলে আমরা দেখতে পাই বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দক্ষতার সন্নিবেশ ঘটিয়ে কর্মদক্ষতাকে সংগায়িত করার চেষ্টা করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হল।

  • ফান্ডামেন্টাল স্কিলসঃ একজন ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে কতটুকু যোগ্যতাসম্পন্ন। সেক্ষেত্রে তিনি তার অফিসের নিয়ম কানুন কতটুকু মেনে চলেন, সে কতটুকু তথ্য সন্ধানকারী, তার যে নিয়মিত কাজগুলো থাকে সেগুলো তা কতটুকু যত্ন সহকারে করছেন বা কত দ্রুত করছেন ও কাজের নির্দিষ্ট ডেডলাইন মেনে চলছেন কিনা ইত্যাদি সবকিছু ফান্ডামেন্টাল স্কিলস এর অন্তর্গত। অর্থাৎ যদি কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জন করতেই হয় তাহলে অবশ্যই ফান্ডামেন্টাল স্কিলস থাকতেই হবে।
  • ইন্টারপার্সোনাল স্কিলসঃ এটি মূলত এমন একটি দক্ষতা যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস বলতে একটি প্রতিষ্ঠানে একজন কর্মী বা চাকরীজীবি তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী বা আশেপাশে যারা আছেন তাদের সাথে তার ব্যবহার, আচার আচরন কেমন। অর্থাৎ সে তার সহকর্মীদের সহায়তা করে, সে কি তার কর্মীদের সমস্যা নিজে অনূভব করে। আর এই সব গুলো হল ইন্টারপার্সোনাল স্কিলস।
  • কমিউনিকেশন স্কিলঃ কমিউনিকেশ্ন স্কিলস ব্যক্তিজীবন বা কর্মজীবন দুটি ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। কারন আমরা আমাদের জীবনে যেকোন কিছু যোগাযোগের মাধ্যমেই সম্পন্ন করি। লেখা থেকে শুরু করে কথা বলা, উপস্থাপন করা, অঙ্গভঙ্গি সবকিছু মিলেই কমিউনিকেশন স্কিলস। একজন চাকরিদাতা চাকরি প্রত্যাশীর কাছে শুধুমাত্র দেখতে চান যে তিনি পড়ে বোঝেন কিনা, বলে বোঝাতে পারেন কিনা এবং তিনি সঠিকভাবে লিখতে পারেন কিনা।  এখন কেউ যদি ঠিকভাবে লিখে বা কথা বলে অথবা অঙ্গভঙ্গি কিংবা ইশারা দ্বারা কিছু উপস্থাপন বা বোঝাতে না পারেন তাহলে সেক্ষেত্রে কোনভাবেই তার পক্ষে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবেনা। আর তাই কমিউনিকেশন স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • সমস্যা দূরীকরনঃ আমাদের সমাজে যেকোনো স্থানেই সমস্যা বিদ্যমান। এখন এই ক্ষেত্রে ২টি বিষয় আসে। আমরা কি সেই সমস্যাগুলো নির্ধারন করতে পারছি বা সেটা নির্ধারনের পর আমরা কি বসে থাকছি না সেটা নিরসনের উপায় খুজছি। যদি উপায় খুজে বের করতে সক্ষম হই তাহলে সেটা ব্যবহার করে সমাধান করতে পারছি কিনা। এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর প্রত্যেক চাকুরীদাতা তার চাকুরী প্রার্থীর কাছ থেকে এই দক্ষতাটি অনেক বেশি আশা করে থাকে।
  •  টিম ওয়ার্কঃ  টিম ওয়ার্ক জিনিসটি কর্মক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে। কারন কর্মক্ষেত্রে টিম ওয়ার্ক অনেক বেশি প্রাকটিস করা হয়। একার পক্ষে কোনো কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই প্রতিষ্ঠানে অনেকে মিলে একসাথে গ্রুপে বা দলে কাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে একটি বড় কাজ দলের সকল সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দিয়ে কাজের পরিধি ছোট করা হয়। যাতে অতি সহজেই কাজ শেষ করা যায়। এখন সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যক্তির টিম ওয়ার্ক স্কিলস না থাকে তাহলে সে কাজ করতে পারবেনা। অর্থাৎ তখন প্রতিষ্ঠানের কাজ পরে থাকবে। তাই টিম ওয়ার্ক স্কিলস খুবই গুরুত্বপূর্ন।
  • এথিকাল স্কিল বা নীতিঃ একটা বিষয় প্রায়ই দেখা যায় অনেক প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা সামান্য স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অন্যের কোন মতামত বা নতুন কোনো বিজনেস  প্রোপোজাল বা আইডিয়া তার বসের কাছে নিজের বলে চালিয়ে দেয়। কিন্তু এই বিষয়টি এথিকাল বা নীতির বাইরে পরে। আর তাই এথিকাল স্কিল অনেক প্রয়োজনীয় একজন ব্যক্তির জন্যে।
  • ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলসঃ ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কিলস একজন ব্যক্তির জ্ন্যে অনেক গুরুত্বপুর্ণ। ধরা যাক কোনো ব্যক্তি নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছে। সে ক্ষেত্রে তাকে তার প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বার্থে যে ফাংশনাল দক্ষতাগুলো প্রয়োজন তা অর্জন করতে হবে। সেটা যদি নতুন কোন কর্মদক্ষতা হয় সেটাও। এখন ব্যাপার হল সেই ব্যক্তি কি সেই দক্ষতাগুলো খুজে বের করতে পারছেন বা অন্যের কাছ থেকে সেই দক্ষতাগুলো শিখে নিতে পারছেন এবং সে কি সবসময় শেখার মানসিকতা নিয়ে আছেন কিনা।
  • লিডারশীপ স্কিলঃ  লিডারশীপ স্কিলস একটি প্রতিষ্ঠানের জন্যে অনেক বেশী প্রয়োজনীয়। একজন কর্মীর মাঝে লিডারশীপ স্কিলস থাকাটা অনেক গুরুত্বকপূর্ণ। এক্ষেত্রে সে কর্মী তার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের কোচও হতে পারেন বা সে তার দক্ষতাগুলো অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন, কোনো বিষয়ে আলোচনা বা মোটিভেট করতে পারছে কিনা এ সবকিছুই হচ্ছে লিডারশীপ স্কিলস।
  • ইনিশিয়েটিভ স্কিল বা উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতাঃ আজকাল উদ্যোগ গ্রহন ক্ষমতা খুবই প্রয়োজনীয় একটি দক্ষতা। প্রায়ই  অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় কিছু লোক নিজে কাজের উদ্যোগ নেয় আবার অনেকে আছে উর্ধতন কর্মকর্তার আদেশের জন্যে বসে থাকে। এই জিনিষটা অনেক উর্ধতন কর্মকর্তাকে বিরক্ত করে তোলে। তারা আশা করেন তাদের অধীনে যারা কাজ করছেন তারা প্রত্যেকেই যেন নিজে কোনো বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে। আর তাই উদ্যোগ গ্রহন করার ক্ষমতা থাকাটা প্রত্যেকের জন্যে আবশ্যক।
  • ট্যেকনলজিকাল স্কিলঃ বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। সমাজের যেকোনো ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাই সভ্যতার সাথে সাথে আমাদের উচিত এই তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানা এবং করা।
  • বিশেষ করে মাইক্রোসফ্ট এক্সেল, ওয়ার্ড এবং পাওয়ার পয়েন্টের ব্যবহার
    • গুগলের বিভিন্ন ফ্রি টুলসের সঠিক ব্যবহার এবং যথাযথভা্বে যেকোন তথ্যের সন্ধান গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে সহজে বের করা

পরিশেষে বলতে হয় কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের বিষয় যা কাজের মাধ্যমে প্রকটিত হয়। বই পড়ে জ্ঞান বৃদ্বি সম্ভব কিন্তু কাজ না করে দক্ষতা অর্জন কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর তাই কর্মদক্ষতা (Employability Skills) অর্জনের সঠিক সময় বেছে নেওয়া উচিত ছাত্রবস্থায়।  আর আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে ”অণুশীলনেই সফলতা”

ভিডিও: https://www.youtube.com/watch?v=9xYByg4EqKg